সিলেটে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ২৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা চুরির ঘটনায় হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পৃথক অভিযানে ১৮ লাখ ৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) প্রথমে একজনকে গ্রেপ্তারের পর তাকে নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিকভাবে ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন- সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার হাতিডহর গ্রামের হোসাইন আহমদের ছেলে আলতাব হোসেন লিমন (২২), মোগলাবাজার থানার নৈখাই পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আমিনুল হক (২৪) ও একই থানার নৈখাই মাঝপাড়া গ্রামের সিদ্দেক আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম মুন্না (২৫)। গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে লিমন ও আমিনুল সিকিউরেক্সের কর্মী।
তাদের মধ্যে লিমনকে সিলেট মহানগরের শিবগঞ্জ পয়েন্ট, আমিনুলকে ঢাকার মতিঝিল থানাধীন সাজেদা টাওয়ারস্থ সিকিউরেক্স কোম্পানির অফিস এবং নুরুলকে ভৈরব থানাধীন উজানভাটি হোটেলের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রবিবার (৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট মহানগর পুলিশের আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়িতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ।
তিনি জানান, গেল ৩ নভেম্বর মামলা দায়েরের পরই অভিযান চালিয়ে সিকিউরেক্স কোম্পানির এটিএম কর্মকর্তা আসামি আলবাব হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর তার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নুরুল ইসলাম মুন্না নামে আরেকজনকে ভৈরব থেকে আটক করে তার হেফাজত থেকে আরও ৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ।
পরে আসামি আমিনুলকে সিকিউরেক্স কোম্পানির ঢাকাস্থ অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে আরও ২১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি টাকার মধ্যে ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা আসামিরা বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রেখে দিয়েছেন এবং ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা তারা খরচ করে ফেলেছেন।
এসব টাকা উদ্ধারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
উপকমিশনার আজবাহার আলী শেখ জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অতীতে ইসলামী ব্যাংকের আরও ৮ লাখ টাকা চুরি করেছে বলে স্বীকার করেছে।
এসব কর্মকাণ্ডে সিকিউরিটি কোম্পানির গাফিলতি রয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২৮ অক্টোবর রাতে সিলেট নগরের সুবিদবাজার এলাকার ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনা ঘটে। পরে ৩০ অক্টোবর বুথে ‘ক্যাশ জ্যাম’– সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিলে বুথে গিয়ে ২৬ লাখ ৩২ হাজার টাকার হিসেবে গরমিল পায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় বুথে টাকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিকিউরেক্স প্রাইভেট লিমিটেডের দুই কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে মামলা করেন ব্যাংকটির সিলেট অঞ্চলের এটিএম বুথের ইনচার্জ সন্দীপন দাস।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ২৮ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে ওই বুথে মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক, চোখে কালো চশমা ও হাতে গ্লাভস পরা দুই ব্যক্তি সুবিদবাজার এলাকার এটিএম বুথে প্রবেশ করেন। বুথের আশপাশে নিরাপত্তাপ্রহরী উপস্থিত ছিলেন না।
ওই দুই ব্যক্তি বুথের ভেতরে প্রবেশ করেন। সে সময় একজন বুথের নিচের দিকের অংশ খোলেন এবং অন্যজন তার পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে নিরাপত্তাপ্রহরীকে বুথের সামনে উপস্থিত হতে দেখা যায়। ভেতরে থাকা দুই ব্যক্তির দিকে উঁকি দেন।
ভেতরে থাকা এক ব্যক্তিকে নিরাপত্তাপ্রহরীকে শাটার নামানোর জন্য ইশারা দিতে দেখা যায়। পরে নিরাপত্তাপ্রহরী শাটার নামিয়ে দেন। একপর্যায়ে ওই দুই ব্যক্তি বুথের লকার খুলে ভল্ট নামিয়ে সেখান থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের ব্যাগে ভরেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম