April 26, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 30th, 2022, 10:51 am

সদলবলে কার্যালয়ে ঢুকে উপাচার্যকে শাসালেন ইলিয়াস

কুবি প্রতিনিধি:

জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন অতিথির সাথে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক চলাকালে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্যের কার্যালয়ে সদলবলে ঢুকে উপাচার্যকে শাসালেন শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ। এসময় একই কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ বেশকিছু নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি না দেয়া হলে সন্ধ্যায় সভা ডেকে তার কর্মীবাহিনীকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়ার হুমকিও দেন ১৫ বছর ধরে ক্যাম্পাসে অবস্থান করা এই নেতা।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।

এর আগেও ইলিয়াস বিভিন্ন সময় তার স্ত্রী এবং নেতাকর্মীদের চাকরিসহ বিভিন্ন টেন্ডারের জন্য উপাচার্যের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছেন। গত ৩১ মার্চ একই কারণে তার কর্মীবাহিনী নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের গাড়ি আটকে রাখেন এবং উপাচার্যকে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক কথা বলেন।

মঙ্গলবার ঘটনা চলাকালীন উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান করা বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, নানা দাবি নিয়ে দুইবার সেখানে প্রবেশ করেন ইলিয়াস ও তার নেতাকর্মীরা৷ এই সময় বর্তমান শাখা ছাত্রলীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ, সহ-সভাপতি হাসান বিদ্যুৎ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসেনসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বিভিন্ন পদে চাকরিতে নিয়োগ দেয়ার জন্য তিনি চাপ প্রয়োগ করেন।

এক পর্যায়ে তিনি ও হাসান বিদ্যুৎ উপাচার্যের সাথে উঁচুগলায় বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পাশ থেকে যুক্ত হন দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সালমান চৌধুরী।

এসময় ইলিয়াস উপাচার্যকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছে বলে হুমকি দেন এবং বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে করতে পারবো না আমরা?’

‘আপনার কারণে চাকরি না পেয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। তাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ তারা চাকরি পাচ্ছে না।’

সূত্র জানায়, এসময় উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবেদন করে, পরীক্ষার মাধ্যমে পাস করে মেধার প্রমাণ দিতে পারলে চাকরি পাবে বলে তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেন। তবে, ইলিয়াস তার হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখেন৷

একপর্যায়ে সন্ধ্যায় সব হলে জরুরি সভা ডেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপাচার্যের বিরুদ্ধে উস্কে দেয়ার হুমকিও দেন।

এই ঘটনা চলাকালীন উপাচার্যের কার্যালয়ে চলা মতবিনিময় সভায় ছিলেন, কুমিল্লা জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন শিক্ষক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক৷

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, এই উপাচার্য স্যার ছাত্রলীগকে সুবিধা দিতে চান না। উনি নীতিনৈতিকতার কথা বলেন অথচ শিক্ষক নিয়োগেই উনি নির্দিষ্ট কয়েকজনকে নিয়োগের জন্য সার্কুলারে বিশেষ শর্ত দিয়ে দিয়েছেন। ছাত্রলীগের থেকে কথা বলতে গেলেই ওনার সমস্যা।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে, অবৈধভাবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাহলে আমি চাকরি দিবো না। বিশ্ববিদ্যালয় মেধার জায়গা, মেধার ভিত্তিতে যোগ্যরা চাকরি পাবে। এটা অনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তার করার জায়গা না। তাদের এসব দাবি অযৌক্তিক।’

বিশেষ শর্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ইউজিসির নির্দেশনাতেই অধিকতর যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থী অগ্রাধিকারের বিষয়ে বলা আছে। আমরা এখানে রিসার্চ, পিএইচডি, টিচিং এক্সপেরিয়েন্সের মতো অধিকতর যোগ্যতার বিষয়গুলোর উল্লেখ করেছি, যা ইউজিসির নিয়মের মধ্যে থেকেই করা হয়েছে।