অনলাইন ডেস্ক :
সাউথ আফ্রিকা সফরে যেতে অনাগ্রহের কথা জানিয়ে আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। স্পিন-অলরাউন্ডারের এমন মন্তব্যে চটেছেন নাজমুল হাসান পাপন। বিসিবি সভাপতি বলেছেন, দল ঘোষণা হওয়ার পর সাউথ আফ্রিকা না যাওয়ার ভাবনা টিম ম্যানেজমেন্টকে বিপদে ফেলেছে। এবার সাকিবকে কড়া বার্তা দিলেন খালেদ মাহমুদ সুজন। মঙ্গলবার (৮ মার্চ) মিরপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিসিবির এ পরিচালক সাফ জানালেন, সবকিছুর সমাপ্তি এখনই টানতে হবে। ‘যথেষ্ট হয়েছে। তুমি বিসিবিকে পরিচালিত করতে পারো না। বলতে পারো না আমি খেলব কিংবা খেলব না। যদি খেলতে না চাও, খেলবে না। ব্রেক নিলে ফুল ব্রেক। কেউ তাকে থামাবে না, তাই না? এটা হয়তো আমাদের (বোর্ড) সভাপতি বলতে চান। হয়তোবা উনি একটু আস্তে বলেছেন, আমি একটু জোরে বললাম।’ সাকিবের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তার নিজের নাকি বিসিবির? খালেদ মাহমুদের উত্তর, ‘অবশ্যই বিসিবির। বিসিবির প্রোডাক্ট ওরা। বিসিবি ওদের প্রোডাক্ট না। বিসিবি ব্যক্তিগতভাবে কারোর জন্য না। বিসিবির জন্যই ওরা। অবশ্যই মেইন স্টেক হোল্ডার ওরা বাংলাদেশের ক্রিকেটের। এই স্টেক হোল্ডারদের পেছনে বিসিবির অনেক ইনভেস্টমেন্ট ছিল। অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭তে তাদের তৈরি করা। তাদের পেছনে বিসিবি অনেক খরচ করেছে।’ সাকিব ৬ মাস টেস্ট খেলতে না চাওয়ার পরও সাউথ আফ্রিকায় কেন তাকে টেস্ট খেলতে অনুরোধ করা হয়েছিল? জানতে চাইলে তিনি বললেন, ‘অনুরোধ করা হয়নি। কমিউনিকেশনের একটা গ্যাপ। সাকিব যেহেতু আইপিএল খেলছে না, সেখানে সাকিবের কাজটা কি? সাকিব ওই সময়ে আইপিএলেই খেলতে যেত। আমরা বোর্ড থেকে বলেছি যেহেতু আইপিএল খেলছ না, তুমি টেস্ট খেলতে চাও নাকি চাও না। সে বলেছিল, হ্যাঁ।’ ‘বোর্ড কেন অনুরোধ করতে যাবে? বোর্ড তো পরিচালিত করবে। কারণ তারা চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার। সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রয়োজনটা বাংলাদেশের ক্রিকেটে অপরিসীম। তার মানে এটা না যে তাদের ছাড়া বাংলাদেশে ক্রিকেট হবে না।’ ‘খেললে দেশের জন্য অবশ্যই ভালো। না খেললে আবার যে দেশের ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাবে সেটা তো আমরা চিন্তাই করতে পারি না। আশা করি তার জায়গায় যে ছেলেটা সুযোগ পাবে, তার জন্য বড় একটা কিছু হতে পারে। আমরা বিষয়টা অন্যভাবে দেখে চিন্তা করে দেখি।’ ‘যদি তামিম একটা সিরিজ না খেলে, যদি সাকিব একটা সিরিজ না খেলে, এটাতে সমস্যা না। সমস্যা হচ্ছে আমরা ওই সময় কাউকে না কাউকে খেলাচ্ছি। কিন্তু সেই সাকিব যখন আবার ফিরে আসবে তখন ওই ছেলেটার কি হবে আসলে। আমরা তো দল তৈরি করতে পারছি না। যদি সাকিব না খেলে না খেলুক টেস্ট ম্যাচে। আমি পরোয়া করি না। মনে করি বিসিবি এত কনসার্ন না যে যদি না খেলতে চায়, তাহলে জোর করতে পারবেন না।’ ‘আমরা চাই সাকিব খেলুক। যতদিন পর্যন্ত সাকিব ফিট থাকবে, সে খেলুক। কিন্তু ও যদি মনে করে উপভোগ করছে না, তাহলে আমার মনে হয় বলে যাওয়া উচিত যে আমি আর টেস্ট খেলব না অথবা আমি আর ওয়ানডে খেলবো না। অথবা আমি যেকোনো একটা ফরম্যাট খেলবো না। আমি দুইটা ফরম্যাট খেলবো না। এটা ঠিক আছে। কিন্তু আমরা বিসিবি থেকে যেটা করতে পারি, আমাদের তো সাকিবের জায়গায় একজনকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’ ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রেক্ষাপট এখন বদলে গেছে। যখন কেউ খারাপ খেলে, তখন তাকে নিয়ে কথা হয়। বাদ দেয়া হয়। আবার নতুন কাউকে আনা হয়। বাদ দেয়া হয়। এটা মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো হয়ে যাচ্ছে। কাউকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের সময় প্রয়োজন। আমাদেরও সময় দরকার, খেলোয়াড়দেরও সময় দরকার। সবার সময় দরকার। ধৈর্যটা আমরা দিতে পারছি না।’ তিনদিন পরই সাউথ আফ্রিকা সফরের জন্য টাইগাররা দেশ ছাড়বে। সাকিব ছাড়াই দল যাবে নাকি তার জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে? খালেদ মাহমুদ বললেন, ‘যেহেতু সাকিবকে ২ দিনের সময় দেয়া হয়েছে, তাই এটা না বলাই ভালো। সাকিব আসুক, কথা হোক। আশা করি সাকিব যাবে। সাকিব যাওয়া আর না যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে আসলে। এই মুহূর্তে আছে।’ ‘সাকিব থাকলে আমরা একজন ব্যাটসম্যান এক্সট্রা খেলাতে পারি। সেটা আমরা পারবো না হয়তো সাকিব না গেলে।’ ‘এখনই সময়, আমার মনে হয় বোর্ডের থেকে একটা ফুলস্টপ করা উচিত এখানে। বারবার এরকম হতে পারে না যে আমি চাইলাম না, আমি খেললাম না। আমি চাইলাম, আমি খেললাম।’ সাকিব থাকা নাকি তাকে ছাড়াই বাংলাদেশ দল, এটা ভাবার আদর্শ সময় এসে গেছে? ‘আমার মনে হয় ওকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালে হবে না। ওর তো কিছু সমস্যা থাকতে পারে। সে আমাদের ছেলে, আমাদের মূল খেলোয়াড়, আমাদের সন্তান। ওর কোনো কথা থাকতেই পারে। হয়তো ওই সময় বলতে পারেনি।’ যোগ করেন খালেদ মাহমুদ।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা