মালিকপক্ষ শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন করলেই সাজা হিসেবে জরিমানা ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আইএলও’র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মালিকদের জরিমানা বাড়াতে আইএলওর পরামর্শ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, মালিকদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, তাদের বিচার হচ্ছে, এখানে মালিকদের সাজা বাড়ানোর কথা ঠিক না।
তিনি বলেন, বিষয়টা হচ্ছে, শ্রমিক অধিকার লঙ্ঘন করলে তাদের সাজা বাড়ানোর বিষয়ে আইনে একটা ধারা আছে সেখানে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ছিলো। সেটা এখন ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। হয়তোবা সেটা ২৫ হাজার টাকা করা হতে পারে, তবে সেটা সকল স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ করে, মালিক, শ্রমিক এবং অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ করেই করা হবে।
শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে বিদেশিদের সঙ্গে দর কষাকষির প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কোনো দর কষাকষির মধ্যে নেই। ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন (আইএলও) হচ্ছে সারা বিশ্বের একটি সংগঠন। এখানে সব সময় শ্রমিকদের অধিকার যাতে রক্ষা হয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। সে বিষয়ে সব সময় তাদের বক্তব্য থাকে। তাদের সঙ্গে আমরা আজকে বসেছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমরা এখন শ্রম আইন সংশোধন করছি। এটা সংশোধিত হয়েছিল গত সংসদে। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে যায়, সেখানে পৌঁছানোর পরে দেখা যায় কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি ছিল, যে জন্য এটা আবার ফেরত আনা হয়েছে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, শ্রম আইন যখন প্রণয়ন করা হয়, তখন বিশ্বের প্রাকটিসগুলো আমরা অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছি। সেখানে আইএলওর একটি অংশগ্রহণ থাকে। আপনারা এও জানেন যে, আইএলওয়ের যে গর্ভনিং বডিতে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কিছু দেশ নালিশ করেছিল ২০১৯ সালে।
তারপর আমরা বহুবার আইএলওয়ের গর্ভনিং বডির মিটিংয়ে বলেছি, আমাদের শ্রমিকদের শুধু অধিকার রক্ষাই হয়নি, শ্রমিকদের অধিকার আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রম আইনটাকে সঠিকভাবে সম্পূর্ণভাবে সংশোধন না করছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা স্টেকহোল্ডার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাকে শোনাব।
তিনি বলেন, আজকের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৭ মে আইএলওর পরামর্শ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের টেকনিক্যাল কমিটিতে উপস্থাপন করবে। ১২ মের সভায় শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে আইএলওয়ের বক্তব্য বিষয়ে চূড়ান্ত বক্তব্য রাখব।
আইএলওয়ের পরামর্শ সম্পর্কে তিনি বলেন, আগে ৩০ হাজারের অধিক শ্রম আছে যেসব কারখানায় সেখানে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন বা সংগঠন করতে হলে ২০ শতাংশ সমর্থনের প্রয়োজন হতো। এখন সেটা কমিয়ে সব কারখানার জন্য ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। আমরা তাদের মেনে নিয়েছি। এছাড়া আন্তর্জাতিক মানে সংঘ কিছু সার্বিক পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে সেটা করা হবে।
আইএলও তো ১০ শতাংশ থ্রেসোলের কথা বলেছিল সেটার কী হলো এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, সেটা নিয়ে আজকে কোনো কথা হয়নি। তারা ১৫ শতাংশেই রাজি হয়েছেন। কারণ আমি অত্যন্ত পরিষ্কার ভাবে বলেছি এখন ১৫ শতাংশ হবে। কিন্তু আমাদের উদ্দেশ্য ১০ শতাংশে যাওয়া।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম