নিজস্ব প্রতিবেদক:
দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে আসা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে ১৪টি অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া (৩টি অভিযান, ১১টি দপ্তরে চিঠি পাঠানো) হয়েছে। দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা সদর ইউনিয়নের ধর্মদা এলাকার সিসি ঢালাই দিয়ে রাস্তার, গার্ডওয়াল ও কালভার্ট নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, সিলেটের একটি টিম গত বৃহস্পতিবার অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানকালে দুদক টিম সরজমিনে রাস্তা, গার্ডওয়াল ও কালভার্টের কাজ পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, রাস্তা ও গার্ডওয়ালের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে কাজের গুণগত মান নিম্নমানের বলে প্রাথমিকভাবে অভিযানকালে লক্ষ্য করা যায়। অপরদিকে, কালভার্টের কোনো অংশই নির্মাণ না করে সম্পূর্ণ টাকা বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দেবে দুদক টিম। এদিকে দিনাজপুর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স প্রদানে সরকার নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুদক সজেকা-দিনাজপুরের একটি টিম। অভিযান থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণ ও রেকর্ডপত্র বিস্তারিত পর্যালোচনা করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে দুদক টিম। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ ৩ নম্বর ইনাতগঞ্জের ইইউপি মেম্বারের বিরুদ্ধে রাস্তা ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক সজেকা-হবিগঞ্জ থেকে একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানকালে সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্র সংগ্রহের পর তা যাচাই করে কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠানো হবে। এছাড়া, বরিশাল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে দারিদ্র্য হ্রাসকরণ প্রকল্পের নামে আদায় করা অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবৈধভাবে মেঘনার পাড় ভরাট করে দখল, পিডিবি কর্মচারীর বিরুদ্ধে ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ তৈরি করে চাকরি নিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এনএটিপি প্রকল্পের আওতায় হাঁস-মুরগী পালনের গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মাণ করে বিক্রি ও ভাড়া দেওয়া, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য দান করা জমি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দখলপূর্বক দোকানঘর নির্মাণ, মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে প্রকল্প থেকে ঋণ গ্রহণকারীর পরিশোধিত অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্রিক ফিল্ড শ্রমিক সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাৎ, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বন বিভাগের জমি দখল, উপসহকারী সেটেলম্যান্ট অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ না পেয়ে এক ব্যক্তির জমি অন্য ব্যক্তির নামে রেকর্ড করে দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার-ঢাকা, আমার বাড়ি আমার খামারের প্রকল্প পরিচালক, নোয়াখালীর পুলিশ সুপার, বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক, ঢাকার জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে উল্লিখিত অভিযোগগুলোর বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
কমতে শুরু করেছে কুড়িগ্রামের নদীর পানি, ভাঙন আতঙ্কে মানুষ
দিনাজপুরে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত ২