অনলাইন ডেস্ক :
শেষটা হয়তো কাক্সিক্ষত হয়নি, এতদিনের মধুর সম্পর্কে ফাটলও ধরেছিল স্পষ্ট। তবে বায়ার্ন মিউনিখ থেকে বিদায়বেলায় সেসব আর মনে রাখতে চাইলেন না রবের্ত লেভানদোভস্কি। বললেন, আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় সাফল্যে ভরা আট বছরের স্মৃতি চিরজীবন হৃদয়ে লালন করবেন। বায়ার্ন মিউনিখ ছেড়ে পোলিশ তারকার বার্সেলোনায় নাম লেখানোর সকল প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন। দুই ক্লাবের মধ্যে হয়ে গেছে সমঝোতা। শনিবার উভয় ক্লাবই বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এখন খেলোয়াড়ের মেডিকেল হয়ে গেলেই চুক্তির আনুষ্ঠানিকতা সারা হবে। দুই ক্লাবের বিবৃতির পর ওই রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে আসা দল-সতীর্থ এবং প্রিয় সমর্থকগোষ্ঠীকে ধন্যবাদ জানান লেভানদোভস্কি। “আমি আমার সব সতীর্থ, ক্লাবের সব কর্মচারী এবং এফসি বায়ার্নের ম্যানেজমেন্ট সহ যারা আমাকে সমর্থন দিয়ে গেছেন, তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সবার জন্যই আমরা অনেক শিরোপা জিততে পেরেছি। সবার ওপরে আমি সমর্থকদের কৃতজ্ঞতা জানাই-আপনারাই এই ক্লাব তৈরি করেছেন।” “আমরা খেলোয়াড়রা এখানে কেবল একটা মুহূর্তের জন্য থাকি। আমার জন্য সেই মুহূর্তটা অসাধারণ আটটি বছর এবং এই স্মৃতি সারাটা জীবন আমার মনে থাকবে।” পোল্যান্ডের হয়ে ১৩২ ম্যাচে ৭৬ গোল করা লেভানদোভস্কি বরুশিয়া ডর্টমুন্ড থেকে বায়ার্নে যোগ দেন ২০১৪ সালে। দীর্ঘ এই সময়ে দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৭৫ ম্যাচে তার গোল ৩৪৪টি। গত কয়েক মৌসুমে তো তিনি হয়ে উঠেছিলেন গোল মেশিন। ভেঙে দেন অনেক রেকর্ড। জার্মানির সফলতম দলটির হয়ে প্রতি মৌসুমে বুন্ডেসলিগা এবং একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ জিতেছেন তিনি সব ধরনের শিরোপা। মাঠে এমন সুন্দর সময়ের পরও গত মৌসুমের শেষ দিকে ক্লাবের সঙ্গে তার বনিবনা না হওয়ার খবর আসতে থাকে। এরপর গত মে মাসে তা স্পষ্ট হয়ে যায় তারই কথায়। কোনোভাবেই আর বায়ার্নে থাকতে চান না বলে জানিয়ে দেন তিনি। দুইবারের ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার লেভানদোভস্কির সঙ্গে বায়ার্নের চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। ক্লাবের পক্ষ থেকে শুরুতে যেকোনো ভাবে এই খেলোয়াড়কে ধরে রাখার কথা বলা হলেও পরে ‘উপযুক্ত মূল্য’ পেয়ে ছেড়ে দিতে রাজি হয় তারা। ট্রান্সফার ফির বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই এখনও কিছু নিশ্চিত করে বলা হয়নি। তবে গণমাধ্যমের খবর মতে, অঙ্কটা হতে পারে পাঁচ কোটি ইউরো। সাফল্যে মোড়ানো ক্লাব ক্যারিয়ারে বায়ার্নের হয়ে ৮টি বুন্ডেসলিগা, ৩টি জার্মান কাপ, ৪টি জার্মান সুপার কাপ এবং ১টি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন তিনি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে নিজে থেকেই তিনি চলে যেতে চেয়েছেন। তবে, এত এত সাফল্য যেখানে পেয়েছেন, যে জার্সি পরে হয়ে উঠেছেন সত্যিকারের তারকা-প্রিয় সেই ঠিকানা ছাড়ার বেলায় ঠিকই মন কাঁদছে লেভানদোভস্কির। “আমরা সবাই মিলে যা কিছু অর্জন করেছি, সেজন্য আমি গর্বিত। আমি আবারও এই ক্লাবের সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, তারাই বায়ার্নকে বিশেষ একটি ক্লাব করে তুলেছে।” লিওনেল মেসিকে ছেড়ে দেওয়ার পর থেকেই একজন স্কোরারের অভাব বড্ড অনুভব করছিল বার্সেলোনা। এবারের দলবদলে তাই তারা কোমর বেঁধে নামে লেভানদোভস্কিকে আনতে। অনেক চেষ্টা আর দর কষাকষির পর শেষ পর্যন্ত তাকে পাচ্ছেন দলটির কোচ শাভি এরনান্দেস। সমস্যায় ঘেরা দুই মৌসুমে শেষে এবার কক্ষপথে ফেরার আশায় বার্সেলোনা। আর ৩৪ বছর বয়সী লেভানদোভস্কির সামনে পূর্বের সাফল্যের ধারাবাহিকতা এখানেও টেনে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা