প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকতকে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। সোমবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শ্যামলী নবী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনরূপ কার্যক্রম গ্রহণের কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত এলাকার ১ নম্বর খাস খতিয়ানের ২৫৯ দশমিক ১০ একর এলাকায় পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে বা ভবিষ্যতে আরও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প ও সেবা খাতের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে এবং পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকায় অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মাণ বা অন্য কোনরূপ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণকল্পে বাংলাদেশ পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইনের ক্ষমতাবলে এই এলাকা পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হলো।
গত ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.আহমদ কায়কাউস চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার গুলিয়াখালী সৈকত পরিদর্শন করেন।
এদিকে, গুলিয়াখালী সুমদ্র সৈকতকে পর্যটনের আওতায় এনে মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হচ্ছে। রাস্তার উন্নয়ন, হোটেল-মোটেল, রির্সোট গড়ে তুলতে ভূমি জরিপের মাধ্যমে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। প্রস্তাব অনুমোদিত হলে বিচ উন্নয়নের মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ীত হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন,পর্যটনের অপার সম্ভবনা হয়ে উঠেছে সীতাকুণ্ড। খুব কাছ থেকে পাহাড়ি ঝর্ণা ও সমুদ্রের উত্তর তরঙ্গ উপভোগ করতে পারেন পর্যটকরা। সৌন্দর্য উপভোগে পর্যটকের ভিড় জমতে থাকায় গুলিয়াখালী সমূদ্র সৈকতকে পর্যটনে রুপ দিতে নেয়া হয়েছে মহাপরিকল্পনা। ধীরে ধীরে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করে গুলিয়াখালী বিচকে বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র রুপ দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয়দের কাছে সৈকতটি মুরাদপুর সি-বিচ নামে পরিচিত। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বাজার থেকে দূরত্ব মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। আধুনিকতার কোনো ছোঁয়া না লাগলেও এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলবেঁধে অনেক দর্শনার্থী ছুটে আসছেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের এই সৈকতে।
সংশ্নিষ্টদের মতে, সরকারি উদ্যোগ ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গুলিয়াখালী বিচ হতে পারে দেশের পর্যটনের অন্যতম একটি স্থান। আর তা সম্ভব হলে দেশের পর্যটন খাতে অনেক বড় অবদান রাখতে পারবে এটি।
জানা গেছে, বাহারী রঙের বৃক্ষ আর আর সবুজের সমারোহ পরিবেশকে আরও সৌন্দর্য মণ্ডিত করেছে। একদিকে দিগন্তজোড়া জলরাশি আর অন্যদিকে কেওড়া বন। আছে সবুজগালিচার বিস্তৃত ঘাস। তার মাঝে বয়ে চলেছে আঁকাবাঁকা নালা। জোয়ারের পানিতে সবুজ ঘাসের ফাঁকে নালাগুলো কানায় কানায় ভরে ওঠে। জোয়ার চলে গেলে ফিরে যায় আগের অবস্থায়। মৃদু বাতাস আর গাছের পাতার ফিসফিসানিতে তপ্ত দুপুর, স্নিগ্ধ বিকেল কিংবা বিষণ্ণ সন্ধ্যাটি যে কাউকে রাঙিয়ে তুলবে বর্ণিল আলোকছটায়। খাল ধরে এগিয়ে গেলে মিলবে সমুদ্রের অপার সৌন্দর্য উপভোগের এক অভাবনীয় মুহূর্ত।
চোখের সামনে অনন্য সুন্দরের এক সৈকত! এই সৈকতের একপাশে রয়েছে সাগরের জলরাশি, অন্যপাশে কেওড়া বন। দেখা মিলবে সোয়াম্প ফরেস্ট আর ম্যানগ্রোভ বনের অন্যরকম মিলিত রূপ।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
তিস্তার পানি কমতে থাকলেও বেড়েছে ভাঙন আতঙ্ক
সিরাজগঞ্জে দ্রুত গতিতে বাড়ছে যমুনার পানি
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার: নাহিদ ইসলাম