March 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, August 2nd, 2022, 9:39 pm

সীমিত পণ্যে সীমাবদ্ধ দেশের রপ্তানি আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সীমিত পণ্যে সীমাবদ্ধ দেশের রপ্তানি আয়। বর্তমানে রপ্তানি তালিকায় ছোট-বড় মিলে পণ্য সংখ্যা ৭ শতাধিক। কিন্তু ওসব পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ খুবই কম। মূলত ৮ পণ্যেই আটকে আছে দেশের রপ্তানি খাত। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া সহায়তা এবং উদ্যোক্তাদের নানা উদ্যোগের পরও রপ্তানি আয় নির্দিষ্ট বলয়ে থমকে আছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ওই ৮টি পণ্য মোট রপ্তানি আয়ের ৯৪ শতাংশেরও বেশি থেকে এসেছে। আর রপ্তানি খাতের বাদবাকি সব পণ্য থেকে ৬ শতাংশেরও কম এসেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের রপ্তানিতে প্রধান ৮টি পণ্য হচ্ছে তৈরি পোশাকের ওভেন ও নিটওয়্যার, হোমটেক্সটাইল, হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ, কৃষিজাত পণ্য, পাট ও পাটজাতপণ্য, চামড়া ও চামড়াপণ্য ও প্রকৌশল পণ্য। ওই আট পণ্য থেকেই গত অর্থবছরে ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার মোট রপ্তানি আয়ের মধ্যে ৪ হাজার ৯১০ কোটি ডলার এসেছে। অর্থবছরটিতে মোট রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ২০৮ কোটি ডলার। আর বাকি প্রায় ৭০০ পণ্য রপ্তানি থেকে মাত্র ২৯৯ কোটি ডলারের মতো এসেছে। তার আগে গত ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট রপ্তানি আয়ে ওই আট পণ্যের অংশ ছিল ৯৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৯৫ শতাংশ। আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৯৫ দশমিক ১৬ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের দেশের ৮টি রপ্তানি পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাকের দাপট নিরঙ্কুশ। মোট রপ্তানির ৮১ দশমিক ৮২ শতাংশ পোশাক খাতের নিট এবং ওভেন থেকেই এসেছে। হোমটেক্সটাইলকেও পোশাকের সমজাতীয় ধরা হয়। রপ্তানিতে হোমটেক্সটাইলের অংশ ৩ দশমিক ১১ শতাংশ। ওই হিসাবে মোট রপ্তানিতে পোশাক খাতের অবদান প্রায় ৮৫ শতাংশ। আবার পোশাক খাত নিজেই ৫ পণ্যে আটকে আছে। ওই পণ্যগুলো হচ্ছে ট্রাউজার, টি-শার্ট, সোয়েটার, শার্ট এবং ব্লাউজ ও আন্ডারওয়্যার। ওই পণ্যগুলো থেকে মোট পোশাক রপ্তানির ৮২ শতাংশেরও বেশি আয় আসে। গত অর্থবছরে ওই ৫টি পণ্য রপ্তানি থেকে এসেছে ৩ হাজার ৫১১ কোটি ডলার। আর ওই খাতের বাকি পণ্যে রপ্তানির পরিমাণ ৭৫০ কোটি ডলার।
এদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, রপ্তানি নীতি ও কাঠামোগত সমস্যার কারণে পণ্য রপ্তানি বছর বছর আরো কেন্দ্রীভূত হচ্ছে। বন্ডেডওয়্যার হাউসের সুবিধা রপ্তানি খাতের সব পণ্যের জন্য উন্মুক্ত হলেও বাস্তবে তৈরি পোশাক ছাড়া অন্য কোনো খাত ওই সুবিধা নিতে পারে না। কারণ এতোসব কাগজপত্র চাওয়া হয় যে অন্য খাতের অনেক উদ্যোক্তাদের পক্ষে সেগুলো দেয়া সম্ভব হয় না। আর চামড়া শিল্পনগরী কমপ্লায়েন্ট না হওয়ার কারণে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার ব্র্যান্ড ও ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া পণ্য নিচ্ছে না। ফলে বাজার হিসেবে চীন একমাত্র ভরসার জায়গা হয়ে উঠেছে। কারণ চীন কমপ্লায়েন্সের ধার ধারে না। দর কম পেলেই হলো। কৃষি, হালকা প্রকৌশলসহ সব সম্ভাবনাময় খাতেই একই পরিস্থিতি বিরাজমান।
অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পণ্য উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ শাহজালাল জানান, ১৪টি সরকারি সংস্থা রপ্তানি-সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। সেক্ষত্রে কী ধরনের সীমাবদ্ধতা আছে তা চিহ্নিত করতে একটি জরিপ করা হচ্ছে। চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানে কৌশল নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে।