May 19, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, February 23rd, 2024, 7:29 pm

সুদানে চলমান সংঘাতে ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে: জাতিসংঘের প্রতিবেদন

সুদানে চলমান সংঘাতে শিশুসহ অসংখ্য লোক ধর্ষণ এবং বিভিন্নভাবে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে, যা যুদ্ধাপরাধের সমান হতে পারে বলে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে সুদানের রাজধানী খার্তুমে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের নেতৃত্বাধীন দেশটির সামরিক বাহিনী এবং জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বে র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস নামে পরিচিত আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার দেশটিতে বিশেষত শহরাঞ্চল এবং গোলযোগপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুর অঞ্চলেও এই লড়াই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ হাজার মানুষ নিহত এবং ৮০ লাখেরও বেশি লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

লড়াইয়ের শুরু থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ের ঘটনাগুলো ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি সাহায্যদাতা গোষ্ঠী ও অধিকার পর্যবেক্ষকরা অনেকাংশে ঢুকতে পারছেন না, এমন কিছু স্থানের নির্যাতনের নথিতুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে গাজা ও ইউক্রেনের মতো জায়গায় যুদ্ধের কারণে এ সংঘাতের প্রভাব অনেকটা ঢাকা পড়ে গেছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ১১৮ জন ধর্ষণসহ যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন – যার বেশিরভাগই বাড়িতে ও রাস্তায় আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে।

জাতিসংঘ বলছে, এক নারীকে একটি ভবনে আটকে রাখা হয় এবং ৩৫ দিন ধরে তাকে বারবার সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।

উভয় পক্ষের মধ্যেই শিশু সৈনিক নিয়োগ করা হয়েছে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবিদেনে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের দ্রুত, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভোলকার টার্ক বলেন, ‘এসব লঙ্ঘনের কিছু ঘটনা যুদ্ধাপরাধের শামিল।’

এই প্রতিবেদন ৩০০ জনেরও বেশি ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষাৎকারের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ইথিওপিয়া ও চাদে অনেক সুদানি পালিয়ে গেছে। সেখান থেকেও কিছুটা সংগ্রহ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর ফটোগ্রাফ, ভিডিও ও উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গত সপ্তাহে দেশটির উত্তর কোরদোফান রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বরাত দিয়ে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা ব্যক্তিরা প্রতিদ্বন্দ্বী আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যদের বিচ্ছিন্ন মাথা বহন করছে।

টার্ক বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে সুদান থেকে মৃত্যু, দুর্ভোগ ও হতাশার বিবরণ বেরিয়ে আসছিল। অর্থহীন সংঘাত, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে যার কোনো শেষ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বন্দুক বন্ধ করতে হবে এবং বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’

শুক্রবার জেনেভায় জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেনিয়ার নাইরোবি থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের আঞ্চলিক মুখপাত্র সাইফ মাগানগো বলেন, ‘(সুদানে) বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা এখন ৮০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা সবার জন্য উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।’

এর আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, সুদানের সংঘাতের কোনো সামরিক সমাধান নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, অব্যাহত লড়াই কোনো সমাধান বয়ে আনবে না, ‘তাই আমাদের অবশ্যই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি বন্ধ করতে হবে।’

—-ইউএনবি