অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকো বে’র দক্ষিণ দিকের অঞ্চলটিই সিলিকন ভ্যালি। একে বিশ্বের প্রযুক্তি কেন্দ্র বলার কারণ হচ্ছে বিশ্বের বাঘা বাঘা যত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার অধিকাংশই এখানে অবস্থিত। অ্যাপল, গুগল, ফেসবুক, ইনটেল, এইচপি, ওরাকল, সিসকোসহ বিশ্বের তাবড় তাবড় সব তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় এই সিলিকন ভ্যালিতে। টানা কয়েক বছর ধরে সিলিকন ভ্যালির বড় বড় প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে জায়গা করে নিচ্ছেন ভারতীয়রা। সম্প্রতি টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ৩৭ বছর বয়সী জ্যাক ডরসি অবসরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর প্রতিষ্ঠানটির নতুন প্রধান নির্বাহী পদে দায়িত্ব পান ভারতীয় বংশোদ্ভূত পরাগ আগারওয়াল। ২০১১ সালে টুইটারে যোগ দিয়েছিলেন পরাগ। এরপর কর্মদক্ষতার বলে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ পদে উন্নীত হলেন তিনি। টুইটারে কাজ শুরুর আগে পরাগ মাইক্রোসফট, ইয়াহু এবং এটিঅ্যান্ডটিতেও কাজ করেছেন। তিনি ভারতের আইআইটি থেকে স্নাতক ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। জায়ান্ট ক্লাব, যার সদস্য সুন্দর পিচাই, সত্য নাদেলা, অরবিন্দ কৃষ্ণসহ আরও অনেকে। সেখানে এখন কম বয়সী পরাগ আগারওয়ালও জায়গা করে নিলেন। জ্যাক ডরোসি নতুন সিইও পরাগ আগারওয়াল সম্পর্কে বলেন, অনেক জটিল সমস্যা সমাধানে পরাগ খুব ভালো ভূমিকা পালন করে আসছেন। তিনি মানুষ হিসেবে বেশ কৌতূহলী, অনুসন্ধিৎসু, যুক্তিবাদী, সৃজনশীল, আত্ম-সচেতন ও নম্র। ভারতের আরও এক শীর্ষ স্থান দখলকারী হলেন মাইক্রোসফটের সত্য নাদেলা। হায়দরাবাদে জন্ম নেওয়া এই ব্যক্তির মা ছিলেন সংস্কৃতের শিক্ষক এবং বাবা আইএএস কর্মকর্তা। তিনি পড়াশোনা করেন মনিপাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে। সেখান থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দেন তিনি। স্টিভ বামারের কাছ থেকে সিইও-র দায়িত্ব পান ২০১৪ সালে। পরে মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যানও করা হয় ৫৪ বছর বয়সী সত্য নাদেলাকে। আরেক ভারতীয় সুন্দর পিচাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন গুগলের। তার মা একজন স্টেনোগ্রাফার আর বাবা ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। সুন্দর পিচাইয়ের জন্ম মাদুরাই শহরে। খড়গপুর আইআইটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন পিচাই। এরপর ২০০৪ সালে যোগ দেন গুগলে। ২০১৫ সালে গুগলের সিইও হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এই ভারতীয়কে। তার আগে এই দায়িত্বে ছিলেন ল্যারি পেজ। পরে ২০১৯ সালে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটেরও সিইও হন ৪৯ বছর বয়সী সুন্দর পিচাই। প্রযুক্তি জায়ান্ট আইবিএম-এর অরবিন্দ কৃষ্ণ। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের পশ্চিম গোদাবরী জেলার এক তেলুগু পরিবারে জন্ম এই শীর্ষ কর্মকর্তার। তার বাবা একজন সেনা কর্মকর্তা এবং মা সমাজকর্মী। আইআইটির ছাত্র ছিলেন তিনিও। ১৯৯০ সালে আইবিএমে যোগ দেন অরবিন্দ। ২০২০ সালে তাকে আইবিএমের সিইও পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২১ সালে চেয়ারম্যানও হন অরবিন্দ। ৫৮ বছর বয়সী এই ভারতীয় এখন পুরোদস্তুর সামলাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটি। পালো অল্টো নেটওয়ার্কর্সের নিকেশ অরোরাও রয়েছেন ভারতীয়দের তালিকায়। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইটির ছাত্র নিকেশ কাজ করেছেন গুগলেও। ২০১৮ সালে তাকে পালো অল্টো নেটওয়ার্কসের সিইও পদে নিয়োগ করা হয়। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে জন্ম তার। গুগল ছাড়াও সফট ব্যাঙ্ক, আভিভা, এয়ারটেলে কাজ করেছেন তিনি। ইয়াহু জাপানের চেয়ারম্যানও ছিলেন নিকেশ ৫৩ বছর বয়সী নিকেশ। ভিমিও’র অঞ্জলি সুদ। ভারতীয় শীর্ষদের তালিকায় নাম আছে ৩৮ বছর এই বয়সী কন্যার। তবে অঞ্জলি ভারতীয় হলেও তার জন্ম মিশিগানে। পড়াশোনা করেন পেনসিলভিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১১ সালে এমবিএ সম্পন্ন করেন। ২০১৪ সালে ভিমিওতে যোগ দেন অঞ্জলি। সিইও নিযুক্ত হন তিন বছরের মধ্যে। অ্যাডোবির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন আরেক শীর্ষ কর্মকর্তা শান্তনু নারায়ণ। ৫৮ বছর বয়সী এই দক্ষিণ ভারতীয়র সময়েই ফুলে ফেঁপে ওঠে অ্যাডোবি। জন্ম, বেড়ে ওঠা হায়দরাবাদে আর পড়াশোনা করেন ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯৮ সালে অ্যাডোবিতে যোগ দেন শান্তনু। ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে ব্রুস সিজেনকে সরিয়ে তাকে সিইও হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। ভারতীয়দের মধ্যে আরও আছেন মাইক্রনের সঞ্জয় মেহরোত্র, আরিস্টার জয়শ্রী উল্লাল, ফ্লেক্সের রেবতী অদ্বৈতি।
আরও পড়ুন
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ: জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
শ্রীলঙ্কায় প্রতিযোগিতা চলাকালে রেসিং কারের ধাক্কায় নিহত ৭
জাপানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: নিখোঁজ সাত ক্রুর সন্ধানে অভিযান চলছে