রাস্তায় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বলেছেন, যানবাহনের ক্ষতি করা তাদের দায়িত্ব নয়।
তিনি বলেন, ‘দয়া করে এ সমস্ত কাজ আর করবে না, নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাও, পড়াশোনা মনযোগী হও। সাম্প্রতিক সড়কে মৃত্যুর ঘটনায় যারা দায়ী তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে, তাদের খুঁজে বের করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন এবং ধানমন্ডি এলাকায় জয়িতা ফাউন্ডেশন টাওয়ারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসছে। এটা (নতুন ভ্যারিয়েন্ট) দেশে সংক্রমিত হতে শুরু করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার বন্ধ হয়ে যাবে। সুতরাং, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে পড়াশোনায় মনযোগ দাও।’
শেখ হাসিনা বলেন, যারা গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী তাদেরও চিহ্নিত করে শাস্তি দেয়া হবে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা গাড়িতে কেউ মারা গেলে, যদি কাউকে পুড়িয়ে মারা হয়, তাহলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। আমাদের এটি মনে রাখা দরকার।
সাম্প্রতিক সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সচেতন ও সতর্ক। ভিডিও ফুটেজ ও আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে ইতোমধ্যেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সড়কে সতর্ক থাকার এবং কঠোরভাবে ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, রাস্তা পার হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা আছে। মানুষ নির্বিচারে রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করলে দুর্ঘটনা ঘটবে। চলন্ত গাড়ি হঠাৎ ব্রেক থামাতে পারে না।
ভুক্তভোগীকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য সাহায্য না করে যে কোনো দুর্ঘটনার পর যারা সব সময় রাস্তা অবরোধ করে, যানবাহনের ক্ষতি করে এবং যানবাহনে আগুন দেয় তাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যেসব গাড়িতে আগুন দেয়া হয়, তাতে যাত্রী, শিশু ও ছাত্র আছে, কেউ আহত হলে, পুড়ে মারা গেলে তার দায় কে নেবে? স্বাভাবিকভাবেই হামলাকারীদের এই দায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও পদক্ষেপ নিতে হবে। সুতরাং, আমি সবাইকে অনুরোধ করব,দয়া করে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।
শেখ হাসিনা এসময় চালকদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে যানবাহন চালাতে বলেন। তিনি বলেন, আমাদের একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। স্বাভাবিকভাবে, আপনি যখন এখানে গাড়ি চালান, আপনাকে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের দুটি আবর্জনা বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় দুটি মৃত্যুর রহস্য তিনি বুঝতে পারছেন না।
তিনি বলেন, কি কারণ? খুঁজে বের করতে হবে এর জন্য দায়ী কে, একজন মানুষ কেন শুধু ময়লা ফেলার ট্রাকের সামনে দিয়ে হেঁটে যাবে? আরেকটি বিষয় যা নিশ্চিত হওয়া দরকার তা হল যে ব্যক্তিরা যানবাহন চালাচ্ছিলেন তাদের চালনার দক্ষতা আছে কি না।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সেগুলো আবার খোলা হয়েছে। সুতরাং, তোমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাও।
তিনি আরও বলেন, করোনভাইরাস এখনও পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। সরকার টিকা দিচ্ছে এবং এখন শিক্ষার্থীরা ভ্যাকসিন পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারপারসন লাকি ইনাম এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম