April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, December 6th, 2021, 7:50 pm

লিজা থেকে ময়ূরী হলেন কীভাবে?

অনলাইন ডেস্ক :

ঢাকাই চলচ্চিত্রে নব্বই দশকের শেষের দিকে কাটপিস সিনেমার আগ্রাসন শুরু হয়। তখন অশ্লীলতার যাতাকলে চলচ্চিত্রপ্রেমীরা হলবিমুখ হতে শুরু করেন। ঠিক ওই সময়ে ঢালিউডে ঝড় তোলা চিত্রনায়িকা ময়ূরীর আগমন ঘটে। কাটপিস সিনেমার সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন চিত্রনায়িকা ময়ূরী। স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বেশ কিছু অশ্লীল সিনেমায় দেখা গিয়েছে তাকে। পরে দেশীয় চলচ্চিত্র সুস্থ ধারায় ফিরলে অন্তরালে চলে যান এই নায়িকা। ময়ূরী হয়ে উঠার গল্প হয়তো অনেকেরই অজানা। আর দশটা মেয়ের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে লিজা। রুপালি পর্দায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন নিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। কিন্তু লিজা থেকে ময়ূরী হলেন কীভাবে? কে বা কারা তাকে ময়ূরী বানিয়েছেন? সোমবার এই নায়িকার জন্মদিন। ১৯৯৮ সালে ‘মৃত্যুর মুখে’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। চলচ্চিত্রে আসার আগে তার নাম ছিল লিজা। লিজা থেকে ময়ূরী হয়ে উঠার নেপথ্যের গল্প জানালেন চলচ্চিত্র পরিচালক মালেক আফসারি। তিনি বলেন, ‘‘মৃত্যুর মুখে’ সিনেমার জন্য আমি ইলিয়াস কাঞ্চন, মুনমুনকে চুক্তিবদ্ধ করাই। এর পরে কাঞ্চি নামে এক মেয়েকে এই সিনেমায় নেওয়ার কথা। সবকিছু পাকাপাকি করাও হয়েছিল। সাইনিং মানি দিতে গিয়ে তারা টাকা বেশি চেয়ে বসলো। তাকে আমরা দেড় লাখ টাকা দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা দাবি করলো আড়াই লাখ। বিষয়টা আমার ভালো লাগেনি। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বাদ দিয়ে অন্য নায়িকা নেওয়ার চিন্তা করি। কিন্তু কাকে নেব খুঁজে পাচ্ছিলাম না।’’ ‘এ সময় কোরিওগ্রাফার মাসুম বাবুল বলেন, লিজা নামে একটি মেয়ে আছে। চেহারাটা মিষ্টি। সঙ্গে সঙ্গে প্রযোজক গাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। লিজা চলে আসলো। প্রযোজক দেখে বলেন এত মোটা মেয়ে কীভাবে হবে। আমি বললাম, ওকেই নিতে হবে। এটাই নায়িকা। লিজার মাকে বললাম, আপনার মেয়েকে ২৫ হাজার টাকা দেব। প্রযোজককে বলে দশ হাজার টাকা দিয়ে দিলাম।’ বলেন মালেক আফসারি। লিজা থেকে ময়ূরী হয়ে ওঠা প্রসঙ্গে এই নির্মাতা বলেন, ‘‘সেদিন সাইনিং করানোর সময় সাংবাদিক আওলাদ বলেন, ‘লিজা নামটা কেমন জানি লাগছে।’ তখন আমি বলি কি নাম দেওয়া যায় বলেন! তখন আওলাদ বলেন, ‘ওর নাম ময়ূরী দেন। আপনার নামের প্রথম অক্ষর দিয়ে।’ এরপর থেকে লিজা হয়ে যায় ময়ূরী। তিনদিন পরে শুটিংয়ে আসে ময়ূরী। বিশ্বাস করেন, ময়ূরীর প্রথম শট নিলেন মাসুম বাবুল সাহেব। নাচের শট ছিল। প্রথম শটেই ওকে হয়ে যায়। এর পরে ময়ূরী একের পর এক সিনেমায় কাজ করে যায়।’’ নব্বই দশক থেকে এ পর্যন্ত ময়ূরী অভিনীত তিনশত সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোতে তিনি যতটা প্রশংসিত হয়েছেন তার চেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন। নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘চার সতীনের ঘর’ শিরোনামের সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান ময়ূরী। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘বাংলা ভাই’। ময়ূরী এখন চলচ্চিত্রে থেকে দূরে রয়েছেন। নতুন কোনো সিনেমায় তাকে আর দেখা যায় না, স্বামী-সংসার নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন এই নায়িকা। বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে ময়ূরী বলেন, ‘২০০৮ সালে চলচ্চিত্র ছেড়েছি। এরপর একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। এখন চলচ্চিত্রে নেই। পরিবার সংসার নিয়েই আছি। আমার দুই সন্তান নিয়েই এখন সব ভাবনা। সুযোগ পেলে যুক্তরাষ্ট্রে যাই, সেখানে আমার ভাই থাকেন। চলচ্চিত্র নিয়ে আমার নতুন কোনো চিন্তা নেই।’