অনলাইন ডেস্ক :
ফাইনাল ম্যাচ। অধিনায়কের দায়িত্ব যেমন হওয়া উচিত, শুভাগত হোম সেই পরিধিও হয়তো ছাড়িয়ে গেলেন! প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত শতকে লিড এনে দেওয়ার পথে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আর দ্বিতীয় ইনিংসে রান তাড়া করতে নেমে কঠিন চাপের মধ্যে অসাধারণ সেঞ্চুরিতে নিশ্চিত করলেন দলের জয়। শুভাগতর দুই শতকে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। বৃহস্পতিবার ফাইনালের শেষ দিনে উত্তেজনাকর লড়াইয়ে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চলকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে মধ্যাঞ্চল। ২১৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুভাগতর অনবদ্য ১১৪ রানের ইনিংসে শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণাঞ্চলকে হারিয়ে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তুললো মধ্যাঞ্চল। আগের দিন দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চল ২৬৮ রানে অলআউট হয়। তাতে ২১৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শেষ বিকেলে এলোমেলো মধ্যাঞ্চলের ব্যাটিং লাইনআপ। ২৬ রানে হারিয়ে বসে ৩ উইকেট। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারী) শেষ দিন শুরু করেন সৌম্য সরকার ও সালমান হোসেন। কিন্তু আগের দিনের ৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা সৌম্য কোনও রান যোগ না করতেই ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। এরপর তাইবুর রহমান (৩) ও সালমান (৩৭) আউট হলে ৬৮ রানে ৬ উইকেট হারায় মধ্যাঞ্চল। ম্যাচের ওই অংশে হারের চোখ রাঙানিই দেখেছিল তারা। কিন্তু দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে শুভাগত লিখলেন ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। সত্যিকারের অধিনায়কের মতো সামনে থেকে দিলেন নেতৃত্ব। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখালেন তার সামর্থ্য। সঙ্গে পেয়েছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটার জাকের আলীকে। এই দুজনের দৃঢ়তায় আর উইকেটই হারায়নি। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৫৩ রানের জুটিতে শিরোপা উৎসব করেছে মধ্যাঞ্চল। এর মধ্যে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করে শুভাগত এই ম্যাচে পেয়ে যান দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ১২১ বলে ১৩ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় খেলেন হার না মানা ১১৪ রানের ইনিংস। দারুণ ভূমিকা রেখে অন্যপ্রান্ত আগলে রাখা জাকের ১২৪ বলে ৫ বাউন্ডারিতে অপরাজিত ছিলেন ৪১ রানে। প্রথম ইনিংসে ১১৬, দ্বিতীয় ইনিংসে ম্যাচজেতানো ১১৪* রান- ম্যাচসেরার পুরস্কার শুভাগতর হাতেই মানায়। আর এবারের বিসিএলের সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন ব্যাট হাতে দুর্দান্ত সময় কাটানো মোহাম্মদ মিঠুন। দ্বিতীয় ইনিংসে দক্ষিণাঞ্চলের দুই বোলার- নাসুম আহমেদ ও মেহেদী হাসান রানা পেয়েছেন ২টি করে উইকেট। আর একটি করে উইকেট শিকার ফরহাদ রেজা ও কামরুল ইসলামের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল: প্রথম ইনিংসে ১১১.৩ ওভারে ৩৮৭ (জাকির হাসান ১০৭, এনামুল হক ৭৬, ফরহাদ রেজা ৭১, পিনাক ঘোষ ৬৫; হাসান মুরাদ ৫/১০১, শুভাগত ৩/৫১) ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৭৫.৫ ওভারে ২৬৮ (রিশাদ হোসেন ৯৯, অমিত হাসান ৪১, নাসুম আহমেদ ৪১, পিনাক ঘোষ ২৭; আবু হায়দার ৫/৭৮)।
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল: প্রথম ইনিংসে ১২৭.৪ ওভারে ৪৩৮ (মোহাম্মদ মিঠুন ২০৬, শুভাগত হোম ১১৬, জাকের আলী ৫৩, রবিউল হক ৩৪; ফরহাদ রেজা ৪/৫৩, কামরুল ইসলাম ৪/৭০) ও দ্বিতীয় ইনিংসে (লক্ষ্য ২১৮) ৬৩.৫ ওভারে ২২১/৬ (শুভাগত হোম ১১৪*, জাকের আলী ৪১*, সালমান হোসেন ৩৭; নাসুম আহমেদ ২/৪৩, মেহেদী হাসান রানা ২/৫০)।
ফল: ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: শুভাগত হোম (মধ্যাঞ্চল)।
টুর্নামেন্টসেরা: মোহাম্মদ মিঠুন (মধ্যাঞ্চল)।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা