জেলা প্রতিনিধি, শেরপুর (শ্রীবরদী) :
শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ের লোকালয়ে বন্যহাতির অব্যাহত তান্ডবে চরম আতংকে রয়েছেন এলাকাবাসী। জীবন বাজি রেখে ফসল রক্ষায় রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন। সব মিলে এলাকার মানুষ হাতি আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
গারো পাহাড়ে কিছুতেই যেন হাতি আতংক কাটছে না। প্রায় প্রতিদিনই বন্যহাতি তান্ডব চালায়। দীর্ঘদিনের মানুষ-হাতিযুদ্ধে মানুষ মারা যাচ্ছে ও পঙ্গু হচ্ছে। সম্প্রতি ১৪ এপ্রিল ঝুলগাও গ্রামের মো. রবিউল ইসলামের ছেলে আ: করিম (২৮) ০১ মে হাতিবর টিলাপাড়া গ্রামের আ: ছমেদ আলীর ছেলে আ: হামিদ (৬০) ফসল রক্ষা করতে গিয়ে হাতির আক্রমণে মারা যান। জীব বৈচিত্র রক্ষা ও জানমাল বাঁচাতে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে স্থানীয়রা জানান।
মালাকোচা গ্রামের আ: বাছিদ (৪০) বলেন, আমরা হাতি আতংকে রাত-দিন নির্ঘম অবস্থায় রয়েছি। খুবই কষ্ট করে ফসল করেছি, কিন্তু হাতি এতে খেয়ে নষ্ট করছে। ফসল রক্ষা করতে গেলে জীবন যাচ্ছে। আমি ৪ একর জমিতে ইরিবোর ধান রোপন করেছি, ধানগুলো কেটে বাড়িতে নিতে পারব কিনা জানিনা? এখন জীবন বাজি রেখে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছি।
হাতিবর টিলা পাড়া গ্রামের মো. মুসলিম হোসেন (৩৫) বলেন, প্রায় প্রতি দিনই আমাদের এলাকায় বন্য হাতি লোকালয়ে নেমে আসছে। এই সময় বন্য হাতি ফসল খাওয়ার জন্য বেশি লোকালয়ে আসে। আমরা ফসল ও জানমাল নিয়ে খুবই দুশ্চিতায় রয়েছি। এটার একটি সমাধান চাই।
ঝুলগাও গ্রামের মিজানুর রহমান (৩০) বলেন, বন্য হাতির দল পাহাড় থেকে লোকালয়ে ধানক্ষেতে এসে পড়ে। কৃষক ধান রক্ষায় এগিয়ে গেলে জীবন দিতে হয়। এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তায় আছি। এত কষ্টের ফসল হাতি নষ্ট করছে। আমরা সরকারের কাছে এর সঠিক সমাধান চাই।
বালিজুড়ীর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, হাতির জন্য অভয়ারণ্য করলে হাতি লোকালয়ে আসবে না। এটা খুবই প্রয়োজন। এছাড়াও বন বিভাগের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইফতেখার ইউনুছ বলেন, উপজেলা প্রশাসন হাতি- মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে মানুষকে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি হাতি তাড়ানোর জন্য তৈল বিতরণ করা হয়েছে। উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনার করে মানুষকে সচেতন করা হয়েছে। আহত, মৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদেরকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতি পূরণ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি