November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, March 7th, 2024, 8:30 pm

শেষ আট নিশ্চিত করলো রেয়াল

অনলাইন ডেস্ক :

রাজ্যের ক্লান্তি যেন ভর করল ভিনিসিউস, বেলিংহ্যামদের পায়ে। প্রথমার্ধ জুড়ে তাদের মাঝমাঠকেও ভুগতে দেখা গেল। বিরতির পর কিছুটা ছন্দ ফিরে পাওয়ার মাঝেই দারুণ এক গোলে দলকে পথে রাখলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। মরিয়া হয়ে লড়াই করল লাইপজিগ, খানিক বাদে সমতা টেনে জমিয়ে তুলল লড়াই। শেষ পর্যন্ত যদিও তারা আটকাতে পারল না রেয়াল মাদ্রিদকে। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে বুধবার রাতে ১-১ ড্র করেছে কার্লো আনচেলত্তির দল। তাতে দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ গোলে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠেছে তারা। শেষ ষোলোর প্রথম লেগে লাইপজিগের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল রেয়াল। তবে ওই জয়ের পর থেকে মাঠে সময় খুব একটা ভালো কাটেনি তাদের; এই সময়ে ঘরোয়া লিগে তিন ম্যাচ খেলে জিততে পারে কেবল একটিতে।

এদিনও ছন্নছাড়া পারফরম্যান্সে প্রায় পুরোটা সময়ই ভুগল ইউরোপের সফলতম ক্লাবটি। পরিংখ্যানেও যা স্পষ্ট; ম্যাচে গোলের উদ্দেশ্যে ১১টি শট নিয়ে মাত্র তিনটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। যেখানে লাইপজিগ নেয় ২০ শট, লক্ষ্যে ছিল চারটি। নিজেদের গুছিয়ে নিতে দুই দলেরই বেশ খানিকটা সময় লেগে যায়। তাই প্রথম ১০ মিনিটে মাঠের দুই পাশে দুই গোলরক্ষকের একরকম অলস সময়ই কাটে। দশম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে সবাইকে পেছনে ফেলে রেয়ালের ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন বেনিয়ামিন সিসকো।

তবে নিজেই হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন অফসাইডে ছিলেন তিনি, তাই তার মধ্যে মরিয়া ভাব দেখা যায়নি, তার শট ঠেকিয়েও দেন গোলরক্ষক। রিপ্লেতে দেখা যায়, অফসাইডেই ছিলেন লাইপজিগ ফরোয়ার্ড। ধীরে ধীরে মাঠের ফুটবল কিছুটা গতি পেলেও উত্তাপ ছিল না একেবারেই। প্রথম আধা ঘণ্টায় একমাত্র উল্লেখযোগ্য সুযোগটি পায় লাইপজিগ। ষোড়শ মিনিটে লোইস ওপেনদার কোনাকুনি ওই শট হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। বিবর্ণ রেয়ালের ওপর চাপ ধরে রেখে ৪১তম মিনিটে গোল পেতে পারত লাইপজিগ। তবে চাভি সিমন্সের জোরাল শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। ওই কর্নার থেকেও সুযোগ পেয়েছিল তারা; কিন্তু এবার ওপেনদার শট পোস্টের বাইরে যায়।

বিরতির পর মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাকে আর নামাননি রেয়াল কোচ। তার জায়গায় নামান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই বিপদে পড়তে বসেছিল রেয়াল। প্রতিপক্ষের একটি আক্রমণ রুখতে পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে যান লুনিন, কিন্তু প্রথম চেষ্টায় বল তো ধরতেই পারেননি, উল্টো বেরিয়ে যান বক্সের বাইরে। ভাগ্য ভালো তার, ওপেনদাও পারেননি বল নিয়ন্ত্রণে নিতে। দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় দলকে বিপদমুক্ত করেন লুনিন। কোনোকিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না, তাতেই কিনা মেজাজ হারিয়ে মাঝমাঠে অহেতুক ফাউল করে বসেন ভিনিসিউস, পেছন থেকে তিনি উইলি অরবানকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। দুজনের মাঝে লেগে যায় তর্কাতর্কি; এর মাঝেই দুই হাত দিয়ে ফের সজোরে অরবানের বুকে আঘাত করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

হলুদ কার্ড দেখেই সেই যাত্রায় পার পান তিনি। একটু একটু করে নিজেদের খুঁজে পেতে শুরু করে রেয়াল। কয়েকটি ভালো আক্রমণ করার পর ৬৩তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিতে পারে তারা, তবে রদ্রিগোর সেই প্রচেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে রুখে দেন গোলরক্ষক। এর দুই মিনিট পরেই ভিনিসিউসের চমৎকার গোলে এগিয়ে যায় রেয়াল। জুড বেলিংহ্যামের বক্সে বাড়ানো বল ছুটে গিয়ে প্রথম ছোঁয়ায় জোরাল শটে জালে পাঠান ভিনিসিউস। দুই লেগ মিলিয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। তবে তিন মিনিট পরেই রেয়ালের স্বস্তি কেড়ে নেয় লাইপজিগ।

সতীর্থের ক্রসে দারুণ হেডে ম্যাচের স্কোরলাইন ১-১ করেন লাইপজিগ ডিফেন্ডার অরবান। গোল পেয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে সফরকারীরা। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে তারা। যোগ করা সময়ে গোল তো প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল জার্মান দলটি; কিন্তু দুর্ভাগ্যের ফেরে দানি ওলমোর বুক দিয়ে বল নামিয়ে নেওয়া শট লাগে ক্রসবারে। হাফ ছেড়ে বাঁচে রেয়াল। চলতি আসরে টানা সাত জয়ের পর এই প্রথম হোঁচট খেল স্প্যানিশ ক্লাবটি। তবে আরও বড় অঘটন যে ঘটেনি, সেটাই তাদের স্বস্তির।