April 17, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 17th, 2021, 8:01 pm

সিলেটে ইউপি নির্বাচনে আ.লীগের বিদ্রোহীরাই এগিয়ে

ফাইল ছবি

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দলীয় নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ছেন। তারা চরম বিপাকেও পড়ছেন। আর এ সুযোগে বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা অন্য দলের প্রার্থীরা জয় পেয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনে কাক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে না পারায় আওয়ামী লীগের তৃণমূলে নানা ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় তৃণমূলকে উপেক্ষা করে রহস্যজনক ভাবে প্রার্থী বদল করায় দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরুদের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিদ্রোহীরাই নির্বাচনের মাঠে এগিয়ে রয়েছেন।
স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ-অনেক জায়গায় শক্তিশালী প্রার্থীকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র থেকে দুর্বল প্রার্থী মনোনীত করায় এমন ঘটনা ঘটছে। কোনো কোনো ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে যাচ্ছেন নৌকার প্রার্থী। তৃণমূলের একাধিক নেতা জানান, দলের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা ষড়যন্ত্রকারীরা নৌকার ভরাডুবি ঘটাতে বেছে বেছে দুর্বল প্রার্থী নির্বাচনি মাঠে নামিয়ে দিচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, সিলেটের সদর উপজেলার চারটি, কোম্পানীগঞ্জের পাঁচটি ও বালাগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে নির্বাচন হয়েছে। এ ১৫টি ইউনিয়নের মধ্যে আওয়ামী লীগের ছয়জন, বিএনপির স্বতন্ত্র পাঁচজন, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুজন, খেলাফত মজলিশের একজন ও জামায়াতের স্বতন্ত্র একজন জয়ী হয়েছেন।
সিলেট সদর উপজেলার মোগলগাঁও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিরণ মিয়া চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আগেও তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। কান্দিগাঁওয়ে চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিজাম উদ্দিনকে হারিয়ে জামায়াত নেতা আবদুল মনাফ, জালালাবাদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওবায়দুল্লাহ ইসহাক, হাটখোলায় চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আজির উদ্দিনকে হারিয়ে খেলাফত মজলিশ নেতা মাওলানা রফিকুজ্জামান জয়ী হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর পূর্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বাবুল মিয়াকে হারিয়ে বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন আলম (স্বতন্ত্র প্রার্থী) জয়ী হন। তেলিখালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ আলফু মিয়া জয়ী হয়েছেন। আগেও তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন। ইছাকলস ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কুটি মিয়া হারিয়ে বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান, উত্তর রণিখাইয়ে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের ফয়জুর রহমান ও দক্ষিণ রনিখাইয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইকবাল হোসেন ইমাদ বিজয়ী হয়েছেন।
বালাগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে বিএনপি নেতা আব্দুল মুনিম, পূর্ব গৌরীপুরে আওয়ামী লীগের হিমাংশু দাসকে হারিয়ে বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব, পশ্চিম গৌরীপুরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আবদুর রহমান মাখন, বোয়ালজোড়ে আওয়ামী লীগের আনহার মিয়া, দেওয়ানবাজারে বিএনপির নাজমুল আলম, পূর্ব পৈলনপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিহাব উদ্দিন জয় পেয়েছেন।
২৮ নভেম্বর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর দলীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের গোপন ভোটের আয়োজন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়। এরমধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোগলাবাজার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম সাইস্তা, জালালপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নেছারুল হক চৌধুরী বোস্তান, সিলামে শাহ ওলিদুর রহমান, লালাবাজারে আছাব উদ্দিন ও দাউদপুরে আতিকুল হক দলীয় তৃণমূল নেতাদের ভোটে নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে তাদের তালিকা পাঠায় জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, দাউদপুর ও সিলাম ইউনিয়ন ছাড়া বাকি তিনটি ইউনিয়নে তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম বাদ পড়েছে। তৃণমূলের ভোটে নির্বাচিত হয়ে যারা কেন্দ্রে উপেক্ষিত হয়েছেন তারা সবাই বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।