April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, October 10th, 2021, 9:13 pm

সব সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে: ইসি মাহবুব

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গত ৫০ বছরে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নিয়াগে আইন প্রণয়ন বাধ্যতামূলক হলেও সব সরকার তা লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। রোববার (১০ অক্টোবর) বিকালে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে লিখিত বক্তব্যে একথা বলে এ নির্বাচন কমিশনার। সংবিধানে ইসি নিয়োগের আইন প্রনয়ণের কথা বলা হয়েছে। সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। গত দুবার নিবন্ধিত অনেক দলের সঙ্গে সংলাপ করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি নিয়োগ করা হয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে নতুন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা সরব রাজনৈতিক মহলে। এমন পরিস্থিতিতে গেলবার ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া ৫ সদস্যের ইসির মধ্যে একজন মাহবুব তালুকদার নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিভিন্নজনের তর্ক-বিতর্ক এখন তুঙ্গে। গত ৫০ বছরে ইসি নিয়োগে আইন প্রণয়ন করা হয়নি। এটা বাধ্যতামূলক হলেও সব ক্ষমতাসীন সরকার এটা লঙ্ঘন করেছে। সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা থাকলে এই আইন করা অনস্বীকার্য বলে উল্লেখ করেন তিনি। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সব দলের সমঝাঝোতা ছাড়া এহেন আইন করা অসম্ভব। তবে আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়। আইন প্রণয়ন নির্বাচনের অন্যতম বা প্রধান সোপান হলেও অবশ্যই তা সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। সমঝোতা না হলে অরাজকতার আশঙ্কার কথা তুলে ধরে মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সমঝোতা না হলে দেশব্যাপী অরাজকতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা করি, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।
নির্বাচনে এখন কিছু জটিল অসুখ
চলমান স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে বিমুখিতা, ভোট পড়ার হার ও নানা বিষয়ে নানা রূপক বক্তব্য তুলে ধরেন এ নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, একটি রূপক বক্তব্য দিয়ে আরম্ভ করতে চাই। নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী’ গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্রহীন নির্বাচন চাই কি না! তিনি জানান, ৭ অক্টোবর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের উপ নির্বাচনে ভোপ পড়ে ২০ শতাংশ। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের উপনির্বাচনে ইভিএমে ৭০ শতাংশ ভোট পড়ে। এ নির্বাচন কমিশনার জানান, চট্টগ্রাম নগরের ১৬নং চকবাজার ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে জামানত হারিয়েও একজন প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। স্বভাবতই ঐ নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থীর সকলেই জামানত হারিয়েছেন। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, যা বিশ্বে নজির বিহীন। আমার মতে এতে নির্বাচনে একটা নতুন ধারা সূচিত হলো। … এই উপনির্বাচনের ফলাফল নির্বাচনের প্রতি জনগণের অনাস্থার বহিপ্রকাশ বলা হলেও ইতিবাচকভাবে বলা যায়, সমাজের কল শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিগণ এখন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং জনসমর্থন না থাকলেও জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হচ্ছেন। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পরেও ‘যদি অন্ধকার ঘরে একটি কালো বিড়ালের মতো’ গণতন্ত্রকে খুঁজে ফেরার চেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে- মন্তব্য করেন তিনি।