অনলাইন ডেস্ক :
আগামীকাল শুক্রবার লিগ পর্বে নিজেদের নবম ও শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে মাঠে নামছে আফগানিস্তান। এজন্য এখন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পূর্ণ ২ পয়েন্টই লক্ষ্য আফগানিস্তানের। আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায়, এ ম্যাচকে শেষ চারের প্রস্তুতি হিসেবে দেখছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আহমেদাবাদে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে মুখোমুখি হবে দু’দল। ইতোমধ্যে বিশ^কাপ সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। বাকী একটি জায়গার জন্য লড়াই করছে নিউজিল্যান্ড-পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। এই তিন দলেরই আছে ৮ ম্যাচে ৮ করে পয়েন্ট। তিন দলই যদি লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ্যাচে জয় বা হার বরণ করে নেয়, তাহলে রান রেট বিবেচনায় আসবে। অষ্টম রাউন্ড শেষে রান রেটে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।
এরপর আছে যথাক্রমে- পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকার এবং পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের ফলাফলের জন্য অপেক্ষায় থাকার আগে, নিজেদের কাজটা ভালোভাবে সম্পন্ন করারই মূল লক্ষ্য আফগানিস্তানের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের স্বাদ নিয়ে সেমির দৌঁড়ে টিকে থাকতে চায় আফগানরা। কারণ প্রোটিয়াদের কাছে হেরে গেলে এবং নিউজিল্যান্ড বা পাকিস্তান যদি নিজেদের খেলায় জিতে যায়, তাহলে সেমির আশা শেষ হয়ে যাবে রশিদ-নবিদের। আবার তিন দল হারলেও, তখন রান রেটে বিবেচনায় বড় ধরণের সমস্যায় পড়বে আফগানিস্তান। কারণ নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের চেয়ে রান রেটে অনেকখানি পিছিয়ে আফগানিস্তান।
নিউজিল্যান্ডের আছে ০.৩৯৮, পাকিস্তানের আছে ০.০৩৬ ও আফগানদের আছে -০.৩৩৮ রান রেট। এজন্য সেমির দৌড়ে ভালোভাবে টিকে থাকতে জয়ের বিকল্প নেই আফগানিস্তানের। ইনফর্ম ব্যাটার রহমত শাহ বলেন, ‘আমাদের সামনে জয় ছাড়া অন্য কোন পথ খোলা নেই। জিতলেই ভালোভাবে সেমির দৌঁড়ে টিকে থাকবো আমরা। হেরে গেলে বিদায়। যদি নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান কোন ম্যাচ জিতে যায়। এ ছাড়া রান রেটেও আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। এ কারণে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছি না। দক্ষিণ আফ্রিকা শক্তিশালী দল, কিন্তু আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে এবং যেভাবেই হোক জিততে হবে।’ আগের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের সুবর্ন সুযোগ হাতছাড়া করে আফগানিস্তান।
গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের অসাধারণ ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংসের সুবাদে ৩ উইকেটে হার মানতে বাধ্য হয় আফগানরা। প্রথমে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ২৯১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেয়েছিলো আফগানিস্তান। বোলারদের নৈপুন্যে ৯১ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৭ উইকেটও তুলে নিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো আফগানরা। কিন্তু ছয় নম্বরে নামা ম্যাক্সওয়েল ১২৮ বলে ২১টি চার ও ১০টি ছক্কায় ২০১ রানের অবিশ^াস্য ইনিংস খেলে আফগানিস্তানের জয়ের স্বপ্ন চুরমার করে দেন। ঐ জয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার। ৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে থেকে আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। নির্ভার হয়ে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে।
সেমির আগে নিজেদের আরও একবার ঝালিয়ে নেয়ার পাশাপাশি জয়ের মধ্যে থেকেই শেষ চারের লড়াইয়ে নামার লক্ষ্য দক্ষিণ আফ্রিকার। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমার, ‘জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেই সেমিতে খেলতে চাই আমরা। আফগানিস্তাানের বিপক্ষে ম্যাচটি হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। মাঠে নিজেদের সেরা পারফরমেন্সেই প্রদর্শন করবো আমরা। সেমির আগে দল নিয়ে আরও একবার পরীক্ষা-নিরিক্ষা করার জন্য এটি ভালো সুযোগ।’ এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে মাত্র একবার মুখোমুখি হয়েছে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটিও আবার ২০১৯ সালের বিশ^কাপে। কার্ডিফে হওয়া ঐ ম্যাচটি বৃষ্টি আইনে ৯ উইকেটে জিতেছিলো প্রোটিয়ারা। ওয়ানডে ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে মাত্র দু’বার দেখা হয়েছে তাদের। বিশ^কাপে ঐ দুই ম্যাচেও জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
আফগানিস্তান দল : হাশমতুল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, রহমত শাহ, নজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, ইকরাম আলিখিল, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নুর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, আবদুল রেহমান ও নাভিন উল হক।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল : তেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), জেরার্ল্ড কোয়েৎজি, কুইন্টন ডি কক, রেজা হেনড্রিকস, মার্কো জানসেন, এনরিচ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, আইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, লুঙ্গি এনগিডি, আন্দিলে ফেলুকুওয়াও, কাগিসো রাবাদা, তাবরিজ শামসি, রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ও লিজার্ড উইলিয়ামস।
আরও পড়ুন
কানপুর টেস্টে মুমিনুলের সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৩ রান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার বিয়য়ে যা বললেন তামিম
অক্টোবরে বাংলাদেশে সফরে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা