অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের সংবাদকর্মীদের কাছে ভারতীয় সংবাদকর্মীদের একটিই জিজ্ঞাসা, “সাকিবের কী খবর? অনুশীলনে এসেছে?” বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে সবার চোখ খুঁজছিল একজনকেই। ঢাউস লেন্স হাতে ক্যামেরাপার্সনরাও খুঁজছিলেন, “সাকিব কোথায়?” অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে ড্রেসিংরুম থেকে বের হলেন কাক্সিক্ষত সেই চরিত্র। মাঠে নেমে কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে কথা বললেন অনেকক্ষণ। সাকিবকে নিয়ে কলকাতায় আগ্রহ এমনিতেও থাকার কথা। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তারকা বলেই নয়, আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সেও তো তিনি অনেকটা ঘরের ছেলে। তবে সেসবই শুধু নয়, তাকে নিয়ে বাড়তি আরও কৌতূহলের কারণ প্রায় সবার জানা।
ছোট্ট ছুটিতে তার দেশে যাওয়ার ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে তুমুল। দলের অভিজ্ঞ ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদ যদিও সমালোচনার কারণই দেখছেন না এখানে। দেশে ফিরে ব্যাটিং নিয়ে শৈশবের কোচের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে কলকাতায় ফিরেছেন সাকিব। তার এই তাড়নায় প্রশংসা যেমন অনেকে করছেন, তেমনি বিশ্বকাপের মধ্যে দলকে রেখে অধিনায়কের এভাবে চলে যাওয়া ঠিক হয়েছে কি না, এই প্রশ্নও উঠছে। নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে ম্যাচের আগে বাংলাদেশের সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় এক সংবাদকর্মী সেই প্রশ্নটি তুললেন। দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা তাসকিনের সাফ কথা, তারা বরং এটির প্রশংসাই করছেন। “আসলে এটা (তার অনুপস্থিতি) খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।
তিনি যখন ফিরে এসেছেন, আমরা দলের সবাই খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। আসলে তিনি নিজের কিছু উন্নতির জন্য গিয়েছিলেন। ব্যাটিং প্রত্যাশা অনুযায়ী ভালো হচ্ছিল না, এজন্য নির্দিষ্ট কিছু অনুশীলনের জন্য গিয়েছিলেন, যেন দলের জন্য ভালো কিছু করতে পারেন। আমি মনে করি, আমাদের এটাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত।” “তিনি আমাদের ম্যানেজমেন্ট, বিসিবির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারপর গিয়েছেন। সেদিন আমাদের বিশ্রামের দিন ছিল। অফিসিয়াল অনুশীলনে তিনি কিন্তু দলের সঙ্গেই আছেন। আমি মনে করি আমাদের এটাকে আরো অ্যাপ্রিশিয়েট করা উচিত। আমাদের কোনো সমস্যা নেই, আমাদের মধ্যে তেমন কোনো প্রভাবও ফেলেনি।” তবে খুব যৌক্তিক একটি সম্পূরক প্রশ্নও উঠে যায়, সাকিব বা অধিনায়ক না হয়ে দলের অন্য কেউ বা তরুণ কেউ যদি এভাবে বিশ্বকাপের মধ্যে ছুটি নিয়ে দেশে ফিরে নিজের কোচের সঙ্গে কাজ করতে চান, তাহলে কি তাকে সেই অনুমতি দেওয়া হবে? তাসকিন এটার সরাসরি উত্তর দিলেন না।
তবে আরও একবার বললেন যে, ক্রিকেটাররা এটিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখছেন। সাকিব ফেরার পর দলের সবাই মিলে আনন্দময় সময় কাটিয়েছেন বলেও জানালেন তিনি। “টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন যে, তার ব্যাটিং নিয়ে একটা কিছু অনুশীলন করা দরকার। সেই দিনটা বিশ্রামের দিনও ছিল। কলকাতা থেকে কাছে ছিল (ঢাকা(। এজন্য আসলে তিনি গিয়েছেন। তিনি তো আসলে অন্য কোনো প্রয়োজনে যাননি। ক্রিকেট সম্পর্কিত কারণেই গিয়েছিলেন। কোচ আর ম্যানেজমেন্ট যখন বলেছে, তাহলে ‘ওকে ফাইন।’ তখন তিনি গেছেন। কোনো নিয়ম ভেঙে যাননি। অনুমতি নিয়ে গেছেন। গিয়ে কিন্তু চার ঘণ্টা ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন। পরের দিনেই আবার অনুশীলন করে চলে এসেছেন।”
“এটা আসলে আমরা ক্রিকেটাররা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছি যে বিশ্রামের দিনে গিয়ে তিনি অনুশীলন করেছেন। তার ব্যাটিংটা আমাদের দলের জন্য এতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেও মরিয়া যে কীভাবে ভালো করা যায়। তার আসার পর আমাদের দলের সবাই একটা ডিনার করেছি। একটা ভালো সময় কাটিয়েছি। আশা করছি সামনে নতুন কিছু শুরু করব ভালো কিছু করে।”
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা