নিজস্ব প্রতিবেদক:
সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে প্রতি বছর গড়ে ৮০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছে। প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সঙ্গে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে পঙ্গুত্বের শিকার মানুষের সংখ্যা। বিজ্ঞজনদের মতে, সড়ককে নিরাপদ করতে হলে জাতিসংঘ প্রণীত গাইডলাইন বাস্তবায়ন করতে হবে। সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ, নিরাপদ যানবাহন নিশ্চিত করা, ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সড়কে দুর্ঘটনা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং চালকদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাস্থ্য খাত এবং বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা যাত্রী কল্যণ সমিতির তথ্যনুযায়ী প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এর মধ্যে ১৭ বছরের কম বয়সি শিশু ১২ হাজারের বেশি। এই হিসাবে দেখা যায়, প্রতিদিন গড়ে ২২০ জন মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছেন কেবল সড়ক দুর্ঘটনায়। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশে মারা যায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন। সংস্থাটির তথ্য মতে হতাহতদের ৬৭ শতাংশই ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সি। এ ক্ষেত্রে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি।
সংস্থাটি দাবি করছে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাজনিত জিডিপির ক্ষতি ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনা বাংলাদেশে উদ্বেগজনক জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে সামনে চলে এসেছে। সড়ককে নিরাপদ করতে হলে বিভিন্ন মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা দরকার। ঢাকার রাস্তায় শৃঙ্খলা আনাটা আগে জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১৬ সালে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারায় ও পঙ্গত্ব বরণ করে ৩ লাখেরও বেশি মানুষ। সড়কে মৃত্যুর এই মিছিল বন্ধ করতে হলে শক্তিশালী সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন দরকার।
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সড়কে মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে হলে সড়ককে নিরাপদ করতে হবে। এজন্য জাতিসংঘ নির্ধারিত নিরাপত্তা কৌশল অনুসরণ করে শক্তিশালী সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা জরুরি। দেশের কর্মক্ষম ব্যক্তিরাই সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এর প্রভাব পড়ছে জাতীয় অর্থনীতিতে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তি এবং তাদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে প্রয়োজন ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও বেপরোয়া গতির নিয়ন্ত্রণ।
চালকদের অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা এবং চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল সড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। এ ছাড়া তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা এবং দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসহ বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজির বিষয়গুলোকেও দায়ি।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি