নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর অনেক এলাকাতেই তীব্র পানি সঙ্কট বিরাজ করছে। বিগত বছরগুলোতে শরৎকালে তেমন পানির সঙ্কট না থাকলেও এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মূলত বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে পানির সঙ্কট বাড়ছে। আর ঢাকা ওয়াসায় প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা পানি না পাওয়ার অভিযোগ করছে। গাড়ি-ট্রলিতে পানি সরবরাহের জন্য আবেদন জানাচ্ছে। কিন্তু ওয়াসা চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করতে পারছে না। ঢাকা ওয়াসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা ওয়াসার ৯ শতাধিক পানির পাম্প রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২শটি বিকল। চালু পাম্পগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় একশ কোটি লিটার পানি পাওয়া যায়। বাকি পানি চারটি পানি শোধনাগার থেকে আসে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে পাম্পগুলো থেকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম পানি পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় আড়াইশ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে ওয়াসা ২০০ কোটি লিটারের মতো সরবরাহ করতে পারছে। ফলে অনেক এলাকাতেই পানি সঙ্কট তীব্র হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরই ওয়াসা শরৎকালে রাজধানীতে গাড়িতে পানি সরবরাহের তেমন আবেদন পায়নি। অথচ সাম্প্রতিককালে রাজধানীবাসীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ গাড়ি পানির চাহিদা জমা পড়ছে। বিপরীতে ঢাকা ওয়াসা আড়াইশর মতো গাড়ি পানি সরবরাহ করেছে। আর লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনুযায়ী কিছু দিন ধরে ওই চাহিদাও কম-বেশি হচ্ছে। তার মধ্যে মোহাম্মদপুরের আদাবর, মনসুরাবাদ, লালমাটিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি পানির চাহিদা আসছে। তাছাড়া রাজধানীর গুলশান, বনানী, বারিধারাসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারাও ঠিকমতো পানি পাচ্ছে না। ওসব এলাকা থেকেও অনেক পানির গাড়ির চাহিদা আসছে। তিন গাড়ির চাহিদাপত্র দিলে এক থেকে দুই গাড়ি দিয়ে ম্যানেজ করতে হচ্ছে। ওয়াসার প্রতিটি আঞ্চলিক কার্যালয় থেকেও গাড়িতে করে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে রাজধানীর বাড্ডা-কালাচাঁদপুর, গুলশান, আদাবর ও উত্তরার কয়েকটি এলাকায় সবচেয়ে বেশি পানির সঙ্কট বিরাজ করছে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম শহিদ উদ্দিন জানান, এক ঘণ্টা লোডশেডিং হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু ৪ ঘণ্টা লোডশেডিং মোকাবিলা করতে আরো ৪ ঘণ্টা লাগে। এমন অবস্থায় পাম্পগুলোতে জেনারেটর বা ভ্রাম্যমাণ জেনারেটর ব্যবহার করে পানির সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে। অনেক পাম্পে বিদ্যুতের দুটি সংযোগ দেয়া আছে। তাতে যে কোনো একটি লাইনে বিদ্যুৎ থাকলেও পাম্প চালানো সম্ভব হচ্ছে। আর দুটি সংযোগেই বিদ্যুৎ না থাকলে ভ্রাম্যমাণ জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এমন কিছু পাম্পও রয়েছে যেখানে সরু রাস্তার কারণে ভ্রাম্যমাণ জেনারেটরও প্রবেশ করানো যাচ্ছে না। তখন পাম্পটি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ওসব কারণে গাড়িতে করে পানি সরবরাহের চাহিদা বেড়েছে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক