নিজস্ব প্রতিবেদক:
উচ্চ আদালতের বিচারকদের ভাতা বাড়াতে সংসদে দুটি বিল পাস হয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রোববার (২৮ নভেম্বর) সংসদে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ এবং ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিল-২০২১’ পৃথকভাবে পাসের প্রস্তাব করেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তির পর বিল দুটি ভোটে দিলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। উচ্চ আদালতের বিচারকদের বেতন সংক্রান্ত সামরিক আমলের অধ্যাদেশ বাতিল করে বাংলায় নতুন আইন করতে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ পাস হয়। ১৯৭৮ সালের ‘সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস) অর্ডিন্যান্স’ বাতিল করে নত্নু আইন করার জন্য বিলটি পাস হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিচারকদের বেতন ও ভাতা বাড়ান হয়। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি এক লাখ ১০ হাজার টাকা, আপিল বিভাগের বিচারক এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা এবং হাই কোর্ট বিভাগের বিচারক ৯৫ হাজার বেতন পান। এছাড়া বেতনের ৫০ শতাংশ হারে বিশেষ ভাতা পান তারা, যা নতুন আইনেও বলবৎ থাকছে। বিলে প্রধান বিচারপতির ‘নিয়ামক ভাতা’ বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি মাসে ১২ হাজার টাকা হারে এই ভাতা পান। নতুন আইনে তা ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারকরা আগের মতই আট হাজার ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ামক ভাতা পাবেন। আইন আইনে উচ্চ আদালতের একজন বিচারক তার বাসায় একজন বাবুর্চির পরিবর্তে প্রতি মাসে ১৬ হাজার টাকা করে ‘কুক ভাতা’ পাবেন। বর্তমান আইনে একজন বিচারক ‘ডমেস্টিক এইড’ ভাতা পান। নতুন আইনে সেটা রাখা হয়নি। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, বিচারকরা তাদের তাদের ইয়ারমার্কড, স্বতন্ত্র, একক বাসা, বাড়ি বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে একজন করে নিরাপত্তা প্রহরী পদের সুবিধার পরিবর্তে প্রতিমাসে ১৬ হাজার টাকা সিকিউরিটি ভাতা প্রাপ্য হবেন। ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ভ্রমণ ভাতা) বিল’ এর ওপর সংশোধনী প্রম্তাব আনার সময় জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম বিলটি সংশোধনী কমিটিতে না পাঠানোয় আপত্তি জানায়। তিনি বলেন, আমি জানি না। বিচারকরা তাদের ভাতার জন্য এতই চাপ দিয়েছে যে, কমিটিকে বাইপাস করা হল? এতে আইনের ব্যতয় হয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতের একজন বিচারক সুপ্রিম কোর্ট সদরদপ্তরের বাইরে দায়িত্ব পালনকালে দৈনিক চারশ টাকা করে ভাতা পান। তা এক হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, কোনো বিচারক দায়িত্ব পালনে সদর দপ্তরের বাইরে থাকলে ছুটির দিনসহ দৈনিক ১৪০০ টাকা হারে ভাতা পাবেন। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, সড়ক পথে ভ্রমণের জন্য একজন বিচারক প্রতি কিলোমিটারে তিন টাকা ৭৫ পয়সা হারে ভাতা পাবেন। বর্তমানে এই ভাতার হার প্রতি কিলোমিটার এক টাকা। এছাড়া রেলপথ, নৌপথ ও আকাশপথে ভ্রমণের জন্যও বিভিন্ন হারে ভাতার বিধান রাখা হয়েছে। যেক্ষেত্রে ভ্রমণের জন্য একাধিক যাত্রাপথ রয়েছে, সেক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত এবং স্বল্প ব্যয়ের ভ্রমণ ভাতা দাবি করতে হবে। কোনো বিচারক ছুটিতে গেলে, ছুটি থেকে ফিরে এলে কিংবা বিদেশে ছুটি কাটিয়ে আবার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার জন্য ফিরলে, কিংবা অবসরের পর নিজের ঠিকানায় ফেরার সময় কী কী সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাও বলা হয়েছে নতুন আইনে।
# ট্রেনে, লঞ্চে, জাহাজে বা স্টিমারে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ‘উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত’ দুই বার্থের প্রথম শ্রেণির একটি কম্পার্টমেন্ট বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের একটি ক্যুপে কম্পার্টমেন্ট বা প্রথম শ্রেণির কেবিন পাবেন।
# আকাশ পথে ভ্রমণ করলে সেই ভাড়া পাবেন।
# একজন বিচারক তার দায়িত্বে যোগ দেওয়ার সময় ভ্রমণের জন্য স্ত্রী বা স্বামী, সন্তান ছাড়াও তিনজন ব্যক্তিগত পরিচারকের জন্য সর্বনিম্ন হারে সড়ক, রেল বা স্টিমার ভাড়া পাবেন।
আরও পড়ুন
সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ
সাইবার আইনের মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গ্রেপ্তাররা মুক্তি পাচ্ছেন
সাবেক এমপি সুজনের জামিন না মঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ