এস এ শফি, সিলেট :
এসএমপির ট্রাফিক পুলিশের উপ কমিশনার ফয়সল মাহমুদের অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিকরা। এ কারণে সকাল থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোর থেকে লাঠি হাতে বিভিন্ন সড়কে ঘোরাফেরা করছেন শ্রমিকরা। কোনও গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়ি চলতে দিচ্ছেন না। এতে শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীসহ সাধারণ যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। কার্যত ধর্মঘটে ‘অচল’ হয়েগেছে পুরো সিলেট।
সরেজমিন দেখা যায়, মঙ্গলবার ভোর থেকে সিলেট নগরীর উপশহর, হুমায়ুন রশিদ চত্বর, চন্ডীপুল,তেলীবাজার, অতীরবাড়ী, তেমুখী, মদিনা মার্কেট, আম্বরখানা,টিলাগড়সহ সবকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পরিবহন শ্রমিকরা লাঠি সোটা হাতে নিয়ে পিকেটিং করতে দেখা যায়। এসময় তাদেরকে সশস্ত্র ভঙ্গিমায় চলাচলকারী যানবাহন আটকিয়ে ঘোরিয়ে দিতে দেখা যায়।
কলেজ শিক্ষক নুরুর রহমান বলেন, পরিবহন ধর্মঘটের কারনে কর্মস্হলে যেতে পারিনি। উল্টো ঘর থেকে বেরিয়ে নানা বিপত্তিতে পড়েছি।সড়ক পথে রোগীদের অসহনীয় দূর্ভোগ দেখেছি। বিষয়টির আশু সমাধান জরুরী।
সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন বলেন, আমাদের পাঁচ দফা দাবি না মানলে আমরা আরও কঠোর অবস্থানে যাব। আজ শুধু সিলেট জেলায় ধর্মঘট পালন হচ্ছে। দাবি মানা না হলে বুধবার বিভাগজুড়ে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। অনতিবিলম্বে আমাদের ৫ দফা দাবি মেনে না নিলে কঠোর এই কর্মসূচি পালন ছাড়া আরও কোনও পথ খোলা থাকবে না।
পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারনে নগরীর ভেতরেও বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। ছবিটি রিকাবীবাজার পয়েন্ট থেকে ক্যামেরাবন্ধি করেছেন আমাদের আলোকচিত্রী সোহেল মিয়া।
জানা গেছে, সিলেট বিভাগের সব পরিবহন শ্রমিক বেশ কিছুদিন ধরে পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনসহ মিছিল-সভা করে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হলো—সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপ-কমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলো দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া। এছাড়া অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন: অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের পথে হাঁটলেও শুধু আশ্বাসের মধ্যেই তাদের বার বার আটকে রাখে প্রশাসন। তাদের কোনও একটি দাবিও আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবার সিলেট জেলায় এবং পরদিন থেকে পুরো বিভাগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করবেন পরিবহন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি