April 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, November 19th, 2021, 8:51 pm

সম অধিকার রক্ষায় পুরুষ নির্যাতন রোধ করার আহ্বান পুরুষ দিবসে

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সামনে আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবসে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও মানববন্ধন করে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন।

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারী-পুরুষ উভয়ের প্রয়োজন ও গুরুত্ব রয়েছে। তবে এ দুইয়ের মধ্যে বৈষম্যও রয়েছে। দেশে নারী নির্যাতন দমন ও অধিকার নিশ্চিতের আইন থাকলেও পুরুষ নির্যাতন দমনে কোনো আইন নেই। অথচ ঢালাওভাবে বলা হয়ে থাকে নারী-পুরুষ সমান অধিকার। সে জন্য নারী-পুরুষের আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়ন এবং নারী ও পুরুষ উভয়ের লৈঙ্গিক সমতা নিশ্চিত করার সময় এসেছে। সেই সঙ্গে নারী-পুরুষের মধ্যে বৈষম্য দূর, অধিকার, সম্মান এবং আইনের সমতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হয়েছে। শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত ‘নারী ও পুরুষের মধ্যে সুষম ও উন্নত সম্পর্ক তৈরিতে করনীয়’ শীর্ষক আলোচনা নভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘বিশ্ব পুরুষ দিবস’ উপলক্ষে সেমিনারের এ আয়োজন করে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন। এর আগে, ১৯ নভেস্বর বিশ্ব পুরুষ দিব ‘ উপলক্ষে শুক্রবার সম অধিকার রক্ষায় পুরুষ নির্যাতন রোধ করার আহ্বান পুরুষ দিবসে সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ডিআরইউর সামনে জড়ো হয়ে বেলুন উড়িয়ে দিবসের শুভ উদ্বোধন করা হয়। এরপর সাড়ে ১০ টার দিকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি ঢাকার বিভিন্ন সদক প্রদিক্ষণ করে। সেমিনারে বক্তারা বলেন, আমরা বর্তমানে এমন একটি পরিস্থিতে রয়েছি, যেখানে সবাই নারী নির্যাতনের বিষয়ে কথা বলে, তাদের অধিকারের কথা বলে। কিন্তু পুরুষ নির্যাতন নিয়ে কেউ কথা বলতে চায় না। আমাদের সমাজে শুধু নারীই নির্যাতনের শিকার হয় তা নয়, পুরুষও নারীদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কোনো নারী মিথ্যা মামলা (ধর্ষণ, নির্যাতন) করলে পুলিশ অভিযুক্ত পুরুষকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়৷ কিন্তু এসব নারীর নির্যাতনের শিকার হয়ে পুরষদের সর্বস্ব নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে, সেটি রোধে কোনো আইন নেই। তবে নির্যাতনের মানসিকতা নারী সমাজে খুব কমই রয়েছে। কিন্তু মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে দেশে বেশিরভাগ ধর্ষণ মামলাই করা হচ্ছে। এর প্রতিকার করতেই পুরুষ নির্যাতন দমন আইন প্রয়োজন। সেমিনিারে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. লিটন মিয়া বলেন, যদিও আমাদের সংবিধানে বলা হয়েছে আইন অনুয়ায়ী সবাই সমান। কিন্তু বাস্তবে এর মিল নাই। আমরা কোর্ট-কাচারিতে অনেক সময় দেখি বিভিন্ন মামলায় পুরুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, কিন্তু তার প্রতিকারের কোনো উপায় নেই। আসলে পুরুষ নির্যাতন দমনের কোনো আইন নেই। বর্তমানে পুরুষ অধিকার রক্ষা ও নির্যাতন দমন আইন করা প্রয়োজন। এটা সময়ের দাবি। এই আইন তৈরি হলে নারী-পুরুষের মধ্যে অনেক বৈষম্য দূর হবে। সেমিনারে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের যুগ্ম আহ্বায়ক এম রহমান বলেন, নারীবাদ আজ যে জায়গা করে নিয়েছে, সেই নারীবাদ একদিনে জায়গা করে নেয়নি। যে নারীবাদের আক্রমণ আমরা অনুভব করি, তা একদিনে বিলীন করা সম্ভব নয়। তাই পুরুষরা এখন ঝুঁকির মুখে আছে। সবাই কথা বলে সমান অধিকারের। কিন্তু সেটি কি আছে? বর্তমানে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ হচ্ছে, কিন্তু সেখানে কয়জন নারী শ্রমিক কাজ করছে? আমরাও সমান অধিকার চাই। নির্মাণ কাজে সমান নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করুক। কিন্তু সবাই মুখে বলে সমান অধিকার, আর বাস্তবে অগ্রাধিকার। সমাজে সমান অধিকারের নামে গোলামির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আপনি গোলামি মানতে না চাইলে আপনার বউ থাকবে না। কিনি বলেন, তাই সমাজে সমঅধিকার বাস্তবায়ন করতে এবং পুরুষদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আইন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, প্রতিনিয়ত পুরুষরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু তাদের বিচার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সমাজে উভয়ের সম্মতিতে নারী-পুরুষ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছেন, কিন্তু মামলা হচ্ছে পুরুষটির বিরুদ্ধে। তাকে ধর্ষক বানানো হচ্ছে। যদি নারী-পুরুষের সম অধিকার হয়ে থাকে, তবে অপরাধের শাস্তিও সমান হওয়া দরকার। যারা সম্মতিতে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছেন সেখানে নারী-পুরুষ উভয়ে দোষী। যদি শাস্তি দিতে হয় তবে দুজনকেই দেওয়া হোক। কিন্তু তা না করে শুধু পুরুষকেই দোষারপ করা হচ্ছে, শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, শারীরিক সম্পর্কের পর বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা দেওয়া হচ্ছে। আর যদি বিয়ে করতে চায় তবে ২০ লাখ টাকা দেনমোহর দাবি করছে৷ এতেও যদি পুরুষটি মেনে বিয়ে করেন তবে ১৫ দিন পর ওই নারী বলছে মিল হচ্ছে না আমি তালাক চাই৷ সব দিকেই পুরুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এরজন্য নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করে পুরুষ অধিকার রক্ষায় আইন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহাম্মেদ, ফাউন্ডেশনের আইন উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাওসার হোসেন, নারী আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান প্রমুখ।