অনলাইন ডেস্ক :
ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই যেন নাপোলির বিপক্ষে শুরু করল বার্সেলোনা। আক্রমণের পসরা মেলে ম্যাচের শুরুতে পাঁচ মিনিটের মধ্যে করল দুই গোল। ইটালিয়ান দলটি ব্যবধান কমিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিলেও প্রতিপক্ষের উজ্জীবিত পারফরম্যান্সে পেরে উঠল না। দুর্দান্ত জয়ে ইউরোপা লিগের শেষ ষোলোয় উঠল শাভি এরনান্দেসের দল। দিয়েগো আরমান্দো মারাদোনা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতে প্লে-অফের ফিরতি লেগে ৪-২ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পরের রাউন্ডে জায়গা করে নিয়েছে কাতালান ক্লাবটি। জর্দি আলবা ও ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের গোলে বার্সেলোনা এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান কমান লরেন্সো ইনসিনিয়ে। সফরকারীদের পরের দুই গোলদাতা জেরার্দ পিকে ও পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং। শেষ দিকে আরেকটি গোল শোধ করেন মাত্তেও পলিতানো। মেসি-গ্রিজমানদের হারিয়ে শক্তি হারানো বার্সেলোনার সবচেয়ে বড় দুর্ভাবনা হয়ে উঠেছিল যথেষ্ট আক্রমণ করেও সুযোগ কাজে লাগাতে না পারা। তবে গত রোববার লা লিগায় আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে ভালেন্সিয়াকে হারিয়ে দেয় তারা ৪-১ গোলে। এবার দাপুটে ফুটবল উপহার দিল নাপোলির বিপক্ষেও। আগের দিন কোচ শাভি বলেছিলেন, নাপোলির বিপক্ষে জিতে প্রমাণ করতে চান যে তারা ইউরোপে খেলার যোগ্য। সেটি তারা করেও দেখাল। ইউক্রেইনে রাশিয়ার আক্রমণের আঁচ লেগেছে ফুটবল বিশ্বেও। এই ম্যাচেও দেখা যায় এর প্রভাব। ম্যাচ শুরুর আগে মাঠে একত্রে ‘স্টপ ওয়ার’ লেখা ব্যানার নিয়ে দাঁড়ান দুই দলের খেলোয়াড়রা। মাঠের পারফরম্যান্সে অবশ্য নাপোলিকে এক চুলও ছাড় দেয়নি বার্সেলোনা। প্রথম ১৩ মিনিটের মধ্যে প্রতিপক্ষের জালে দুই বার বল পাঠায় তারা। অষ্টম মিনিটে অবামেয়াংয়ের বাড়ানো বল ধরে নিজেদের অর্ধ থেকে এগিয়ে যান আদামা ত্রাওরে। প্রতিপক্ষের দুই খেলোয়াড়কে গতিতে পেছনে ফেলে তিনি পাস দেন আলবাকে। ডি-বক্সে ঢুকে ওয়ান-অন-ওয়ানে ডান পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। দারুণ গোলে ব্যবধান বাড়ান ফ্রেংকি ডি ইয়ং। মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের লম্বা করে বাড়ানো বল ফেররান তরেসের ব্যাকহিল ফ্লিকে পেয়ে যান ডাচ মিডফিল্ডার। বিনা বাধায় বেশ কিছুটা এগিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে চিপ শটে ওপরের কোনা দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। কোনো সুযোগই পাননি গোলরক্ষক। ২৫তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান কমান নাপোলি অধিনায়ক ইনসিনিয়ে। টের স্টেগেন স্বাগতিক স্ট্রাইকার ভিক্টর ওসিমহেনকে ফাউল করলে শুরুতে ফ্রি-কিক দেন রেফারি। পরে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান তিনি। বার্সেলোনা যথারীতি আক্রমণে আধিপত্য ধরে রাখে। ২৭তম মিনিটে তরেসের শট প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। পরের মিনিটে কর্নারে কাছ থেকে অবামেয়াংয়ের হেড লক্ষ্যে থাকেনি। তিন মিনিট পর তরেসের আরেকটি শট উড়ে যায় ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে। বিরতির আগে দুই গোলের লিড পুনরুদ্ধার করে তারা। কর্নার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি স্বাগতিকরা। বাঁ দিক থেকে আলবার পাসে প্রতিপক্ষের পায়ে লেগে পাওয়া বল ডান পায়ে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের শটে জাল পাঠান নিষেধাজ্ঞায় ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে খেলতে না পারা পিকে। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণে ছড়ি ঘোরায় বার্সেলোনা। ৫৯তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা অবামেয়াং। ত্রাওরের পাস ডি-বক্সে পেয়ে প্রথম স্পর্শে দারুণ শটে গোলটি করেন গ্যাবনের এই ফরোয়ার্ড। পরের দিকে অবশ্য আর পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি বার্সেলোনা। বরং তাদের ভুলেই নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট বাকি থাকতে ব্যবধান কমায় নাপোলি। সফরকারীরা বলের নিয়ন্ত্রণ হারালে পেয়ে যান পলিতানো। বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন তিনি। এক মিনিট পর তার আরেকটি শট ঠেকিয়ে দেন টের স্টেগেন। ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থাকা বার্সেলোনা গোলের জন্য শট নেয় মোট ১৬টি, যার ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। আর নাপোলির সাত শটের তিনটি লক্ষ্যে ছিল। বার্সেলোনার শেষ ষোলোর প্রতিপক্ষের নাম জানা যাবে শুক্রবার, এই রাউন্ডের ড্র হবে সেদিন।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা