প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রূপকল্প ২০৩০ ও রূপকল্প ২০৪১-এর আধুনিকীকরণ পরিকল্পনা অনুযায়ী সমুদ্রে নীল অর্থনীতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কোস্টগার্ডের জন্য জাহাজ, সরঞ্জাম ও জনবল বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
সোমবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘গভীর সমুদ্রে টহল দেয়ার জন্য আরও চারটি ওপিভি, ৯টি প্রতিস্থাপনকারী জাহাজ, দুটি মেরিটাইম সংস্করণ হেলিকপ্টার সংগ্রহের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।’
বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুব শিগগিরই এই বাহিনীতে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, মেরিটাইম সার্ভিলেন্স সিস্টেম, হোভারক্রাফট এবং হাইস্পিড বোট যুক্ত হতে যাচ্ছে।
তিনি উল্লেখ করেন, গভীর সাগরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত কোস্টগার্ডকে দক্ষ ও শক্তিশালী করতে দেশের উপকূলীয় ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোস্টগার্ড স্টেশন ও ফাঁড়িতে কোস্টাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেন্টারসহ বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন আকারের জাহাজ তৈরি করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কোস্টগার্ড এলাকায় আবাসন, ব্যারাক ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
বিসিজি বেস অগ্রযাত্রা’ নামে পটুয়াখালীতে নিজস্ব প্রশিক্ষণ ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে কোস্টগার্ডের জনবলের প্রশিক্ষণ সক্ষমতাও বাড়ানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য অভ্যন্তরীণ টহল জাহাজ, ভাসমান ক্রেন, টাগ বোট এবং বিভিন্ন ধরনের হাইস্পিড বোট তৈরি করা হয়েছে।
‘সম্প্রতি বাহিনীটির জন্য যুদ্ধের ইউনিফর্ম চালু করা হয়েছে, যা আমার বিশ্বাস সকল সদস্যদের মনোবল বাড়াতে সাহায্য করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, এই বাহিনীর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় সামুদ্রিক সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কোস্টগার্ড বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এই বাহিনীর মূলমন্ত্র হলো ‘গার্ডিয়ানস অ্যাট দ্য সি’। এর অর্থ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় জনগণের প্রকৃত বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ইতোমধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকার নিরীহ-নিপীড়িত মানুষের কাছে অন্যায় ও অপকর্ম প্রতিরোধ করে নিজেদেরকে প্রকৃত বন্ধু হিসেবে দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য এখন দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিষ্ঠ।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ঝুঁকির মধ্যেই কোস্টগার্ড সদস্যরা দেশের স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, এই বাহিনী সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান, মানব পাচার, অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা, সমুদ্র ও নদী দূষণ ও জলদস্যুতা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ড সদস্যদের সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে কোস্টগার্ডের কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
তিনি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন এবং একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২