অনলাইন ডেস্ক :
শেষ দুই ম্যাচের বাজে পারফরম্যান্সকে পেছনে ফেলে, তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে জিতে আফগানিস্তানের কাছে লজ্জাজনক হোয়াইটওয়াশ এড়াতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হবে তৃতীয় ওয়ানডে। আফগানিস্তানের কাছে প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে এবং দ্বিতীয়টি ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে হেরে সিরিজ হারের লজ্জা পায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়টি আফগানিস্তানের কাছে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার বাংলাদেশের। ২০১৫ সালের পর ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে তৃতীয় সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। এ সময় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে দু’বার সিরিজ হারে টাইগাররা। সিরিজ জিতলেও বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারেনি ইংল্যান্ড। সিরিজ জয় নিশ্চিত করে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ তৈরি করেছে আফগানিস্তান।
২০১২ সাল থেকে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের মুখে পড়েনি বাংলাদেশ। শেষবার ঘরের মাঠে ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে ওয়ানডে সিরিজের সবগুলো ম্যাচ হেরেছিলো বাংলাদেশ। এরপর ২০১৪ সালে ভারতের কাছে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে হেরেছিলো টাইগাররা। বর্তমান পারফরম্যান্স এবং সম্প্রতি তামিম ইকবালের অবসরের ইস্যু বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। যে কারণেই স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর সম্ভাবনা কম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আফগানদের বিশ্বমানের বোলিং লাইনআপ সামলানোর সাহসের অভাব আরও বড় সমস্যায় ফেলেছে বাংলাদেশকে। দুই সিনিয়র জুটি সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিম ছাড়া রশিদ খানের মতো উচ্চমানের বোলারের বিপক্ষে সাহসী ব্যাটিং করতে কাউকে দেখা যায়নি। এমনটা নয়, রশিদের গুগলি স্বাচ্ছেন্দ্যে খেলেছেন সাকিব এবং মুশফিক। তবে ইতিবাচক মনোভাবের মাধ্যমে তারা সেই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠেন। যা লিটন দাস এবং নাজমুল হোসেন শান্তর মত তারকাদের মধ্যে দেখা যায়নি।
সম্প্রতি ব্যাট হাতে দারুন ছন্দে থাকলেও রশিদের বিপক্ষে নিজেদের মেলে ধরতে ব্যর্থ হন তারা দু’জনই। প্রথম দুই ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে আফগানিস্তানের সেরা বোলার পেসার ফজল হক ফারুকি হলেও বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলেছেন রশিদই। শেষ দুই ম্যাচে ভালো শুরু করলেও অভিজ্ঞ রশিদের সামনে ভেঙ্গে পড়ে বাংলাদেশ। এখন বাংলাদেশের প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো রশিদকে সামলানোর উপায় খুঁজে বের করা। যা হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ মনে করেন, শুধুমাত্র হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর জন্যই নয়, আসন্ন এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপেও ভাল পারফরম্যান্স করতে দলের ঘাটতিগুলো যত দ্রুত সম্ভব কাটিয়ে উঠা উচিত। মিরাজ বলেন, ‘প্রথম দুই ম্যাচে আমাদের যা ঘাটতি ছিল এবং আমরা যে ভুলগুলো করেছি, সেগুলো কাটাতে আমরা আরও বেশি সর্তক হয়ে যাবো। কারণ আমাদের সামনে বড় সিরিজ আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে তাদের বিপক্ষে আমাদের খেলা আছে এবং আমি আশা করি আমরা ভুলগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবো।’ হাঁটুর ইনজুরির কারণে তৃতীয় ওয়ানডে থেকে ছিটকে পড়েছেন পেসার এবাদত হোসেন। এজন্য একাদশে একটি পরিবর্তন নিশ্চিত হলেও শেষ ম্যাচে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করতে পারে বাংলাদেশ। সিরিজের আগে ১১ ম্যাচের দেখায় বাংলাদেশ ৭টিতে ও আফগানিস্তান ৪টিতে জিতেছিলো।
সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডে শেষে বাংলাদেশ ৭টিতে ও আফগানিস্তান ৬টিতে জিতেছে। সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতলেই জয়-হারের সমীকরণে বাংলাদেশের সমান হয়ে যাবে আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের কোচ জোনাথন ট্রট জানান, আগামী এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ পর্যন্ত জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আবেগে ভেসে যাবে না তারা। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রতিন্দ্বন্দিতা করার জন্য আমাদের নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। পরের ম্যাচেও আমাদের ফোকাস করা গুরুত্বপূর্ণ। খুব বেশি আবেগপ্রবণ বা উচ্ছ্বসিত হওয়া যাবে না। যদি আমরা এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপকে সামনে রেখে একটি দল হিসাবে উন্নতি করতে চাই, তবে এই সাফল্য নিয়ে আমাদের আত্মতুষ্টি নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আপনি যখন প্রতিযোগিতা এবং ট্রফির লড়াইয়ে যাবেন, তখন আপনাকে জয়ের ধারায় থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা