April 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, September 21st, 2022, 9:36 pm

সারের বাফার গুদাম নির্মাণে ঢিমেতাল

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সার গুদাম নির্মাণ ঢিমেতালে চলছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাফার গুদাম নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল। আর ওই গুদাম নির্মাণ বিগত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের জুন মেয়াদে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩৪টি গুদামের মধ্যে ২৪টির জন্য জমি পাওয়া গেলেও ১০টি গুদামের জায়গাই নির্ধারণ করাই সম্ভব হয়নি। তারপরও প্রকল্পের ডিপিপিতে আনা হয়েছে সংশোধন। তাতে ৪৮৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, একনেক সভায় ৩৪টি সার গুদাম নির্মাণের প্রকল্পটি এক হাজার ৯৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকায় বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। তারপর শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পটির মেয়াদ ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ায়। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় থমকে আছে প্রকল্পের কাজ। এমন পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয় প্রকল্পের ব্যয় ২৪.৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫২ লাখ টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় ধরেছে। পাশাপাশি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পের প্রথম সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধনীর খুঁটিনাটি যাচাই করতে সম্প্রতি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশে সারের মজুদ সুনিশ্চিত করা, আপৎকালীন সময়ের জন্য সার মজুদকরণ এবং দ্রুত সময়ে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে সার পৌঁছানোর জন্য দেশে আরো ৩৪টি বাফার গোডাউন নির্মাণ করা।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় ২২২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যা প্রকল্প ব্যয়ের ১১.২১ শতাংশ। আর প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি মাত্র ১৮.১৫ শতাংশ। প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ার জটিলতা, প্রস্তাবিত জমির মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকা, রেলওয়ের জমি, খাসজমি ও নদী শ্রেণির জমি থাকা, রাস্তাসংক্রান্ত জটিলতা, পরিবেশ ছাড়পত্র প্রাপ্তিতে বিলম্ব, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জমি পরিবর্তনের প্রস্তাব, করোনাকালীন সাধারণ ছুটি ও লকডাউনের কারণে জমি অধিগ্রহণ তথা প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের আওতায় ৩৪টির মধ্যে ২৪টি গোডাউনের জন্য জমি পাওয়া গেছে। আর বাকি জমিগুলো অধিগ্রহণের কাজ চলমান।
সূত্র আরো জানায়, পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত পরিপত্র অনুসারে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ৩ মাস আগে সংশোধন প্রস্তাব পাঠাতে হয়। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পর সংশোধিত ডিপিপি প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। আর প্রকল্পের অগ্রগতি সংক্রান্ত উপস্থাপনা থেকে দেখ যায়, ৬টি গুদামের জমির অধিগ্রহণ ২০১৯ ও ২০২২ সালের মধ্যে এবং ১০টি জমির অধিগ্রহণ ২০১১ সালের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় দুই-ই বেড়েছে।
এদিকে প্রকল্পটি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্টদের মতে, এখনো ২০১৮ সাল থেকে ৪ বছরে জমির অধিগ্রহণ কার্যক্রমই সম্পন্ন হয়নি এবং বাকি ১০টি গুদামের জন্য জমি কবে পাওয়া যাবে তাও সুনির্দিষ্ট নয়। এমন অবস্থায় প্রকল্পটি শুধু প্রাপ্ত ২৪টি জায়গায় গুদাম নির্মাণের জন্য সুনির্দিষ্ট রেখে ডিপিপি পুনর্গঠন করলে প্রকল্পটির ব্যয় সংকোচন করা সম্ভব হবে। আর তাতে প্রকল্পের বাস্তবায়নও ত্বরান্বিত হবে।