September 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, August 24th, 2023, 3:03 pm

সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের বেহাল অবস্থা, জনদুর্ভোগ চরমে

সিলেট অফিস :
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর- গোয়াইনঘাট সড়কের বর্তমান অবস্থা একেবার বেহাল।অসংখ্য ছোট-বড় খানাখন্দে ভরা পুরো রাস্তা।দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সালুটিকর বাজার থেকে তোয়াকুল ইউনিয়নের পেকেরখাল ব্রিজ পর্যন্ত এই রাস্তাটি মানুষের চলাচলের একেবারে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় গেছে, গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং,গোয়াইনঘাট সদর, লেঙ্গুড়া, বিছনাকান্দি, রুস্তুমপুর, তোয়াকুল ও নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের প্রায় আড়াই লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র ও প্রধান রাস্তার নাম সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৬ সালে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কটি সংস্কার করা হয়। সালুটিকর-গোয়াইনঘাট পুরো ২৪ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার শেষ না হতেই ভারত থেকে নেমে আসা উপুর্যুপরি পাহাড়ি ঢলে সড়কটির সিংহভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্থ করে। এছাড়াও ২০২২ সালের স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় এ সড়কটি আবারো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ২০২২ সালের প্রলয়ণকারী বন্যা পরবর্তী সময়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ সড়কটি পরিদর্শন করেন।
পরবর্তীতে এ সড়কটির গুরকচি-গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। এ অংশটির সংস্কার কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। অপর দিকে সালুটিকর – গোয়াইনঘাট সড়কে ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নয়াবাজার সংলগ্ন হাটগাং সেতু, তোয়াকুল সিএনজি স্টোপেজ সংলগ্ন ২ কোটি টাকা ব্যায়ে তোয়াকুল সেতু এবং বঙ্গবীর পয়েন্ট সংলগ্ন আরো ২ কোটি টাকা ব্যায়ে বঙ্গবীর সেতুর বরাদ্দ দেন। যে সেতু গুলোর নির্মাণ কাজ কিছু দিন আগে সমাপ্ত হয়েছে। তবে নবনির্মিত ওই ৩ টি সেতুর এপ্রোসের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের সালুটিকর বাজার থেকে তোয়াকুল ইউনিয়নের পেকেরখাল ব্রিজ পর্যন্ত  ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার  মানুষসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এখানে প্রায়ই ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা।
বিগত কয়েক বছর ধরে সংস্কার করা হয়নি সড়কটি। ফলে সড়কটিতে অসংখ্য খানা-খন্দসহ প্রায় স্থানেই বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এমন ভাঙাচোরা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজারো মানুষকে। প্রায়ই পথিমধ্যে বিকল হয়ে যায় যানবাহন।
অটোরিকশা সিএনজি চালক পাবেল আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়টির বেহাল অবস্থা। অনেকটা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল আহমদ  বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার হাজার হাজার  শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সরকারি/বেসরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের চলাচলের পাশাপাশি বিছনাকান্দি ও  পান্তুমাই পর্যটনকেন্দ্রে দেশী-বিদেশী পর্যটকের আগমন ঘটে।  কিন্তু চলার মতো কোনো অবস্থা নেই সড়কটির।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল দশা। যানবাহনতো দূরে থাক, পায়ে হেঁটে চলাও দ্বায়। এ সড়ক দিয়ে যানবাহনের চালকরাও সহজে যেতে চান না।  এরমধ্যে বৃষ্টি হলেতো কথায় নেই। কাদা পানিতে পুরো সড়ক যেন চাষযোগ্য জমিতে পরিণত হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী (স্থানীয় সরকার বিভাগ) রফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের গুরকচি থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটারের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়াও সকটির তোয়াকুল অটোরিকশা সিএনজি স্টপেজ থেকে বঙ্গবীর পয়েন্ট পর্যন্ত সংস্কার কাজে টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। সালুটিকর হতে  তোয়াকুল পর্যন্ত   বাকি রাস্তা টেকসই ও মজবুত করার লক্ষ্যে সংশোধিত প্রাক্কলন নির্বাহী প্রকৌশলীর মাধ্যমে ঢাকায় এলজিইডির এডিবি প্রকল্প অফিসে পাঠানো হয়েছে। সংশোধিত প্রাক্কলন অনুমোদিত হলেই রাস্তার বাকি কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন।