অনলাইন ডেস্ক :
নিজের শেষ ওভার করতে এসে পেশিতে টান লাগায় পারলেন না শরিফুল ইসলাম। ফিজিওর সঙ্গে বেরিয়ে গেলেন বাইরে। এক ওভার পর তিনি মাঠে ফিরলেন বটে, কিন্তু পরপর দুই ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে গেল আফগানিস্তান। ফলে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৫ উইকেট নেওয়ার শেষ সুযোগটি পেলেন না শরিফুল। তবে গতি ও বাউন্সের দারুণ প্রদর্শনীতে এই বাঁহাতি পেসারই ম্যাচের প্রথম অর্ধে বাংলাদেশের নায়ক। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর অভিযানে একাদশে ফিরে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন শরিফুল। তার ২১ রানে ৪ উইকেটের সৌজন্যে আফগানিস্তানকে ১২৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ১৭ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এর আগেও দুইবার ৪ উইকেট পেয়েছেন ২২ বছর বয়সী এই পেসার। ২০২১ সালের জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খরচ করেন ৪৬ রান। আর গত বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেন ৩৪ রান।
এবার হঠাৎ চোটে শেষ ওভার করতে না পারায় আগের দুইবারের মতো ৪ উইকেটেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো শরিফুলকে। তবে দুই স্পেলে করা ৯ ওভারে নিজের সামর্থের ঝলক দেখান তরুণ বাঁহাতি পেসার। গতির সঙ্গে বাউন্সের মিশেলে আফগান ব্যাটসম্যানদের দারুণভাবে আটকে রাখেন তিনি। তার বোলিংয়ের ৪৬ শতাংশই ছিল শর্ট ডেলিভারি, ৪৪ শতাংশ পড়ে গুড লেংথে। সঙ্গে আঁটসাঁট লাইন ধরে রাখার পুরস্কারই তিনি পান। নতুন বলে পাঁচ ওভারের প্রথম স্পেলে স্রেফ ৮ রানে ৩ উইকেট নেন শরিফুল। যেখানে তার ২৮ বল থেকে কোনো রানই নিতে পারেনি আফগানরা। ২৩তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে উইকেট নেন আরেকটি। এবার তার খরচ ১৫ রান। টস হেরে বোলিং পাওয়ার পর শরিফুলের হাতেই প্রথম ওভার তুলে দেন লিটন দাস। দেখেশুনে পুরো ওভার কাটিয়ে দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। একটি ওয়াইড করায় মেডেন পাননি শরিফুল। পরের ওভারের প্রথম বলেই তিনি পান সাফল্য। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে পা বাড়িয়ে বলের কাছেও যেতে পারেননি ইব্রাহিম জাদরান। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল জমা পড়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে।
টেস্ট ও ওয়ানডে মিলিয়ে চারবারের দেখায় প্রতিবারই ইব্রাহিমকে ড্রেসিং রুমে ফেরত পাঠালেন শরিফুল। গত বছর প্রথম ওয়ানডেতে শরিফুলের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন ইব্রাহিম। এবারে একমাত্র টেস্টের দুই ইনিংসেও শরিফুলের শিকার তিনি। ইব্রাহিমকে ফেরানোর দুই বল পর শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে রহমত শাহকে হকচকিয়ে দেন শরিফুল। পুল করার চেষ্টায় ঠিক পজিশনে যেতে পারেননি ব্যাটসম্যান। ওপরের কানায় লেগে পয়েন্ট ও গালির মাঝামাঝি উড়ে যায় বল। কিন্তু ফুল লেংথ ডাইভ দিয়েও বলের নাগাল পাননি মেহেদী হাসান মিরাজ। এই উইকেটের জন্য অবশ্য অপেক্ষা করতে হয়নি শরিফুলকে। পরের বলেই আরেকটি শর্ট ডেলিভারিতে পরাস্ত রহমত। লাফিয়ে ওঠা বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি ওয়ানডেতে আফগানদের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে বল চলে যায় মুশফিকের গ্লাভসে। বুনো উল্লাসে মাতেন শরিফুল।
পাওয়ার প্লেতে নিজের শেষ ওভারে তৃতীয় শিকার ধরেন তিনি। অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি অফ স্টাম্পের দিকে এসে খেলার চেষ্টা করেন মোহাম্মদ নবি। বল প্যাডে লাগলে জোরাল আবেদনে সাড়া দিতে দেরি করেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। শরিফুলের সঙ্গে পাওয়ার প্লেতে বোলিং করেন তাসকিন। ১০ ওভারে দুজনের ডট বলের সংখ্যা ৫২টি! ওয়ানডেতে এটিই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ডট বলের রেকর্ড। গত বছর জিম্বাবুয়ে ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও সমান ৫২টি করে ডট বল খেলিয়েছিল তারা। এরপর শরিফুলকে সরিয়ে নেন লিটন। দ্বিতীয় স্পেলে নিজের তৃতীয় ওভারে শরিফুল আউট করেন আবদুল রহমান রহমানিকে। শরীর বরাবর আসা বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ আউট হন অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান। এরপর শেষ দিকে ওই চোট এবং শরিফুলের পাঁচ উইকেটের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ ভেস্তে যাওয়ার হতাশা।
আরও পড়ুন
তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে যুদ্ধ
হারিকেন হেলেনে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু
নেপালে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে ১৯২