নিজস্ব প্রতিবেদক:
সচেতনতার অভাবে দেশে বহুমুখী সাইবার অপরাধ বেড়েই চলেছে। আর তাতে ভুক্তভোগীর বেশির ভাগই উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী। বেশির ভাগ মামলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও প্রচারের অভিযোগে করা। তাছাড়া বিভিন্ন পর্নো সাইটে আপত্তিকর ভিডিও আপলোডের ঘটনাও রয়েছে। প্রেম, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের সুযোগে ধারণ করা আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুক, ইউটিউব ও বিভিন্ন পর্নোসাইটে ছেড়ে দেয়ার ঘটনা বেশি ঘটছে। আর ওসব ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে যতোটা মামলা হচ্ছে, তার চেয়ে বেশি হচ্ছে সাধারণ ডায়েরি (জিডি)। কারণ ভুক্তভোগীরা সামাজিক ও পারিবারিক কারণে মামলা নিয়ে বেশি দূর এগোতে চায় না। সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ডিবির সাইবারে আসা গত বছর ১৭১টি মামলার ২৯ দশমিক ২৩ শতাংশ অনলাইনে কেনাকাটায়, ২১ দশমিক ৫ শতাংশ অপপ্রচারের, ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ পর্নোগ্রাফি মামলা ও ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মামলা। তার আগে ২০২১ সালে ডিবি সাইবারে ২০৬টি মামলা আসে। তাার মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ২৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ, ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ অপপ্রচারের, ১৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ অনলাইন কেনাকাটায়, ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল পর্নোগ্রাফি মামলা। মূলত সচেতনতার অভাবে ওসব অপরাধ বাড়ছে।
সূত্র জানায়, সাইবার অপরাধ দমনে গঠন করা হচ্ছে পুলিশের বিশেষ ইউনিট সাইবার পুলিশ ইউনিট। ইতোমধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ওই ইউনিট গঠনের প্রস্তাবটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই ইউনিটটি গঠন করার জন্য ২ হাজার ১২১ জনবলের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। একজন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তা সাইবার ইউনিটের প্রধান হবেন। আর ইউনিটের হেড অফিস হবে ঢাকায়। তবে দেশের প্রতিটি জেলায় সাইবার ইউনিটের সাব অফিস থাকবে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) আদলে শিগগিরই ওই ইউনিটের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যে সাইবার অপরাধ দমনে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগকে দুটি (উত্তরা ও দক্ষিণ) ভাগে ভাগ করা হয়েছে। তাদের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে।
এদিকে সাইবার অপরাধ থেকে দূরে থাকার বিষয়ে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, সাইবার অপরাধ থেকে বাঁচতে হলে সাইবার স্পেসে অপরিচিত কোনো আইডি থেকে পাঠানো কোনো লিংকে প্রবেশ না করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপরিচিত কোনো আইডির সঙ্গে বন্ধুত্ব না করা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যথাযথ সিকিউরিটি সেটিংস ব্যবহার করা, ম্যাসেঞ্জারে স্পর্শকাতর তথ্য, ছবি বা ভিডিও শেয়ার না করা। পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে আকর্ষণীয় ফেসবুক আইডি রিকোয়েস্ট গ্রহণ না করা, অবৈধভাবে চাকরি, বদলি বা বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকার লেনদেন না করা এবং বাইরের চাকচিক্য দেখে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব না করাই ভালো। একটু সচেতন হলেই ওসব সাইবার অপরাধ থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ