নিজস্ব প্রতিবেদক :
বেসরকারি আইসিডির পরিবর্তে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। পোশাক শিল্পকে অতিরিক্ত খরচের কবল থেকে রক্ষা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বিজিএমইএ। মঙ্গলবার (১৭ আগষ্ট) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম. শাহজাহান এর সাথে তার চট্টগ্রাম কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান তাকে এ আনুরোধ জানান। পোশাক শিল্পে রপ্তানি ও আমদানি পণ্যের জাহাজীকরণ নির্বিঘœ ও সময়সাশ্রয়ী করার জন্য বিজিএমইএ গৃহীত উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথে এ সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বিশ্বের নানা দেশ থেকে আমদানি করা কাঁচামালবাহী কন্টেইনার বন্দরের ইয়ার্ড থেকে খালাস করতে পোশাক মালিকদের পূর্বে সময় লাগতো দুই দিন। বর্তমানে বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে সেই কন্টেইনার খালাস করতে সময় লাগছে ৬ থেকে ৭ দিন। পণ্য খালাসের বিলম্বের কারণে পোশাক উদ্যোক্তাদেরকে আর্থিক মাশুল দিতে হচ্ছে। আবার বেসরকারি আইসিডি’তে প্রতি কন্টেইনারের জন্য যে পরিমাণ অর্থ আদায় করা হচ্ছে, তার বন্দরের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন যে, আসন্ন মাসগুলোতে পোশাক রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তারা আশা করছেন। তিনি এই বিষয়টিকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বন্দরের সামর্থ্য বৃদ্ধির বিষয়ে একটি যথাযথ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, পোশাক শিল্প যখন কোভিড-১৯ মাহামারির প্রভাব কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রামে লিপ্ত। তখন চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য খালাসে এই অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ ও বাড়তি চার্জ আদায় শিল্পের স্বাভাবিক গতিকে ব্যাহত করছে। বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিকালীন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার প্রেক্ষিতে আর্ন্তজাতিক বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুততার সাথে করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এম. শাহজাহান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পোশাক শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম দ্রুততার সাথে সম্পাদন করছে। বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন তিনি। এ লক্ষ্যে বিজিএমইএ-সহ সকল স্টেক-হোল্ডারদের সহযোগিতা কামনা করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, পরিচালক তানভীর আহমেদ, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, হারুন অর রশিদ, নাভিদুল হক, রাজীব চৌধুরী, মো. ইমরানুর রহমান, মো. এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, মোহাম্মদ আবদুস সালাম, তানভির হাবিব, এ এম শফিউল করিম (খোকন), মো. হাসান (জ্যাকি), এম এহসানুল হক, মোহাম্মদ মিরাজ-ই-মোস্তফা (কায়সার), সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও মঈন উদ্দিন আহমেদ (মিন্টু), সাবেক পরিচালক ও কাস্টমস (সমুদ্র) বিষয়ক বিজিএমইএ’র স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অঞ্জন শেখর দাশ, সাবেক পরিচালক ও কাস্টম (বন্ড) বিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম, সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, সচিব মো. ওমর ফারুক, পরিচালক পরিবহন এনামুল করিম, টার্মিনাল ম্যানেজার মো. কুদরত-ই-খুদা মিল্লাত প্রমুখ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশে চিংড়ির রফতানি পরিমাণ কমছে ধারাবাহিকভাবে
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি