November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, March 21st, 2023, 8:42 pm

লঙ্কানদের হোয়াইটওয়াশ করল নিউ জিল্যান্ড

অনলাইন ডেস্ক :

মাইকেল ব্রেসওয়েলের ডেলিভারিটি ছিল নিরীহ। ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন প্যাডল স্কুপ করবেন। সেই চেষ্টাতেই গড়বড়, ব্যাট চালিয়ে দিলেন একটু আগেই। শর্ট লেগে ক্যাচ নিলেন হেনরি নিকোলস। ধনাঞ্জয়া ক্রিজেই দাঁড়িয়ে রইলেন স্তব্ধ হয়ে। এরপর কোনোরকমে শরীরটাকে টেনে নিয়ে গেলেন বাইরে। ৯৮ রানে অমন বিদায় তিনি যেন মানতেই পারছিলেন না। ধনাঞ্জয়া যেমন পারলেন না দারুণ ব্যাটিং করেও সেঞ্চুরি ছুঁতে, ফলো-অনে পড়ার পর লড়াই করেও শ্রীলঙ্কা তেমনি পারল না ইনিংস হার এড়াতে। ওয়েলিংটন টেস্টে ইনিংস ও ৫৮ রানের জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে লঙ্কানদের হোয়াইটওয়াশ করল নিউ জিল্যান্ড। চতুর্থ দিনে সোমবার শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ৩৫৮ রানে। প্রথম ইনিংসে তারা করতে পেরেছিল ¯্রফে ১৬৪। কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলসের ডাবল সেঞ্চুরিতে নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে ৫৮০ রান তুলে ঘোষণা করে তাদের একমাত্র ইনিংস। আগের টেস্টে শেষ বলের রোমাঞ্চকর সমাপ্তিতে নিউ জিল্যান্ড জিতেছিল ১ রানে। এই নিয়ে নিউ জিল্যান্ডে টানা ৮ টেস্টে জিততে পারল না লঙ্কানরা। এর মধ্যে ৭টিই হেরেছে তারা, ড্র হয়েছে বাকিটি। সবশেষ জয়টি পেয়েছে তারা সেই ২০০৬ সালে। নিউ জিল্যান্ডে ২১ টেস্ট খেলে সব মিলিয়ে শ্রীলঙ্কার জয় স্রেফ ২টি। শ্রীলঙ্কা এ দিন খেলা শুরু করে ২ উইকেটে ১১৩ রান নিয়ে। শুরুতেই জোড়া ধাক্কা হজম করে তারা। ৫০ রান নিয়ে শুরু করা কুসাল মেন্ডিস দিনের প্রথম ওভারেই ম্যাট হেনরিকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন শর্ট মিড উইকেটে। একটু পর একই চেষ্টা ডেকে আনে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের পতন। ব্লেয়ার টিকনারকে পুল খেলে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আউট হন ৪৪ বলে ২ রান করে। টালমাটাল দলের হয়ে লড়াই করেন এরপর ধনাঞ্জয়া ও দিনেশ চান্দিমাল। খুব ঝুঁকি না নিয়েই বেশ দ্রুত রান তুলতে থাকেন তারা দারুণ সব ক্রিকেটীয় শটেই। তাদের সাবলিল ব্যাটিংয়েই ফুটে ওঠে, উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভালো। এই জুটির সমাপ্তিও হয় পুল শটেই। টিকনারকে পুল করে চান্দিমাল ফেরেন ৯২ বলে ৬২ রান করে। জুটি থামে ১২৬ রানে। ধনাঞ্জয়ার সঙ্গে এরপর জমে যায় অভিষিক্ত নিশান মাদুশকার জুটিও। লড়িয়ে জুটিতে ষষ্ঠ উইকেটে ৭৬ রান যোগ করেন দুজন। এই লড়াইয়ের শেষটা হয় হতাশার। চা-বিরতির ঠিক আগে টিকনারের আরেকটি শর্ট বলে আলগা শট খেলতে গিয়ে উইকেট হারান মাদুশকা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬১.৬১ গড় নিয়ে টেস্ট অভিষিক্ত ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান দুই ইনিংসে লড়াইয়ের ছাপ রাখলেও পারলেন না ইনিংস বড় করতে। চা-বিরতির পরপরই ধনাঞ্জয়ার সেই আউট। দশম টেস্ট সেঞ্চুরির হাতছানি উপেক্ষা করলেন তিনি নিজের ভুলেই। থেমে গেল ১২ চার ও ১ ছক্কায় ৯৮ রানের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার ইনিংস হার নিশ্চিত হয়ে যায় অনেকটা তখনই। তবে দারুণ লড়াই করে পরাজয়কে অনেকটা সময় ঠেকিয়ে রাখেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। কাসুন রাজিথা ও প্রবাথ জয়াসুরিয়া অষ্টম জুটিতে ২০ রান তালেন ৯৬ বল খেলে। নবম জুটিতে রাজিথার সঙ্গে লাহিরু কুমারার জুটি ৮৮ বলে ১৬ রানের। ৪৫ বলে জয়াসুরিয়া করেন ২ রান। পেসার রাজিথা খেলে ফেলেন ১১০ বল, রান করেন ২০। একটা সময় হার মানতে হয় তাদেরও। শেষ বেলায় ম্যাচ জিতে নেয় নিউ জিল্যান্ড। ম্যাচের সেরার পুরস্কার ওঠে অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরি করা নিকোলসের হাতে। তিনি যদিও পুরস্কার নিতে গিয়ে বলেন, ম্যাচের সেরা হওয়া উচিত ২১৫ রান করা উইলিয়ামসনের। ২ টেস্টে ৩৩৭ রান করে সিরিজের সেরা সেই উইলিয়ামসনই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৮০/৪ (ডি.)
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ১৬৪
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ১৪২ ওভারে ৩৫৮ ( আগের দিন ১১৩/২) (ওশাদা ৫, করুনারতেœ ৫১, কুসাল ৫০, ম্যাথিউস ২, চান্দিমাল ৬২, ধনাঞ্জয়া ৯৮, মাদুশকা ৩৯, রাজিথা ২০, জয়াসুরিয়া ২, কুমারা ৭, আসিথা ০*; সাউদি ২৭-১৩-৫১-৩, হেনরি ২৯-৮-৫৯-১, মাইকেল ব্রেসওয়েল ৪২-১৪-১০০-২, ডগ ব্রেসওয়েল ১৮-৩-৫৮-১, টিকনার ২৬-৬-৮৪-৩)
ফল: নিউ জিল্যন্ড ইনিংস ও ৫৮ রানে জয়ী
সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ২-০তে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: হেনরি নিকোলস
ম্যান অব দা সিরিজ: কেন উইলিয়ামসন