অনলাইন ডেস্ক :
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে সর্দি-জ্বরের মত ‘সবাই’ আক্রান্ত হবেন বলে মনে করছেন ভারতের একজন মহামারীবিদ; তিনি বলছেন, ৮০ শতাংশ মানুষ হয়ত জানতেও পারবেন না কখন তিনি সংক্রমিত হয়েছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউ অব এপিডেমিওলজির চেয়ারপার্সন ড. জয়প্রকাশ মৌলিল এনডিটিভিকে এক সাক্ষাৎকারে এমন মত প্রকাশ করেছেন। কোভিড এখন আর ‘ভয়ঙ্কর কোনো রোগ নয়’ মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, “আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি ভাইরাস মোকাবিলা করছি। এটা ডেল্টার চেয়ে অনেক মৃদু। শুধু তাই নয়, আপনার সবাই যেমনটা জানেন, এটা আসলে অপ্রতিরোধ্য। ওমিক্রন এর উপসর্গ সাধারণ ঠান্ডা লাগার মতো জানিয়ে সংক্রমিতদের হাসপাতালে ভর্তির হার অনেক কম থাকার বিষয়টি সামনে আনছেন ড. মৌলিল। টিকার বুস্টার ডোজেও এর সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা কোনো পার্থক্য তৈরি করবে না, সবাই সংক্রমিত হবে। নির্বিশেষে সারা বিশ্বেই সেটা ঘটছে। ভারত সরকারের শীর্ষ এই মহামারীবিদ বলেন, “আমাদের বড় একটি অংশ জানবেনও না, যে সংক্রমিত হয়েছেন। এমনকি সম্ভবত আমাদের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ টেরও পাবেন না কখন এটা হয়েছে। তিনি মনে করেন, কোভিড আক্রান্ত হয়ে শরীরে গড়ে ওঠা স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আজীবন থেকে যেতে পারে। যে কারণে অন্যান্য দেশের মতো ভারতের অবস্থা খুব বেশি খারাপ হয়ে ওঠেনি। জয়প্রকাশ মৌলিলের বিশ্বাস, টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার আগেই ভারতের ৮৫ শতাংশ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের ইতোমধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠায় টিকার প্রথম ডোজই বুস্টার ডোজের মতো কাজ করছে। সারা বিশ্বেই প্রচলিত একটি ধারণা আছে যে, টিকা দেওয়ার আগে সংক্রমিত হওয়ার মাধ্যমে গড়ে ওঠা স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এখন আমি সে ধারণাকে ভুল মনে করি। কোনো চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার বা তৃতীয় ডোজের পরামর্শ ‘দেয়নি’ মন্তব্য করে এই মহামারীবিদ বলেন, বুস্টার ডোজ দিয়ে মহামারীর স্বাভাবিক গতিকে থামানো যাবে না। কোভিড রোগীর সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষার বিষয়েও দ্বিমত প্রকাশ করেন এই বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, দুই দিনের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণ দ্বিগুণ হয়ে উঠছে, পরীক্ষার আগেই আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক মানুষকে সংক্রমিত করছে। তাই আপনি যখন পরীক্ষা করছেন, তখন আপনি অনেক অনেক দূর পিছিয়ে আছেন। মহামারীর ক্রমবিকাশের পথে এটা কোনো ব্যবধান তৈরি করবে না। আমরা সরকারের কোনো কর্তৃপক্ষই বুস্টার ডোজের পরামর্শ দিইনি। আমার জানাম তে, সতর্কতা হিসেবে এক ডোজের পরামর্শ এসেছে, কারণ সুনির্দিষ্ট কিছু মানুষ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৬০ বছরে বেশি বয়সীদের দুই ডোজে সাড়া মেলেনি। ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরই কেবল একাধিক রোগের উপসর্গ থাকবে এবং ৪০ এর বেশি বয়সীদের থাকবে না, এমনটা কেন মনে করা হচ্ছে এবং তাদের কেন তৃতীয় ডোজ দেওয়া হচ্ছে না সে বিষয়ে জানতে চেয়েছিল এনডিটিভি। জবাবে ভারত সরকারের শীর্ষ এই উপদেষ্টা বলেন, যাদের ক্ষেত্রে ‘রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সাড়া দিচ্ছে না’ তাদেরই কেবল সতর্কতা হিসেবে টিকার আরেকটি ডোজ দেওয়া হচ্ছে। কারণ আপনার হয়তো হৃদরোগ কিংবা ডায়াবেটিস আছে, তার মানে এই নয় রোগ প্রতিরোধে আপনি অক্ষম। কারো হয়তো কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হয়েছে, সেক্ষেত্রে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অনেকটাই অবনতি হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
গাজায় গত একদিনে নিহত ৫২