অনলাইন ডেস্ক :
মাত্র চারদিন আগে সন্তান হারিয়েছেন রোনালদো। শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। তবুও দলের প্রয়োজনে নেমে পড়েছেন মাঠে। এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনালের বিপক্ষে গোল করে প্রিমিয়ার লিগে শততম গোলের মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন এই পর্তুগিজ কিংবদন্তি। তবে শেষ পর্যন্ত দলের হার এড়াতে পারেননি রোনালদো। ব্রুনো ফার্নান্দেসের গুরুত্বপূর্ণ পেনাল্টি মিসে আর আর্সেনালের দুর্দান্ত পার্ফরম্যান্সে শেষ পর্যন্ত ৩-১ ব্যবধানের হার বরণ করেছে রেড ডেভিলরা। এমিরেটস স্টেডিয়ামে গত শনিবার প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতে পয়েন্ট টেবিলে চার নম্বরে উঠেছে আর্সেনাল। আর এই হারে চ্যাম্পিয়নস লিগের দৌড় থেকে প্রায় ছিটকেই গেছে ইউনাইটেড। এক ম্যাচ কম খেলেই চারে থাকা আর্সেনাল এখন ইউনাইটেডের চেয়ে ছয় পয়েন্ট এগিয়েছে। ইউনাইটেডের হাতে আছে আর চার ম্যাচ। শীর্ষ চারের লড়াইয়ে আরেক দল চেলসির অবস্থান সবচেয়ে শক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে দলটির পারফরম্যান্স ভালো না হলেও পয়েন্ট টেবিলে তিন নম্বরে আছে তারা, ৩১ ম্যাচে ৬২ পয়েন্ট নিয়ে। ম্যাচের মাত্র ৩ মিনিটেই ইউনাইটেডের রক্ষণ ভুল আর্সেনালকে এগিয়ে দিয়েছে। রাফায়েল ভারান ও অ্যালেক্স তেয়েসের বোকামিতে বল পেয়ে যান বুকায়ো সাকা। তাঁর বাঁকানো শট দাভিদ দে হেয়া বাঁচিয়ে দিলেও ফিরতি বল থেকে নুনো তাভারেসের শট আর ফেরানো হয়নি। এরপর দুই দলই গোলের সুযোগ করেছে পাল্টাপাল্টি। কিন্তু শেষ কাজটা করা হচ্ছিল না কারও। ১৫ মিনিটে আর্সেনাল বক্সে অ্যান্থনি এলাঙ্গা পেনাল্টি বক্সে পড়ে যাওয়ায় পেনাল্টির দাবি উঠেছিল। কিন্তু রেফারি বা ভিএআর কাউকেই সন্তুষ্ট করতে পারেননি ইউনাইটেড উইঙ্গার। ২৩ মিনিটে দিয়েগো দালোতের শট ক্রসবারে লেগে ফেরায় সমতা ফেরানো হয়নি ইউনাইটেডের। ২৭ মিনিটে হয় চূড়ান্ত নাটক। প্রথম মনে হয়েছিল গোল করেছেন এডি এনকেটিয়াহ। সাকা ও মার্টিন ওডেগার্ড নিজেদের মধ্যে বল দেওয়া-নেওয়া করে ইউনাইটেড রক্ষণের ফাঁকা বের করেছিলেন। সাকার কাছ থেকে বল পেয়ে বল জালে পাঠিয়েছিলেন অরক্ষিত এনকেটিয়াহ। কিন্তু আর্সেনাল উইঙ্গারের অবস্থান দেখে অফ সাইড মনে হওয়ায় ভিএআর তা বাতিল করে দেয়। এরপর ৩২তম মিনিটে স্কোরলাইন ২-০ করে ফেলে আর্সেনাল। ডি-বক্সের বাইরে মার্টিন ওডেগার্ডকে পাস দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন সাকা। তেলেসের চ্যালেঞ্জে তিনি পড়ে যাওয়ার সময় ফিরতি পাস তার পায়ে লেগে বল পেয়ে জালে পাঠান এনকেটিয়া। তবে ভিএআরের সাহায্যে দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে তেলেসের ফাউলের জন্য পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সফল স্পট-কিকে ব্যবধান বাড়ান ইংলিশ উইঙ্গার সাকা। ২ মিনিট পরই ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন রোনালদো। নেমানজা মাতিসের ক্রস থেকে দুই আর্সেনাল ডিফেন্ডারের মাঝেও জায়গা করে নিয়ে গোল করেছিলেন রোনালদো। কিন্তু সে গোল যে শুধু ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তার ১০০তম গোলের রেকর্ডের সান্ত¡না হয়ে থাকবে, সেটা বোঝা যায়নি তখন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে ১০০ গোল করলেন রোনালদো। আগের তিন জন হলেন- ওয়েইন রুনি (১৮৩), রায়ান গিগস (১০৯) ও পল স্কোলস (১০৭)। সব মিলিয়ে ৩৩তম ও পর্তুগালের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন তিনি। ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগে রোনালদোর প্রথম গোলটি ছিল ২০০৩ সালের ১ নভেম্বর, পোর্টসমাউথের বিপক্ষে। প্রিমিয়ার লিগে কোনো খেলোয়াড়ের প্রথম ও শততম গোলের মাঝে সবচেয়ে বড় ব্যবধান এটিই (১৮ বছর ১৭৩ দিন)। আগের রেকর্ড ছিল গিগসের (১৭ বছর ৯১ দিন)। একই সঙ্গে প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে শত গোলের মাইলফলক ছুঁলেন রোনালদো (৩৭ বছর ৭৭ দিন)। এখানে ছাড়িয়ে গেলেন পিটার ক্রাউচকে (৩৬ বছর ২ দিন)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে ফিরতে পারত ইউনাইটেড। ৫৫তম মিনিটে ডি-বক্সে মাতিচের হেড আর্সেনালের তাভারেসের হাতে লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু স্পট-কিকে বল পোস্টে মারেন ফার্নান্দেস। ইউনাইটেড সুযোগ হাতছাড়া করলেও আর্সেনাল ঠিকই কাজে লাগিয়েছে সুযোগ। ৭০তম মিনিটে দর্শনীয় এক গোলে স্কোরলান ৩-১ করেন শাকা। ২৫ গজ দূর থেকে সুইজারল্যান্ডের এই মিডফিল্ডারের বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট চোখের পলকে জালে জড়ান। এতেই শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে গানার্সরা। এই জয়ে ৩৩ ম্যাচে ১৯ জয় ও ৩ ড্রয়ে আর্সেনালের পয়েন্ট ৬০। আর্সেনালের সমান ম্যাচ খেলে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে নেমে গেছে টটেনহ্যাম হটস্পার। ৩৪ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা