অনলাইন ডেস্ক :
সিরিজের শুরুতে সেরা একাদশে থাকার সম্ভাবনা ছিল খুব কম। মূলত কারও চোটেই কপাল খুলতে পারতো লোকেশ রাহুলের। শেষ পর্যন্ত প্রথম টেস্টেই একাদশে জায়গা পেলেন শুবমান গিলের চোটে। ওপেন করতে নেমে অল্পের জন্য মিস করেন সেঞ্চুরি। কিন্তু গত ১২ আগস্ট শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নাম লেখালেন লর্ডসের অনার্স বোর্ডে। আর তাতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দিনটা ভারতের। লোকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মা এদিন রেকর্ড গড়েছেন উদ্বোধনী জুটিতে। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে রোহিত আউট (৮৩) হলেও রাহুলের অপরাজিত ১২৭ রানে, ৩ উইকেটে ২৭৬ রান ভারতের স্কোরবোর্ডে। আকাশ মেঘলা, টস জিতে তাই স্বাগতিক অধিনায়ক জো রুট ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে দেরি করেননি। তবে রেকর্ডগড়া জুটিতে রুটের পরিকল্পনা ভেস্তে দেন দুই ভারতীয় ওপেনার রাহুল-রোহিত। রাহুলকে এক পাশে রেখে শুরুতে রান তুলেছেন রোহিতই। চোটের কারণে এই টেস্ট তো বটেই পুরো সিরিজ থেকেই ছিটকে গেলেন ইংলিশ পেসার স্ট্রুয়ার্ট ব্রড। শঙ্কা থাকলেও শেষ মুহূর্তে একাদশে ঠিকই দেখা যায় জিমি অ্যান্ডারসনকে। অ্যান্ডারসন, ওলি রবিনসন, মার্ক উডদের ছোট ছোট সুইং সামলে সময়ের সাথে সাথে সাবলীল দুই ভারতীয় ওপেনার। দুজন মিলে ১৮.৪ ওভারে ৪৬ রান তোলার পর নামে বৃষ্টি। তাতে মাঝের লাঞ্চ বিরতি সহ দুই ঘন্টা খেলা বন্ধ থাকে। ফের খেলা শুরু হলে ফিফটি তুলে নেন রোহিত শর্মা। পরে কিছুটা খোলস ছেড়ে বের হয়ে ফিফটিকে রূপ দেন এশিয়ার বাইরে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংসে। ১৪৫ বলে ১১ চার ১ ছক্কায় ৮৩ রান করে অ্যান্ডারসনের বলে যখন বোল্ড হন তার আগেই জুটিতে যোগ হয় ১২৬ রান। যা ১৯৫২ সালের পর লর্ডসে কোনো ভারতীয় উদ্বোধনী জুটির প্রথম শতরান। রোহিতের পর অ্যান্ডারসন দ্রুত ফেরান চেতেশ্বর পুজারাকেও (৯)। আর তাতে কোনো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় মুত্তিয়াহ মুরালিধরনের সাথে যৌথভাবে শীর্ষে উঠে যান এই ইংলিশ পেসার। লঙ্কান কিংবদন্তী কলম্বোতে ভারতের বিপক্ষে শিকার করেন ২৯ উইকেট। গতকাল লর্ডসে সমান সংখ্যক উইকেট ছোঁয়া অ্যান্ডারসনের সামনে সুযোগ এককভাবে শীর্ষে থাকার। ২ উইকেটে ১৫৭ রান তুলে চা বিরতিতে যায় ভারত। তার আগে ১৩৭ বলে ২ চার ১ ছক্কায় ফিফটির দেখা পান লোকেশ রাহুল। ৪৭ আন্তর্জাতিক ইনিংসে সেঞ্চুরির দেখা না পাওয়া অধিনায়ক ভিরাট কোহলিকে নিয়ে চা বিরতির পর দারুণ খেলছিলেন রাহুল। মার্ক উডের করা ৭৮ তম ওভারে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে কাট করে চার মেরে সেঞ্চুরিতে পৌঁছান এই ভারতীয় ওপেনার। ১৪ ইনিংস পর সেঞ্চুরির দেখা পেলেন লোকেশ রাহুল। এর আগের সেঞ্চুরিটি ছিল ২০১৮ সালে কেনিংটন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। এই নিয়ে তার ক্যারিয়ারের ৬ সেঞ্চুরির পাঁচটিই দেশের বাইরে। ভারতীয়দের মধ্যে এশিয়ার বাইরে তার চাইতে বেশি টেস্ট সেঞ্চুরি আছে কেবল সুনীল গাভাস্কারের (১৫ টি)। লোকেশ রাহুল ও বীরেন্দর শেবাগের যৌথভাবে ৪ টি। ১০ম ভারতীয় ব্যাটসম্যান ও তৃতীয় ভারতীয় ওপেনার হিসেবে লর্ডসে সেঞ্চুরি করে অনার্স বোর্ডে নাম লেখালেন। ২০১৯ সালে কোলকাতায় বাংলাদেশের বিপক্ষে গোলাপি বল টেস্টে হাঁকানো সেঞ্চুরিটিই কোহলির সর্বশেষ সেঞ্চুরি। এরপর কোনো ফরম্যাটেই পাননি সেঞ্চুরির দেখা। ৮০ ওভার পর নতুন বল নিয়ে শেষ সেশনে কোহলি-রাহুলকে ভোগায় অ্যান্ডারসনন, রবিনসন। ভালো শুরু পেয়ে কোহলি ফিরেছেন ওলি রবিনসনের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। দিনের খেলা শেষ হওয়ার ৩২ বল আগে তাকে ফিরতে হয় ১০৩ বলে ৩ চারে ৪২ রান করে। ফলে টানা ৪৮ ইনিংস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরিবিহীন ভারতীয় দলপতি। রাহুলের সাথে ভাঙে ১১৭ রানের জুটি। আজিঙ্কা রাহানেকে (১*) দিনের বাকি সময় পার করে লোকেশ রাহুল। ২১২ বলে সেঞ্চুরি ছুঁয়ে অপরাজিত আছেন ২৪৮ বলে ১২ চার ১ ছক্কায় ১২৭ রানে। ভারতের স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ২৭৬।
পাঁচ ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি জয়ের দ্বারপ্তান্তেই ছিল ভারত। তবে পঞ্চম দিনের বৃষ্টিতে ড্রয়েই সমাপ্ত হয় নটিংহ্যাম টেস্ট।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা