April 25, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, May 22nd, 2022, 9:26 pm

সিলেটে বন্যায় মৎস্য সম্পদের ক্ষতি ২ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা

আকস্মিক বন্যায় সিলেটের ১১টি উপজেলায় মোট ১৮ হাজার ৭৪৯টি পুকুর, দিঘী, হ্যাচারি ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে দুই কোটি ১৩ লাখ মাছের পোনা এবং দুই হাজার ৩০৫ টন মাছ বন্যার পানিতে ভেসে মাছ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। মাছ ভেসে যাওয়া ছাড়াও হয়েছে অবকাঠামোগত ক্ষতি।
এর ফলে সিলেট জেলার ১৫ হাজার ১৬৩ জন খামার মালিকের দুই হাজার ১৭৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।

জকিগঞ্জ উপজেলার বীরশ্রী এলাকার মাছ চাষি আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পুকুরে মাছ চাষের জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। বন্যার শুরুতে পুকুরের চারদিকে ঘের দিয়ে মাছ বাঁচানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বন্যার তোড়ে সব মাছ ভেসে গেছে।’

বন্যায় জকিগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় ক্ষতি সবচেয়ে বেশি।

জকিগঞ্জে ছয় হাজার ৩৫০টি মাছের খামার তলিয়ে ৬২২ কোটি টাকা, গোয়াইনঘাটে দুই হাজার ৫৯২টি খামার তলিয়ে ১৪০ কোটি টাকা, কানাইঘাটে দুই হাজার ৩৫০টি খামার তলিয়ে ৬৪ কোটি টাকা, বিশ্বনাথে দুই হাজার ১৫০টি খামার তলিয়ে ১৫৫ কোটি টাকা, জৈন্তাপুরে দুই হাজার ১০০টি খামার তলিয়ে ৬৭৪ কোটি টাকা ও বিয়ানীবাজারে এক হাজার ৪০২টি খামার তলিয়ে ২১৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া, সিলেট সদর উপজেলায় ৫৩৫টি মাছের খামার, গোলাপগঞ্জে ৮৪৫টি, বালাগঞ্জে ৭০টি, কোম্পানীগঞ্জে ১৪৫টি ‍ও দক্ষিণ সুরমায় ২১০টি খামার তলিয়ে গেছে।

সিলেট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জেলায় মাছ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, যা অপূরণীয়। আর এ ক্ষতির পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।’

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সুরমা নদীর পানি সিলেটের সব পয়েন্টে এখনও বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্লাবিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, আজ রবিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পয়েন্টে ৮৪ সেন্টিমিটার এবং সিলেট নগরী পয়েন্টে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

একই সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি সিলেটের জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার ওপর এবং বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে, বন্যায় মাছের খামার, পুকুর ও দিঘী তলিয়ে মাছ চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অনেক এলাকায় বন্যার পানিতে মাছ ধরার উৎসব চলছে।

বন্যা কবলিত প্রায় প্রতিটি রাস্তা বা যেকোনো উঁচু সড়কের পাশে অসংখ্য শিশু-কিশোর ও যুবককে ছোট ছোট জাল নিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার এলাকায় মাছ ধরতে থাকা শিশু কবির আহমেদ জানায়, বন্যার পানিতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। সকাল থেকে জালে বেশ কিছু মাছ ধরা পড়েছে, যা দিয়ে কয়েক বেলার রান্না চালানো সম্ভব।

—ইউএনবি