জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল খয়রাত মোঃ বদরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন অফিসের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে ফলজ ও বনজ গাছ কেটে কার্যালয়ের ভবন নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে।
সিভিল সার্জন অফিস কর্তৃপক্ষ এমন গুরুতর অভিযোগ এনে গত ১০ মার্চ স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবরে চিঠি দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ মৌখিক ও লিখিত ভাবে সিলেটের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীকে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বলার পরও তিনি তা না মেনে ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছেন।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে ঘটনাস্থলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় সিভিল সার্জন অফিসের অভ্যন্তরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় অবস্থিত। তার ঠিক পেছনে বেশ কিছু ফলজ ও বনজ গাছ কেটে রাখা হয়েছে। তার মধ্যে অনেকগুলো কাঁঠাল যত্রতত্র ভাবে ফেলে রাখা। দেখে বোঝাই যাচ্ছে কাঁঠালগুলো কাটা গাছেরই। এছাড়াও এখানে কয়েকজন শ্রমিক মাটি কাটার কাজ করছেন।
সিলেটের সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, বারবার নিষেধ করার পরও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অসৎ উদ্দেশ্যে গাছগুলো কেটে এখানে ভবন নির্মাণ পক্রিয়া চালাচ্ছেন।
এবিষয়ে সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গৌছ আহমদ চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবুল খয়রাত মোঃ বদরুল ইসলাম একজন স্বাধীনতা বিরোধী লোক। তিনি এখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যোরাল নির্মাণের বিরোধীতা করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে থাকেন। স্বাধীনতা দিবস, শোক দিবস সহ কোন দিবসে তিনিসহ তার অফিসের কেউ বঙ্গবন্ধুর ম্যোরালে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন না।
তিনি বলেন, আমাদের বাঁধা নিষেধ সত্বেও তিনি এখানে ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছেন। যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের সহকারী পরিচালক ডা. নুরে আলম শামীম বলেন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর এমন কর্মকান্ড খুবই নিন্দনীয়। যদি তারা এর সঠিক সমাধান না করেন তাহলে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে হলেও বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের জায়গা রক্ষা করবো।
এবিষয়ে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. এসএম শাহরিয়ার বলেন, সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অফিসের এখনও অনেক ভবনের প্রয়োজন। আমরা এখানে করোনার টিকার রেজিষ্টেশন করলেও এখানে টিকা দিতে পারিনা। এখানে করোনার টিকার জন্যও আলাদা ভবনের প্রয়োজন। এছাড়াও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে আমাদের অন্ধকারে রেখে তারা আমাদের জায়গায় ভবন নির্মাণ করতে যাচ্ছেন যা কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগের সিনিয়র সচিবকে লিখিত ভাবে অবগত করেছি। এছাড়াও আমাদের সরকারি জায়গা রক্ষার্থে যা যা প্রয়োজন সেরকম ব্যবস্থা আমরা নেবো। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে সিভিল সার্জন অফিসের জায়গা জোরপূর্বক ভাবে দখল করার অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নিতে তার অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি এবং দুজন অফিস সহায়কের কাছে মোবাইল নাম্বার চাইলে তারা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি