মোঃ আবু রায়হান, শেরপুর :
টানা এক সপ্তাহ ধরে শেরপুরে ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে ডায়রিয়া। প্রতিদিন শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি থাকছে শতাধিক রোগী। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীদের চাপ বেশী হওয়ায় হাসপাতালে বারান্দাগুলোর মেঝেতে রেখে ডায়রিয়া চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেশী হওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার ও নার্সরা।
জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৈরী আবহাওয়ায় হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে স্যালাইন সংকট দেখা দেওয়ায় ঢাকা থেকে স্যালাইন আনা হচ্ছে। সাধারণত প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন ডায়রিয়া রোগী থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা অত্যাধিক হারে বেড়ে গেছে বলে কর্তব্যরত ডাক্তার ও স্টাফ নার্সরা জানান। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং বিশুদ্ধ পানি পান না করার ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন ডাক্তাররা।
ডা. সোহেল আহমেদ দুপুরে বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি রয়েছে প্রায় ১৩০ জন। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ জনের মতো রোগী আমরা ছুটি দিচ্ছি। গত ৩১ অক্টোবর একদিনেই ৮৫ জন ডায়রিয়া রোগী জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত ৭ দিন ধরেই ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোগী মারা যায়নি। এর আগে ডায়রিয়ার এত প্রকোপ ছিল না। এবারের ডায়রিয়া রোগটা একটু জটিল।
জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি শেরপুর পৌরসভার সজবরখিলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বলেন, আমি সোমবার ভোর বেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শেরপুর পৌরসভার গৌরিপুর মহল্লার ডায়রিয়া রোগী সানোয়ারা বেগম বলেন, আমি সোমবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। শ্রীবরদী উপজেলার বটতলা গ্রামের সানজিদ হাসান বলেন, আমি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছি। শেরপুর শহরের বটতলা এলাকার বাসিন্দা জীবন দেবনাথ বলেন, আমার স্ত্রীকে সোমবার সকালে এ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আসার পরে অনেক স্যালাইন ও ওষুধ লাগছে। হাসপাতাল থেকে কিছু দিচ্ছে আর আমার বাইরে থেকে কিছু কিনতে হয়েছে। শেরপুর শহরের নাহপাড়া এলাকার ফিরোজ বলেন, গত তিনদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যাব। ময়মনসিহের বাসিন্দা বাস চালক হারুন বলেন, সোমবার বিকাল এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. খায়রুল ইসলাম সুমন বলেন, প্রতিদিন গড়ে হাসপাতালে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ জন ডায়রিয়া ভর্তি হচ্ছে। মনে হচ্ছে আবহাওয়ার পরিবর্তনজনিত কারণে ডায়রিয়া প্রকোপ বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি