November 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, August 14th, 2023, 8:06 pm

শিগগিরই শেষ হচ্ছে না হাতিরঝিলে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তি

ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতের তারের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে চরম ভোগান্তির শিকার হাতিরঝিলের দক্ষিণাঞ্চলে চলাচলকারী যাত্রীরা। এদিকে এ বিপত্তি থেকে মুক্তি পেতে যাত্রীদের আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এক দিকে খোঁড়াখুঁড়ি, অপরদিকে বর্ষা- নগরীর যাত্রীদের দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। মূলত হাতিরঝিল সড়ক ব্যবহার করে যেসব যাত্রী দ্রুত গুলশান বা রামপুরা থেকে মগবাজারে পৌঁছাতে চান তাদেরই এই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত হয়ে গেছে এবং প্রায়ই যানবাহন গর্তে আটকে যাচ্ছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) তাদের ওভারহেড তারগুলো প্রতিস্থাপনের জন্য এলাকার রাস্তা খননের মাধ্যমে উচ্চ ভোল্টেজের ভুগর্ভস্থ তারগুলো স্থাপন করছে।

ডিপিডিসির মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে হাতিরঝিলের ওভারহেড ট্রান্সমিশন লাইনগুলো মাটির নিচে চলে যাচ্ছে।

পিজিসিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিপিডিসির তার স্থাপনের কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। তবে পিজিসিবির কাজ এখনও চলছে। আর এটি সম্পূর্ণ হতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগবে।

পিজিসিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা বদরুজ্জামান সুমন জানান ‘এখন রামপুরা এলাকায় আমাদের ক্যাবল সংযোগের কাজ চলছে। কাজগুলো শেষ করতে আমাদের আরও অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘কাজ শেষ হওয়ার পরে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) রাস্তা মেরামত করবে। কারণ একাজটি তাদের অধীনে রয়েছে।’

এরপর রাস্তা মেরামতের উদ্যোগ নেবে রাজউক। আর এ কাজের জন্য এক মাসের বেশি সময় লাগতে পারে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।

চলতি বছরের মার্চে হাতিরঝিল এলাকায় হাই ভোল্টেজ ওভারহেড ট্রান্সমিশন লাইন প্রতিস্থাপনের জন্য ভূগর্ভস্থ ক্যাবল স্থাপনের কাজ শুরু করে ডিপিডিসি।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ২ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তায় ১৩২ কিলোভোল্ট (কেভি) ভূগর্ভস্থ তার স্থাপন করেছি। আমরা আশা করি, আগামী বছরের মধ্যে মানুষ হাতিরঝিলে মাথার উপরে কোনো তার দেখতে পাবে না।’

তিনি বলেন, হাতিরঝিল এলাকার দক্ষিণাঞ্চলে রাস্তা খুঁড়ে তারগুলো মাটির নিচে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারগুলো রামপুরা ব্রিজ এলাকা হয়ে মগবাজারে পৌঁছাবে।

নগরীর সৌন্দর্যবর্ধন ও পরিবেশ রক্ষা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গুলশান, তেজগাঁও ও রামপুরার বিস্তীর্ণ এলাকায় হাতিরঝিল কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু উপরে ঝুলন্ত তারগুলো পরিকল্পনার বাইরে ছিল।

হাতিরঝিল থেকে উপরে ঝুলন্ত তারগুলো সরানো ডিপিডিসির বৃহত্তর পরিকল্পনার একটি অংশ। এরই অংশ হিসেবে শহরের কেন্দ্র, পশ্চিম ও দক্ষিণ অংশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব ঝুলন্ত তারগুলো মাটির নিচে স্থাপন করা হচ্ছে।

পিজিসিবিও এই কাজের সঙ্গে জড়িত কারণ এর উচ্চ ভোল্টেজের তারটি উলান গ্রিড সাবস্টেশন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ডিপিডিসি তারের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।

ঢাকা শহরে ডিপিডিসির অধীন এলাকায় নেটওয়ার্ক এবং সিস্টেম উন্নত করার জন্য একটি ‘পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম আপগ্রেডিং’ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। চীনের অর্থায়নে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০২১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিবিএইএ’র সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ডিপিডিসি।

ডিপিডিসি কর্মকর্তারা জানান, এর আগে তারা প্রকল্পের নকশা সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মোট ১৯০ কিলোমিটার বিদ্যুতের ঝুলন্ত তার সরিয়ে মাটির নিচে নিয়ে যাওয়া হবে।

এর মধ্যে প্রায় ১১৫ কিলোমিটার ১১ কেভি ঝুলন্ত তার এবং ৭৫ কিলোমিটার শূন্য দশমিক ৪ কেভি লাইন রয়েছে। তারা আরও জানান, সব ধনের ঝুলন্ত বৈদ্যুতিক তারগুলো মাটির নিচে স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া সাতমসজিদ রোড, মিরপুর রোড, সিটি কলেজ ও গ্রিনহেরাল্ড স্কুল এলাকাসহ ধানমন্ডির একটি নির্দিষ্ট অংশে কোনো তার দৃশ্যমান থাকবে না বলেও জানান তারা।

ডিপিডিসি কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রকল্পটি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড -১৯ মহামারির পরে কাজের নকশা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত চীনা প্রকৌশলীরা তাদের নিজ শহর উহানে আটকে পড়েন।

বিকাশ দেওয়ান বলেন, প্রকল্পটি একবার বাস্তবায়িত হলে, এটি বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহে অপ্রত্যাশিত বিঘ্ন রোধ করবে।

—-ইউএনবি