September 21, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 21st, 2023, 8:13 pm

শেষের লড়াইয়ে বড় স্কোরের আশায় বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক :

ব্যাটিং তো বরাবরই দুর্বলতার জায়গা বাংলাদেশের। তবে গত ম্যাচে যেভাবে ধসে পড়েছে ব্যাটিং লাইন আপ, দুর্ভাবনা তাতে মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন করে। বোলারদের নিষ্প্রভ দিনটিতে পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়ে ব্যাটিং। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে দলের ভাবনাজুড়ে তাই ব্যাটিংয়ে উন্নতি। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত সিরিজটিতে দুই দলই এখন পর্যন্ত জিতেছে একটি করে ম্যাচ। দ্বিতীয়টি বিশাল ব্যবধানে হেরে গেলেও শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে বড় অর্জনের হাতছানি। মেয়েদের ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ১৬টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজে তাদের জয় স্রেফ তিনটিতে। এর মধ্যে দুটি জয় তুলনামূলকভাবে বেশ পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে (২০২১) ও আয়ারল্যান্ডের (২০১৬) বিপক্ষে। অন্যটি পাকিস্তানের বিপক্ষে, ঘরের মাঠে প্রায় ৯ বছর আগে।

ভারতকে শেষ ম্যাচে হারাতে পারলে সিরিজ জয়ের দীর্ঘ খরা কাটবে। সেই লক্ষ্য পূরণে বড় চ্যালেঞ্জ ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে ওঠা। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে মিলে পাঁচ ম্যাচের কোনোটিতেই ঠিক সন্তোষজনক ব্যাটিং করতে পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে ৯৫ রানে আটকে রাখলেও ব্যাটারদের ব্যর্থতায় মেলেনি জয়। পরেরটিতেও সফরকারীদের স্রেফ ১০২ রানে থামিয়ে জয়ের মঞ্চ তৈরি করে দেন বোলাররা। পরে প্রথম ওয়ানডেতে ১৫২ রানের পুঁজি নিয়ে বোলারদের হাত ধরেই ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন মেথডে ৪০ রানে জেতে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বোলারদের বাজে দিনে ভারত করে ২২৮ রান। তা পুষিয়ে দেওয়ার মতো কিছুই করতে পারেননি ব্যাটাররা। তৃতীয় উইকেটে ফারজানা হক ও রিতু মনি ৬৮ রানের জুটি গড়লেও বাকিরা কেউই পারেননি বলার মতো কিছু করতে। সেফ ১৪ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে তারা ম্যাচ হারে ১০৮ রানে। শেষ ম্যাচের আগের দিন মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে অলরাউন্ডার ফাহিমা আক্তার শোনালেন আশাবাদ, আগের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে শেষ ম্যাচে ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ দল। “দ্বিতীয় ম্যাচে আমাদের যে ভুলগুলো ছিল, তা নিয়ে দুই দিনে অনেক আলোচনা করেছি। আমি বলব, এখন পর্যন্ত আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি। প্রথম ওয়ানডেতে আমরা দল হিসেবে পারফর্ম করতে পেরেছি। দ্বিতীয় ম্যাচেও আমরা অনেক চেষ্টা করেছি… দূর্ভাগ্যবশত…।”

“ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমাদের প্রত্যেকটা ব্যাটারই অনেক প্রতিভাবান। আমরা জানি, সবারই সামর্থ্য ছিল। দুর্ভাগ্যবশত করতে পারিনি। তবে সবাই নিজের জায়গা থেকে ব্যক্তিগতভাবে, আমাদের কোচ, ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে ভালো আলোচনা করেছি। আমরা আশাবাদী। দল হিসেবে চেষ্টা করব।” দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সহ-অধিনায়ক নাহিদা আক্তার বলেন, শেষ ম্যাচের আগে বড় হারের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না তাদের দলের মানসিকতায়। এবার তৃতীয় ওয়ানডেতে নামার আগে প্রায় একই কথা বললেন প্রধান কোচ হাশান তিলাকারাত্নে। ক্রিকেটাররা মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে আছে জানিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের তাগিদ দিলেন তিনি। “মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী। দ্বিতীয় ম্যাচটি আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হয়নি। এরপর আমাদের অনেক আলোচনা হয়েছে। আমরা কিছু পরিকল্পনা নিয়ে এসেছি৷ এখন পারফরম্যান্সের দায়িত্ব তাদের। ক্রিকেটাররা খুব আত্মবিশ্বাসী। আশা করছি, ভালো পারফরম্যান্স নিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে।”

ভারতের এবারের সফরের দুই সংস্করণে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর প্রথম ওয়ানডেতে করা ১৫২ রান। বাকি চার ম্যাচে ১২০ রানও পার হতে পারেনি দল। ব্যাটিংয়ের এই সমস্যা অবশ্য অনেক দিন ধরেই। গত মে মাসে শ্রীলঙ্কা সফরেও বৃষ্টিময় তৃতীয় ওয়ানডেতে ৩০ ওভারের ম্যাচে ১২৮ রানে গুটিয়ে যায় নিগার সুলতানার দল। পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি ১৪৫ রান তাড়া করে জিতলেও, পরের দুই ম্যাচে ফের অবস্থা তথৈবচ। তবে পুরোনো ব্যর্থতা ভুলে সামনের দিকেই তাকাতে চান ফাহিমা। আগের ম্যাচগুলিতে না হলেও সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে বড় স্কোরের আশা তার।

“ক্রিকেট এমন একটা খেলা, কখন কী ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, কেউ জানি না। আমিও হয়তো বলতে পারব না, আমরা কী ধরনের স্কোর করব। তবে আমরা আশাবাদী। ব্যাটিং ইউনিটের সবাই ব্যক্তিগতভাবে অনেক চেষ্টা করছে। দুর্ভাগ্যবশত হয়নি। তবে আজ শনিবারের ম্যাচের জন্য সবাই খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। শনিবার আমরা যদি আগে ব্যাটিং করি, ভালো একটা স্কোর দেওয়ার চেষ্টা করব।” বাংলাদেশের মতো ভারতেরও ভাবনার বড় জায়গা জুড়ে ব্যাটিং। প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটারদের ব্যর্থতায় স্রেফ ১৫২ রানও তাড়া করতে পারেনি সফরকারীরা।

শেষ ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে সহ-অধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানাও জানালেন, ব্যাটিংয়েই নিষ্পত্তি হতে পারে সিরিজের। “টি-টোয়েন্টি থেকে শুরু করে ওয়ানডেতেও তারা খুব ভালো ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলেছে। আমি নিশ্চিত, তারা আমাদের কাজ কঠিন করে তুলবে। আমরা কোনো কিছু সহজভাবে নিচ্ছি না। প্রতি ম্যাচের জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নেই, সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছি। ম্যাচ নির্ধারণী প্রভাবক হিসেব করলে, আমাদের জন্য এটি ব্যাটিং। ভালো একটা স্কোর দাঁড় করানো বড় ফ্যাক্টর হবে।”

“পাশাপাশি বোলিং-ফিল্ডিংয়েও… আমার মতে, তাদেরকে হারানোর জন্য তিন বিভাগেই আমাদের ভালো করতে হবে। আমরা কোনো কিছু হালকাভাবে নিচ্ছি না। আমরা নিজেদের নিয়ে কাজ করছি এবং দল হিসেবে উন্নতির দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। আশা করি, আজ শনিবার আমরা সিরিজ জিততে পারব।”