এস,এ শফি, সিলেট :
২৬ জুলাই দুপুরেই সিলেট-৩ আসনে নির্বাচন স্থগিতের খবর পৌঁছে যায় পুরো নির্বাচনী এলাকা জুড়ে। আর স্থগিতের খবরে ভোটাররা খুশি হলেও বির্মষ হয়ে পড়েন প্রার্থীরা। এমনিতেই করোনাকালের এই নির্বাচন নিয়ে বিরক্ত ছিলেন ভোটাররাও। সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথেই প্রার্থীরা তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে নিজেদের পুরোপুরি প্রস্তুত করেছিলেন। ঠিক তখনি নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন স্থগিতের খবর তাদের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। বিশেষ করে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী হাবিব এবং তার সমর্থকরা হতাশ হয়ে পড়েন। নির্বাচনের সময় যত দীর্ঘ হচ্ছে, তাদের নির্বাচনী কাজই যেন দীর্ঘ হচ্ছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ এলাকার জুনেদ চৌধুরী, বদরুল আমীন জানিয়েছেন- নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ ছিল কম। তবে- স্বাস্থ্যবিধি ও করোনার সংক্রমণ নিয়ে ছিলেন চিন্তিত। এখন আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন তারা।
দক্ষিণ সুরমার কুচাই এলাকার শামীম ভোটে যাবেন কিনা- চিন্তা ভাবনায় ছিলেন। করোনার সংক্রমণ বেশি। ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত মানুষ। না চাইলেও প্রার্থী ও সমর্থকরা দরোজায় এসে হাজির। পোস্টার দিয়ে দলবেঁধে ছবি তুলেছেন। মানা হচ্ছিলো না কোনো সামাজিক দূরত্বও। মুখে মাস্কও ছিল না অনেকেরই।
এই প্রচারণায় নিজেদের কোনোমতে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনি। ভোটের দিন কেন্দ্রে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলেন। এখন নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কারণে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন।
জাপা প্রার্থী আতিকুর রহমান আতিক জানান- ‘প্রচার-প্রচারণায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে করা হচ্ছিল। আদালত যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন সেটির প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা। তবে- বার বার নির্বাচন পেছানোর কারণে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। এতে করে ভোটের পরিবেশও বিঘিœত হচ্ছে।’ তিনি রিটকারী আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বলেন- ‘আমরা প্রার্থীরা এক মাসের অধিক সময় ধরে মাঠে আছি। প্রচারণা চালাচ্ছি। আরো আগে যদি তারা আইনি উদ্যোগ নিতেন তাহলে সবার জন্য ভালো হতো। এরপরও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিলেন। এখন নির্বাচন কমিশনই বিষয়টি দেখবে বলে জানান তিনি।’
নির্বাচন স্থগিতের খবর শুনে শেষদিনের প্রচারণা সংক্ষিপ্ত করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরীও। তিনি আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন।
সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি গতকাল থেকে শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে গতকাল ইভিএম’র ডামি ভোটের মহড়া দেওয়া হয়। এতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার সহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আসনের তিনটি উপজেলায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ২৬ জুলাই বিকাল পর্যন্ত তারা নিজ নিজ কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
নির্বাচনী কর্মকর্তা জানিয়েছেন- ইভিএম-এ ভোট প্রদানের বিষয়ে ভোটারদের অবগত ডামি প্র্যাকটিস করা হয়েছে। এতে ভোটার সহ ভোটগ্রহণে নিয়োজিত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা না আসার কারণে তারা তাদের কাজ চলমান রেখেছেন বলে জানান।
এদিকে- রিটার্নিং কর্মকর্তার সূত্রে জানা গেছে- গতকাল বিকেল পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা নির্বাচন কমিশন কিংবা আদালতের সূত্র থেকে তাদের কাছে পৌঁছেনি। নির্দেশনা পাওয়ার প্রেক্ষিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা কার্যক্রম থেকে সরে আসবেন বলে জানিয়েছেন এক সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ২
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি