জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত ও এক জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত আজমল হোসেন চৌধুরী কুলঞ্জ গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে। সোমবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা সদরের বিএডিসি মাঠে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আজমল হোসেন চৌধুরীর ভাগ্নে রহমত আলী বলেন, ‘আমি ও মামা একসাথে সম্মেলনে ছিলাম। আমার ও মামার উপর দুটি ইটের ঢিল এসে পড়লে মামা পিঠে আঘাত পান। তাৎক্ষণিক তার আঘাতস্থলে বরফ লাগিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে গেলে তার অবস্থার অবনতি হয়। এক পর্যায়ে মারা যান মামা’।
দলীয় সূত্র জানায়, সোমবার দুপুরে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে মঞ্চে উঠা নিয়ে সভায় সাবেক পৌর মেয়র মোশারফ মিয়া ও প্রদীপ রায়ের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষ এক অপরকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ও চেয়ার ছুড়ে। দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়ার সমর্থকদের মঞ্চে উঠতে না দেওয়ায় সভা শুরুর পর পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
আহতরা হলেন- দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান চৌধুরী, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সেন্টু, আওয়ামী লীগ নেতা এবাদুর রহমান কুবাদ, পৌর কাউন্সিলর এবিএম মাসুম প্রদীপ প্রমুখ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূরুল ইসলাম নাহিদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজিজুল সামাদ আজাদ ডন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, সহ-সভাপতি নোমন বখত পলিন, সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. জয়া সেনগুপ্ত, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার খানম-সহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতারা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তারা চেয়ারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আত্মরক্ষা করেন।
পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংঘর্ষের একঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের সম্মেলন শুরু হয়।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
এদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া দাবি করেছেন, ‘নিহত আজমল হোসেন চৌধুরী তার কর্মী। সংঘর্ষের সময় তার সামনে প্রতিপক্ষের ইটের আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পর আজমলের মৃত্যু হয়েছে’।
তবে অপরপক্ষ এটাকে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে দাবি করছে।
আরও পড়ুন
গণহত্যাকারীদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই: জামায়াতের আমীর
জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহে ৮৭৫ জন শহীদের মধ্যে ৪২২ জনই বিএনপির: ফখরুল
সাভারে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতা নাঈমকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ