এপি, নয়াদিল্লি :
ভারতের পার্লামেন্ট তথা লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেলেন প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী।
দেশটির শীর্ষ আদালত প্রধানমন্ত্রীর উপাধি নিয়ে ‘বিদ্রুপ’ করার অভিযোগে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। তবে রায় স্থগিত করায় সোমবার (৭ আগেস্ট) তাকে সংসদ সদস্য হিসেবে পুনর্বহাল করেছে লোকসভা।
দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ভয়ংকর জাতিগত সহিংসতা চলছে। এই সহিংসতা উসকে দেওয়া ও দমনে ব্যর্থ হওয়ায় মোদি সরকার বিরোধীদের কঠোর সমালোচনা মুখে পড়েন।
চলতি সপ্তাহে এই নিয়ে পার্লামেন্টে একটি অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপিত হওয়ার করার কথা রয়েছে। এই মুহূর্তে রাহুলের সংসদ সদস্যপদ ফিরে পাওয়ায় নরেন্দ্র মোদির সরকার আরও কোণঠাসা হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাহুল ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
এর আগে গত শুক্রবার (৪ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্ট তার সাজা স্থগিত করেছে।
আদালতের এই আদেশের অর্থ হলো আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তার বিরুদ্ধে না গেলে রাহুল আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।
নামে ‘মোদি’ উপাধি আছে এমন একজন ব্যক্তি রাহুলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে এক জনসভায় দেওয়া বক্তৃতায় মানহানির অভিযোগে মামলা করেন।
সেই বক্তৃতায় রাহুল কৌতুক করে বলেছিলেন, ‘সব চোরের নামে কেন মোদি উপাধি থাকে?’
রাহুল তার বক্তৃতায় তিনজন মোদির কথা উল্লেখ করেন- একজন হলেন পলাতক ভারতীয় হীরা টাইকুন, দ্বিতীয়জন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে নিষিদ্ধ ক্রিকেট নির্বাহী এবং তৃতীয়জন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
যে আবেদনকারী মামলাটি করেছেন তিনি গুজরাটে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সদস্য।
কিন্তু রাহুলের উল্লেখিত অন্য দুই মোদি বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।
চলতি বছরের ২৩ মার্চ গুজরাটের একটি আদালত রাহুলকে মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন। এর পরের দিনই তাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
কিন্তু গত এপ্রিল মাসে তার আপিলের ভিত্তিতে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর গত মাসে তিনি দেশের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রপৌত্র ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এই কারাদণ্ড ও লোকসভার সদস্যপদ প্রত্যাহারের তীব্র নিন্দা করেছেন মোদি বিরোধীরা।
তারা এটিকে ক্ষমতাসীন সরকারের করা গণতন্ত্রের উপর সর্বশেষ হামলা এবং ভিন্নমতকে দমন করার পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করেছেন।
১ দশমিক ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র।
মোদির সমালোচকরা বলছেন, ২০১৪ সালে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের গণতন্ত্র বাধার মুখে পড়েছে। তারা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের অভিযোগ তুলেছেন।
যদিও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সরকারের দাবি, তাদের নীতিগুলো জাত-পাত নির্বিশেষে সব ভারতীয়দের জন্য নেওয়া হয়।
রাহুলের পরিবার থেকে দুইজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তার দাদি ইন্দিরা গান্ধী ও বাবা রাজীব গান্ধী দুজনই গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২