November 24, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, July 13th, 2023, 7:44 pm

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকার ‘দৃঢ় অঙ্গীকার’ করেছে: আজরা জেয়া

বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া বলেছেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্য মন্ত্রীদের কাছ থেকে ‘দৃঢ় প্রতিশ্রুতি’ পেয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

আজরা জেয়া বলেন, ‘একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্ভর করে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্বাচনে বাংলাদেশিদের ব্যাপক অংশগ্রহণ এবং তাদের দেশের শাসনব্যবস্থার উপর।’

আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, যেখানে সব নাগরিক উন্নতি করতে পারে- এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় বাংলাদেশের।

আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈশ্বিক মানবাধিকার নীতির অংশ হিসেবে ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনকে সমর্থন করে। তারা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অংশীদার হিসেবে সেটি বাস্তবায়নে সহায়তা করতে তাদের ভূমিকা পালন করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘আমাদের গঠনমূলক, ফলপ্রসূ ও কার্যকর আলোচনা হয়েছে। আমি বলব গতকাল আমরা বড় বড় রাজনৈতিক সমাবেশ দেখেছি। সেগুলো সহিংসতামুক্ত ছিল।’

তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা, প্রতিশোধ বা ভয়ভীতি ছাড়াই সাংবাদিকদের রিপোর্ট করার ক্ষমতা, মানব পাচার প্রতিরোধে সহযোগিতা, মত প্রকাশ ও সংগঠনের স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান বৃদ্ধিতে সুশীল সমাজ যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।

সিনিয়র এই মার্কিন কূটনীতিক আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্বের গুরুত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ এবং উন্মুক্ত ইন্দো প্যাসিফিকে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমর্থনে এই অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করার জন্য তিনি এসেছেন। এটি আরও সহনশীল, সংযুক্ত, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ।

মিয়ানমারের উপর চাপ বজায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চলমান সংকটের সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে তারা। একই সঙ্গে স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরিস্থিতি তৈরি করতে বলা হয়েছে।আর সেটিই হবে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ, সুসংগঠিত ও টেকসই পদ্ধতি।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের পাশাপাশি এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

তারা মানবিক সহায়তা থেকে জেন্ডার সমতা ইস্যুতে সমন্বয়সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী এবং ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।

তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনসহ শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্মিত একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা বলেছেন।

ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস মনে করে, সংগঠনের স্বাধীনতা এবং শ্রম অধিকারসহ মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রসারে সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সঙ্গে তার বৈঠকের পর আন্ডার সেক্রেটারি জেয়া টুইটে লেখেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করি এবং বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা করি।’

আন্ডার সেক্রেটারি এবং প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশের উদার আতিথেয়তা এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থনের অব্যাহত প্রয়োজনীয়তার বিষয়েও আলোচনা করেন।

তিনি আরও লেখেন, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশের ওই অঞ্চলের জনগণকে সহায়তা করতে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি দিতে পেরে গর্বিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

আন্ডার সেক্রেটারি আরও লিখেছেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশে চলমান সংকট মোকাবিলায় ৭৪ মিলিয়নেরও বেশি সহায়তা দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এবং স্থানীয়দের সহায়তার জন্য ৬১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে। একই সঙ্গে অন্য দাতা ও সম্ভাব্য দাতাদের অব্যাহত সমর্থনের আহ্বান জানান তিনি।

দাতাদের সহায়তা হ্রাস এবং শিবিরের নিরাপত্তাহীনতার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জীবিকার সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য জোরালোভাবে উৎসাহিত করেছে।

পালিয়ে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য বিশ্বব্যাপী অংশীদারদের সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি।

—-ইউএনবি