অনলাইন ডেস্ক :
অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের বিদায়ের পর পাকিস্তানের পার্লামেন্ট বিরোধীদলীয় নেতা শাহবাজ শরিফকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাভুটিতে শাহবাজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী দৌড়ে শাহবাজের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ মাহমুদ কুরেশি।
কিন্তু কুরেশিসহ পিটিআইয়ের সব সদস্য অধিবেশন বয়কট করায় কার্যত শাহবাজের জন্য মাঠ ফাঁকা হয়ে যায়। শাহবাজের পক্ষে পড়ে ১৭৪ ভোট।
সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনই ছিল একমাত্র কর্মসূচি। ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ১৭২ সদস্যের সমর্থন লাগে, সেখানে ১৭৪ সদস্যের সমর্থন পেয়েছেন শাহবাজ।
পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও ইমরানের দল পিটিআই এর শাহ্ মাহমুদ কুরেশি রোববার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।
ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পার্লামেন্টের যে বিরোধীদলীয় জোট কাজ করেছে তাদের নেতা শাহবাজ শরিফ ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন পেয়ে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন বলে আগেই ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল।
‘দ্য ডন’ পত্রিকা জানায়, সোমবার পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভোটের পর পিএমএল-এন নেতা আয়াজ সাদিক নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শাহবাজ শরিফের নাম ঘোষণা করেন। এরপরই আইনপ্রণেতারা তার সমর্থনে স্লোগান দিতে শুরু করে।
পার্লামেন্টে নতুন প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভাষণে শাহবাজ বলেন, ‘পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য’ আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম একজন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবে সফলতা এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অশুভর উর্ধ্বে শুভর জয় হয়েছে।”
শাহবাজ পাকিস্তানের ২৩তম প্রধানমন্ত্রী হলেন। তিনি এখন একটি নতুন সরকার গঠন করবেন। ২০২৩ সালের অগাস্টে পাকিস্তানে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এ সরকারই ক্ষমতায় থাকবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
৭০ বছর বয়সী শাহবাজ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই। নওয়াজ তিন মেয়াদে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন। শেষবার ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
এতদিন শাহবাজের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) বা পিএমএলএন দেশটির অন্যতম প্রধান বিরোধীদল হিসেবে ভূমিকা পালন করেছে। এখন শাহবাজের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মধ্যে দিয়ে তারাই ক্ষমতাসীন দল হল।
পাকা ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে শাহবাজ শরিফের সুনাম আছে। তিনি তিন মেয়াদে পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে লন্ডনে চলে যাওয়ার পরই তার দল পিএলএম-এন পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন শাহবাজ।
১৯৯৯ সালে জেনারেল পারফেজ মুশাররফের নেতৃত্বে পাকিস্তানে সেনা অভ্যুত্থানের পর পাকিস্তান ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন শাহবাজ শরিফ।
২০০০ সালে সৌদি আরবে নির্বাসনে থাকতে শুরু করেন তিনি। ২০০৭ সালে শাহবাজ আবার পাকিস্তানে ফেরেন তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করতে।
২০০৮ সালে নির্বাচনে জিতে ফের পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। তৃতীয় মেয়াদে শাহবাজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ২০১৩ সালে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২