কৃষিপণ্য হাটবাজারে বিক্রি করতে ঘুরতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫-৬ কিলোমিটার
জেলা প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল:
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা-মল্লিকবাড়ি সড়কের দাড়িকা বাইদে নির্মাণাধীন একটি ইউ কালভার্ট (ইউড্রেন) অসমাপ্ত থাকায় এবং একই সড়কের নেওরার খালে একটি বক্স কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সখীপুর ও ভালুকা উপজেলার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। উৎপাদিত কৃষিপণ্য উপজেলা বিভিন্ন হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করতে তাঁদের ঘুরতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫-৬ কিলোমিটার।
এলজিইডি প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আইআরআইডিপি-৩ (ইমপোর্টাল রুরাল ইনফ্রাসট্রাকচার ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট অন প্রাইওরিটি) প্রকল্পের আওতায় ওই সড়কের ১ কি. ৪১০ মিটার পাকাকরণের কাজ গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এমপি উদ্বোধন করেন। মেসার্স নাহিদ এন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছে। প্রায় ৬০-৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয় বড়চওনা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নূরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, এই এলাকায় এখন মৌসুমী ফলের বেচাকেনার ভরা মৌসুম। তিনি আরও বলেন, দুইটি কালভার্টের কারনে সখীপুরের উত্তরাঞ্চলের আম, কাঁঠাল নিয়ে বর্ষাকালে এলাকার মানুষ চরম দুভোর্গের শিকার হচ্ছেন। হাটবাজারে নিয়ে বিক্রি করতে তাঁদের ঘুরতে হচ্ছে অতিরিক্ত ৫-৬ কিলোমিটার। বড়চওনা, কুতুবপুর, দাড়িপাকা, শুকনারসিট, বানিয়ারছিট, দেবরাজ, খালিয়ারবাইদ, চারিবাইদা, বিন্নরীপাড়া, নামদারপুর ও মাচিয়া গ্রামের লোকজন চলাচল করে। দেবরাজ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি তারা মিয়া বলেন, ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ি, সিটাল, আউলিয়ারচালা, কাকের মোড়, সোনাখালি, দৌলা, নয়াপাড়া, মহিষগাড়া গ্রামের লোকজন চলাচল করে থাকে। দাড়িপাকা গ্রামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন বলেন, দুইটি কালভার্টের কারনে দুই উপজেলার অন্তত ১৮ থেকে ২০টি গ্রামের মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় শিক্ষক জামাল হোসেন, অটোভ্যানচালক সিদ্দিক হোসেন বলেন, একটি কালভার্টের কাজ অসমাপ্ত থাকায় এবং ঠিকাদার বিকল্প রাস্তা তৈরি না করায় সড়কে হেঁটেও যাতায়াত করা যাচ্ছেনা। ওই সড়কের নেওরার খালে একটি বক্স কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিনেও ভেঙ্গে যাওয়া কালভার্টটি সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় এর ওপর দিয়ে যানবাহনসহ চলাচলে মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি কালভার্ট। তারা আরও জানান, নির্মাণাধীন কালভার্টটি প্রায় ৪-৫ মাস ধরে ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল ঠিকাদার কাজটি অন্য একটি ঠিকাদারের কাজে হস্তান্তর করেছেন। এ ব্যাপারে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আলম বিল্ডার্সের স্বত্বাধিকারী মাহবুব আলম বলেন, শ্রমিক সংকটের কারনে কাজটি সময়মত শেষ করা হয়নি, এবং দ্রুত কাজটি শেষ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এলজিইডি প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজটি শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানই দাড়িকা বাইদে ইউ কালভার্টের (ইউড্রেন) নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। একই সড়কের নেওরার খালের ভেঙ্গে যাওয়া বক্স কালভার্টটি জিওবি (গভর্নমেন্ট অব বাংলাদেশ) সংস্কার কর্মসূচিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বরাদ্দ এলে নির্মান কাজ শুরু হবে এবং এলাকাবাসীর দুর্ভোগ কমবে।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি