এস,এ শফি, সিলেট :
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে গণটিকা কার্যক্রমকে গতিশীল করতে সারাদেশে শুরু হয়েছে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন। এর আওতায় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকায় গতকাল ৭ আগস্ট থেকে শুরু হয় গণটিকাদান ক্যাম্পেইন। তবে রোববার (৮ আগস্ট) সিলেট নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে ভ্যাকসিন প্রদানের ক্যাম্পেইনে অনেকেই টিকা না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
ফেরার পথে তাদের অভিযোগ কেন্দ্রে নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকা প্রদান করায় সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও শেষ পর্যন্ত টিকা নিতে পারেননি তারা। এছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে ওয়ার্ডের ভোটার না হওয়া অনেককে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে অনেকের। রোববার নগরীর একাধিক ওয়ার্ডের বিভিন্ন টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব মিরাবাজারের বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরিচালিত হচ্ছে ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পে রবিবার (৮ আগষ্ট) ৩৫০ জনকে টিকা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়টির বইরে অনেক বেশি মানুষের ভিড় দেখা গেছে। ভিতরে ৩৫০ জন ঢোকানোর পর বাইরে সিরিয়ালে আরও যারা দাঁড়িয়েছিলেন তাদের বলা হয় আজকের মতো সিরিয়াল শেষ, এখন আর কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এ কথা শুনে বাহিরে লাইনে দাঁড়ানো অপেক্ষমাণ টিকা গ্রহীতা ফিরে যান।
ফিরে যাওয়াদের একজন আয়েশা বেগম। তিনি বলেন, সকাল থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সহকারে এই লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি, রোদের মধ্যে এতক্ষণ অপেক্ষা করলাম। আর এখন জানানো হচ্ছে আজকের মতো টিকা শেষ। আগামীকাল আবার আসেন। তাহলে আমাকে এত সময় অপেক্ষা করতে হলো কেন?
একই অবস্থা সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ডে মিরাবাজারে শাহজালাল জামিয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে। নগরীর যতরপুর এলাকার জিল্লুর রহমান জানান, তিনি বেলা ৯টার সময় কেন্দ্রে এসেছিলেন টিকা দিতে। এসে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু টিকার স্বল্পতার কারণে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও টিকা দিতে পারেননি।
এদিকে সিলেট নগরীর ২ নং ওয়ার্ডের রসময় মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়সহ একাধিক কেন্দ্রে ছিল গণটিকা গ্রহণেচ্ছু মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ভিড় সামাল দিতে স্বেচ্ছাসেবী এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের হিমশিম খেতে হয়েছে। এখানে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধিও উপেক্ষিত হয়েছে। আবার ভ্যাকসিন নিতে না পেরে গণটিকা গ্রহণেচ্ছু অনেকেই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।
প্রতিটি কেন্দ্রের টিকা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের মধ্যে অপেক্ষমাণ গ্রহীতা বলেন, আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে এখানে এসেছি। এসে নিবন্ধন করেছি। এরপর প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। সিরিয়াল এলে টিকা দিতে পারব। আমাদের মতো এভাবে ভেতরে শত শত নারী পুরুষ টিকা নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, সিটি করপোরেশন এলাকার কেন্দ্রেগুলোতে লোকজনের ভিড় বেশি। আমরা প্রতিটি কেন্দ্রে ২০০ জনের টিকা গ্রহণের ব্যবস্থা নিয়েছি। যেহেতু গ্রহীতার সংখ্যা বেশি, এ জন্য তাদের কথা চিন্তায় রেখে কেন্দ্রভেদে অতিরিক্ত আরও ১৫০ থেকে ২০০ জনকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। সে সুবাদে সিলেট নগরীর ৮১টি কেন্দ্রের প্রতিটি কেন্দ্রে আমরা আজ ৩৫০ থেকে ৪০০ জনকে টিকা দিচ্ছি।
এদিকে যারা টিকা দিতে পারেননি, তাদের হতাশার কিছু নেই। পর্যায়ক্রমে সবাই টিকা দিতে পারবেন বলেও যোগ করেন সিসিকের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি