নিজস্ব প্রতিবেদক:
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের জন্য এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, ট্রলি, অ্যাসফাল্ট প্লান্ট, কম্প্রেরর ট্রলি, হাইড্রোলিক বিম লিফটার, মোটর গার্ডার, রিগ মেশিনের মতো নির্মাণযন্ত্র কেনা হলেও ওসব যন্ত্র পরিচালনার জন্য সংস্থাটির কোনো অপারেটর নেই। সড়ক নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় ৪০০ ট্রাক কেনা হয়েছে। কিন্তু ওসব ট্রাকের জন্য প্রয়োজনীয় চালক নেই। অর্থাৎ জনবলের সংস্থান না রেখেই ৮৫০টি নির্মাণযন্ত্র কিনেছে সওজ। কিন্তু জনবলের অভাবে এখন সংস্থাটি সেগুলো ব্যবহার করতে পারছে না। আবার সওজ’র শীর্ষ ব্যবস্থাপনা কমিটিতে সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় নির্মাণযন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা উঠে এসেছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভারতীয় নমনীয় ঋণে (এলওসি-২) সওজ’র নির্মাণযন্ত্রগুলো কিনতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫৮৫ কোটি টাকা। সেগুলোর মধ্যে ট্রাক, এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, ট্রলি, অ্যাসফাল্ট প্লান্টের মতো ভারী যন্ত্রপাতি যেমন রয়েছে, তেমনি বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ডায়ামিটার, টেস্টার, ট্রান্সডিউসার, রেবার লোকেটর, ডিজিপিএস রিসিভার, হাইড্রোলজি সেন্সরের মতো যন্ত্রও আছে। কিন্তু ওসব যন্ত্রপাতি চালানোর মতো প্রয়োজনীয় জনবল নেই। এমন পরিস্থিতিতে এখন সওজ বলছে, আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিযুক্ত করে নির্মাণযন্ত্রগুলো পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি সওজের যেসব জনবল রয়েছে তাদেরও যন্ত্রপাতিগুলো পরিচালনার জন্য প্রশিক্ষিত করে তোলা হবে।
সূত্র জানায়, সওজ’র জন্য কেনা যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও সংরক্ষণ সমস্যা নিরসনের জন্য সওজের পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ উইংয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি তিনটি পদ্ধতিতে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য যে লোকবল সংকট তা নিরসন করা যেতে পারে মত দিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান প্রকৌশলী। সেগুলো হলো আউটসোর্সিং, ফোর্স অ্যাকাউন্ট ও বিদ্যমান গাড়িচালকদের প্রশিক্ষণ। বর্তমানে প্রচলিত সওজ’রর যন্ত্রপাতি হায়ার চার্জ-এর দর হালনাগাদ করে ওসব যন্ত্রপাতি চালানো যেতে পারে বলে মত দেয়া হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮৫০টি বিভিন্ন ধরনের নির্মাণযন্ত্র কেনা হয়েছে। প্রকল্পটির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ৩৭৫টি ট্রাক কেনা হয়েছে। রেকার কেনা হয়েছে ৫৫টি। হেভি ডিউটি টায়ার ক্রেন কেনা হয়েছে ৭টি। বিটুমিন ডিস্ট্রিবিউটর কেনা হয়েছে ২১টি। কেনা হয়েছে ৬৭টি স্টিল রোলার ও ২৩টি সয়েল কম্পেক্টর। বুলডোজার কেনা হয়েছে ১৯টি। তার মধ্যে ১২টি টায়ার বুলডোজার, ৭টি চেইন বুলডোজার।
এদিকে যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে নির্মাণযন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা মানতে রাজি নন সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও সওজ’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রকল্পটি ডিসেম্বরে শেষ হবে। কিছু সরঞ্জাম এখনো বন্দরে খালাসের অপেক্ষায়। সরঞ্জামগুলো অধিদপ্তরের বিভিন্ন সড়ক বিভাগে পৌঁছে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর নাগাদ সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতিগুলো প্রত্যেকটি সড়ক বিভাগে পৌঁছে দেয়া হবে।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে সওজ’র প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান জানান, নতুন জনবল কাঠামো অনুমোদন হলে কেনা নির্মাণযন্ত্র পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নিযুক্ত করা সম্ভব হবে। আর যতোদিন নতুন জনবল না পাওয়া যাচ্ছে ততোদিন আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে জনবল নিযুক্ত করে ওসব নির্মাণযন্ত্র পরিচালনা করা হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ