এস এ শফি, সিলেট :
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আবাদযোগ্য জমি পতিত থাকার অপবাদ ঘুচাতেই সিলেটের জন্যে আড়াইশ কোটি টাকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
৩১ অক্টোবর সোমবার সকালে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘সিলেট বিভাগের অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনয়নে করণীয়’ সম্পর্কে মতিবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এই সভার আয়োজন করে। এতে অংশ নেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) দেবজিৎ সিংহ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো মোশাররফ হোসেন খান, বিশেষ প্রকল্পের উপপরিচালক রকিব উদ্দিন, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো মজিবর রহমান, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ এবং কয়েকজন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদক ও কৃষক প্রতিনিধিরা।
মতবিনিময় সভায় বিভাগীয় কমিশনার ড মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে আগামী বছর বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে জাতিসংঘ ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থা আশংকা করছে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের আবাদযোগ্য প্রতি ইঞ্চি জমি খাদ্য ও অন্যান্য ফসল উৎপাদনে ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি জানান, সিলেট বিভাগ ধানসহ কৃষি উৎপাদনে অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। অথচ এখানে আবাদযোগ্য পতিত জমি প্রায় সাড়ে ৭ লাখ হেক্টর। তাই এ বিশেষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর সফল বাস্তবায়ন কেবল এ অঞ্চলের অপবাদ ঘুচাবেনা-আসন্ন সংকট মোকাবেল সহ দেশের খাদ্য ভান্ডারকেও সমৃদ্ধ করবে।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, প্রবাসীদের ফেলে রাখা জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় আনতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে। সরাসরি বা অনলাইনে আলোচনা হবে তাদের সঙ্গে। তারা নিশ্চয়ই সাড়া দেবেন। জমি যাতে দখল না হয় সে ব্যাপারে তাদেরকে নিশ্চিত করতে ‘ভূমি ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব সরকারের নিকট দেওয়া হবে।
তিনি সিলেট অঞ্চলে কৃষি উৎপাদনের সম্ভাবনাময় নতুন নুতন খাত তুলে ধরার পাশাপাশি হাইব্রিড নয়-গবেষণালব্ধ দেশীয় ধান উৎপাদনে কৃষকদের উৎসাহিত করার তাগিদ দেন।
এর আগে সিলেট বিভাগের কৃষিচিত্র বিশেষ করে আবাদযোগ্য পতিত জমির পরিমাণ, পানির প্রাপ্যতা, ধানসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ কাজী মুজিবুর রহমান। পরে বিশেষ প্রকল্পের উপপরিচালক প্রকল্পটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পরে ছিল দলীয় উপস্থাপনা ও মুক্ত আলোচনা। এতে অংশ নেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো মজিবর রহমান, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মঞ্জুর শাফি এলিম, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, আলীম ইন্ডাস্ট্রির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী প্রমুখ।
এছাড়াও মতবিনিময় সভার সদ্য প্রয়াত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিলীপ কুমার অধিকারী সিলেটে কর্মরত থাকাকালীন এই বিশেষ প্রকল্প গ্রহণে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি